স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী

দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ১১ ফেব্রুয়ারি: সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যাকাণ্ডের তিন বছর পরেও উপসংহার টানার মতো তথ্য নেই স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের কাছে।সাংবাদিক সাগর-রুনী হত্যা মামলার তদন্তে দীর্ঘসূত্রতার কথা স্বীকার করলেন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। বুধবার দুপুরে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের একটি প্রতিনিধি দল সাগর-রুনী হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে প্রতিমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি দিতে গেলে তিনি তদন্তে সরকারের দীর্ঘসূত্রতার বিষয়টি স্বীকার করে নেন।

ডিইউজে সভাপতি আলতাফ মাহমুদের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলের মধ্যে ছিলেন বিএফইউজের যুগ্ম-মহাসচিব সাইফুল ইসলাম তালুকদার, ডিইউজে সহ-সভাপতি আতিকুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক কুদ্দুস আফ্রাদ, সাংগঠনিক সম্পাদক সোহেল হায়দার চৌধুরী প্রমুখ। প্রতিমন্ত্রী বলেন, তদন্তে দীর্ঘসূত্রতা থাকলেও এখনো এ হত্যার তদন্ত চলছে। আশা করি হত্যাকারীরা গ্রেপ্তার হবে।

প্রসঙ্গত, ২০১২ সালের ১১ ফেব্র“য়ারি রাজধানীর পশ্চিম রাজাবারের ভাড়া বাসা থেকে উদ্ধার করা হয় মাছরাঙা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক সাগর সরওয়ার ও এটিএন বাংলার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক মেহেরুন রুনির মরদেহ। তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে হত্যায় জড়িতদের গ্রেপ্তার করা হবে বলে ঘোষণা দেন। এরপর পুলিশের মহাপরিদর্শক হাসান মাহমুদ খন্দকার বলেছিলেন, তদন্তে প্রণিধানযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। দায়িত্ব গ্রহণের পর সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর ২০১২ সালের ৯ অক্টোবর ডিএনএ পরীক্ষায় রহস্য উদ্ঘটন হবে বলে দাবি করেন। কিন্তু সব আশা-ভরসার ফলই শূন্য

এ সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমার কাছে উপসংহার টানার মতো তথ্য নেই। তদন্তের চূড়ান্ত তথ্য আমার কাছে আসেনি।তিন বছর পরেও কোনো হত্যাকারীদের হদিস পাওয়া যায়নি, জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, গোয়েন্দা পুলিশ ও র‌্যাবসহ বহু সংস্থা কাজ করছে, নির্ভুল তদন্তের জন্য। আমি আশাবাদী।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, এই আধুনিক যুগেও মালয়েশিয়ার বিমান খুঁজে পাওয়া যায়নি। অনেক সময় খুব তাড়াতাড়ি ঘটনার তথ্য পাওয়া যায়। আবার দেরিও হয়। আমরা আশা করছি, আমরা এ ঘটনার রহস্য উদঘাটন করতে পারবো। কোনো জায়গা থেকে বাধা আসছে কি-না জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাধা আসেনি। আর বাধা আসলেও বাধাগ্রস্থ হবে না।প্রতিমন্ত্রী আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, আপনারা স্মারকলিপি দিলেন। আমি জোরদার করে বিষয়টি দেখবো।

ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের দেওয়া স্মারকলিপিতে উদ্বেগ প্রকাশ বলা হয়, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর এলিট ফোর্স হয়েও র‌্যাব এ পর্যন্ত হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচন কিংবা খুনিদেরকে চিহ্নিত করতে পারেনি। এ অবস্থায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী তথা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতি দেশের সাংবাদিক সমাজ ও সাধারণ মানুষের আস্থা দিন দিন কমে যাচ্ছে। ২০১২ সালের ১১ ফেব্র“য়ারি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল মাছরাঙ্গার বার্তা সম্পাদক সাগর সরওয়ার ও এটিএন বাংলার সিনিয়র রিপোর্টার মেহেরুন রুনিকে ভাড়া বাসায় হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। গত তিন বছরেও এ হত্যকাণ্ডের রহস্য উন্মোচিত হয়নি। এখন পর্যন্ত জমা হয়নি তদন্ত প্রতিবেদনই।