11-02-15-Khaleda Zia_UK High Commitioner-2

দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ১১ ফেব্রুয়ারি: চলমান রাজনৈতিক সহিংসতা এবং এর কারণে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হওয়ার ঘটনা দুঃখজনক ও নিন্দনীয় বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার রবার্ট গিবসন। বুধবার বিকেলে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে তার গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সাক্ষাতে এ মন্তব্য করেন তিনি।

বিকেল ৫টার দিকে খালেদার কার্যালয়ে প্রবেশ করে সন্ধ্যা ৬টা ১০ মিনিটে বের হন গিবসন।বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাজ্যের হাইকমিশনার রবার্ট গিবসন দেশে চলমান সহিংসতা নিরসনের জন্য সব পক্ষকে তাগিদ দিয়েছেন। গিবসন বলেন, চলমান সহিংসতায় বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যহত হওয়া এবং সহিংসতা চলতে থাকা দুঃখজনক এবং নিন্দনীয়। আমি সব পক্ষকে আহ্বান জানাই দেশের মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ফিরিয়ে আনতে সবাই যেন আস্থা গড়ে তোলার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করেন, যার মধ্য দিয়ে দেশের বর্তমান অস্থিরতার নিরসন ঘটবে।

গিবসন আরো বলেন, আমি ক্রমাগতভাবে সব পক্ষকে আহ্বান জানিয়ে আসছি তারা যেন তাদের কর্মের পরিণতি সম্পর্কে পরিপূর্ণভাবে ভাবেন এবং দেশের জাতীয় স্বার্থ হানিকর কাজ থেকে বিরত থাকেন। দীর্ঘমেয়াদে আমি প্রত্যাশা করি সব পক্ষের আস্থা গড়ে তোলার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের নির্বাচন প্রক্রিয়ায় সহিংসতা ও বিঘ্ন সৃষ্টির অভ্যাসগত যে চরিত্রায়ণ ঘটেছে তার বিলুপ্তি ঘটাবে এবং সব বৈধ রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড শান্তিপূর্ণভাবে পালন করাকে অনুমোদন করবে।

খালেদা জিয়ার সঙ্গে বৈঠকের বিষয়ে গিবসন বলেন, বৈঠকে চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সম্মানীত চেয়ারপারসনের ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর প্রয়াণে তাকে সমাবেদনা জানিয়েছি।যুক্তরাজ্য বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ স্থিতিশীলতা এবং উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় সংকল্পবদ্ধ।

বিদেশি এই কূটনীতিক বুধবার বিকাল ৫টার দিকে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে যান। লাগাতার অবরোধ ডেকে এক মাসের বেশি সময় ধরে ওই কার্যালয়ে রয়েছেন খালেদা জিয়া।ওই কার্যালয়ের দোতলার চেম্বারে যুক্তরাজ্যের হাইকমিশনারের সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করছেন খালেদা। অন্য সময় এই ধরনের বৈঠকে কয়েকজন উপদেষ্টা থাকলেও এই বৈঠকে তাদের কাউকে সঙ্গে রাখেননি খালেদা জিয়া।

হাইকমিশনারের পতাকাবাহী ল্যান্ড ক্রুজার গাড়িটি বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ের ফটক দিয়ে ভেতরে ঢোকে। ৩ জানুয়ারি খালেদা এই কার্যালয়ে অবস্থান নেওয়ার পর থেকে প্রধান ফটকটি বন্ধ ছিল। ফটক ঘেঁষে রাখা কারটিও সরিয়ে নেওয়া হয় হাইকমিশনারের গাড়িটি আসার কয়েক মিনিট আগে।আরাফাত রহমান কোকোর মৃত্যুর পর খালেদা জিয়াকে সমবেদনা জানাতে প্রধানমন্ত্রী আসার পরও এই গাড়িটি সরানো হয়নি। ফটকে রবার্ট গিবসনকে অভ্যর্থনা জানান বিএনপির চেয়ারপারসনরের উপদেষ্টা সাবিহ উদ্দিন আহমেদ, প্রেসসচিব মারুফ কামাল খান ও বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস। গত ৩ জানুয়ারি থেকে গুলশানের কার্যালয় অবস্থান করা খালেদার সঙ্গে এটাই কোনো বিদেশি কূটনীতিকের প্রথম সাক্ষাৎ। ফলে তাদের এই বৈঠক নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক কৌতূহল রয়েছে।গত ২৪ জানুয়ারি কোকোর মৃত্যুর পরদিন ব্রিটিশ হাইকমিশনারসহ কয়েকজন কূটনীতিক গুলশানের কার্যালয়ে শোকবইকে স্বাক্ষর করতে এলেও তখন বিএনপি চেয়ারপারসনের সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়নি।

এর আগে বুধবার বিকেল ৪টা ৫৫ মিনিটে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করতে তার গুলশান কার্যালয়ে প্রবেশ করেন বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাজ্যের হাইকমিশনার রবার্ট গিবসন। প্রায় ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক শেষে সন্ধ্যা ৬টায় গিবসন খালেদা জিয়ার কার্যালয় ত্যাগ করেন।