দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ১০ ফেব্রুয়ারি: বর্তমান গভীর রাজনৈতিক সঙ্কট ও সহিংসতার প্রেক্ষাপটে প্রতিদিন দেশের নিরীহ জনসাধারণের প্রাণ হরণের যে-উৎসব বিরাজমান, তাতে দেশের ভবিষ্যত নিয়ে গভীর উৎকণ্ঠা প্রকাশ করে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব আল্লামা হাফেজ জুনাইদ বাবুনগরী ও সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী আজ এক যুক্তবিবৃতিতে বলেছেন,সরকার ও বিরোধী দলের মধ্যকার ক্ষমতাকেন্দ্রিক রাজনৈতিক লড়াইয়ে দেশের সাধারণ নাগরিক জিম্মি হয়ে পড়েছে। দেশের প্রতিটি জেলায় আজ মানুষ খুন হচ্ছে। সরকার জননিরাপত্তা দিতে চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছে। একটি জালিম গোষ্ঠী মানুষের জনমাল ও রক্ত নিয়ে হোলিখেলায় মেতে উঠেছে। রাজনৈতিক একগুঁয়েমি দেশকে গৃহযুদ্ধের দিকে ঠেলে দিচ্ছে।
হেফাজত নেতৃদ্বয় বলেন, আমরা মনে করি সা¤্রাজ্যবাদী ও আধিপত্যবাদী আগ্রাসী শক্তির ক্রীনড়ক হয়ে একশ্রেণির রাজনৈতিক গোষ্ঠী দেশের চলমান সহিংসতা ও রাজনৈতিক অচলাবস্থার নিরসন না করে বরং সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের উস্কানি দিয়ে এদেশকে ইরাক-আফগানিস্তান বানানোর চক্রান্ত করছে।হেফাজত নেতৃদ্বয় কিছু প্রশ্ন রেখে বলেন, রাজনীতি যদি গণমানুষের কল্যাণে হয়ে থাকে, তাহলে দেশজুড়ে এই গণবিধ্বংসী নৈরাজ্য ও আস্ফালন কেন? সাধারণ মানুষ বুলেটবিদ্ধ হয়ে রাস্তায় পড়ে থাকবে কেন? পেট্রলবোমায় দগ্ধ হয়ে হাসপাতালের বিছানায় নিরপরাধ মানুষ কাঁতরাবে কেন? আলেম-ওলামা, ইসলামপন্থী নেতাকর্মী ও তৌহিদি জনতা হয়রানির শিকার হবে কেন? দেশের জনগণ নিরাপত্তাহীন হয়ে পড়েছে। অর্থনীতি ধ্বংসের মুখে পড়েছে। আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়েছে। গুম-খুন ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ড সর্বকালের রেকর্ড গড়েছে। এখন নুনের চাইতে খুন সস্তা হয়ে গেছে। এই অবস্থায় দেশ চলতে পারেনা।
আমরা সরকারকে অনুরোধ করবো, ক্ষমতাসীন হিসেবে আপনাদের প্রধান দায়িত্ব হচ্ছে বিরোধী পক্ষের সাথে কার্যকর সংলাপে বসে সমস্যার সমাধান করা। ত্যাগের মানসিকতা নিয়ে দেশের কল্যাণে কাজ করুন। অন্যথায় দেশের এই দুরবস্থার জন্য জনগণ আপনাদের কাউকে ক্ষমা করবেনা। তাঁরা আরো বলেন, রাজনৈতিক নেতৃত্ব যদি জনগণের ওপর আস্থাশীল হয়, তাহলে এত ভয় কীসের?হেফাজত নেতৃদ্বয় বলেন, বর্তমান রাজনৈতিক নেতৃত্ব আল্লাহর ভয় ও আখেরাতে ভয়াবহ আজাবের কথা স্মরণ করে না; তাই ক্ষমতা পাওয়া মাত্রই রাষ্ট্র ও জনগণের সম্পদ লুণ্ঠন, খুন-সন্ত্রাস-দুর্নীতি-ঘুষ ও সুদের মতো ভয়াবহ অপরাধে জড়িয়ে পড়েছে। নৈতিক শিক্ষার অভাবে অন্যায় ও অপরাধমূলক কাজ করতে দ্বিধা করছেনা। এহেন নাজুক ও সঙ্কটকালীন মুহূর্তে দেশ ও জনসাধারণের শান্তি ও নিরাপত্তার স্বার্থে রাজনৈতিক অহমিকা ত্যাগ করে সরকার ও বিরোধী উভয় পক্ষ সংলাপে বসে চলমান রাজনৈতিক সঙ্কট থেকে দেশবাসীকে রেহাই দিন।