দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ১০ ফেব্রুয়ারি: শিক্ষার মানোন্নয়নসহ আইসিটির বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অগ্রগতি বিশ্বের যে কোনো দেশের তুলনায় উৎসাহব্যঞ্জক বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়।অনুষ্ঠানে জয় বলেন,তথ্যপ্রযুক্তি কল্যাণেই বাংলাদেশ আজ তলাহীন ঝুড়ি থেকে ডিজিটাল বাংলাদেশ মর্যাদা পাচ্ছে। ২০০৮ সালের দারিদ্রতা ৪০ শতাংশ থেকে ২৬ শতাংশে নেমে এসেছে,মোবাইল ব্যবহারকারী ২০ মিলিয়ন থেকে ১২০ মিলিয়নে দাঁড়িয়েছে এবং ইন্টারনেট ব্যবহারকারী দশমিক ০৪ থেকে বেড়ে ২৭ শতাংশে উন্নীত হয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুরে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে চলমান দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে বড় তথ্য-প্রযুক্তি সম্মেলন ‘ডিজিটাল ওয়ার্ল্ড ২০১৫’ এর দ্বিতীয় দিন মঙ্গলবার দুপুরে মিডিয়া বাজারে অনুষ্ঠিত ‘মিনিস্ট্রিয়াল কনফারেন্স’-এ মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় এসব কথা বলেন।বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আতিউর রহমানের সঞ্চালনায় বিভিন্ন দেশের মন্ত্রীপরিষদ সদস্যদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত প্যানেল আলোচনায় অংশ নেন আইটিইউ মহাসচিব হাউলিন ঝাও, ভুটানের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রী দিনা নাথ ধুনগোয়েল, মালদ্বীপের মন্ত্রী আহমেদ আদিম, নেপালের মন্ত্রী মিনেন্দ্র প্রসাদ।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবুল আব্দুল মুহিত এবং আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।জয় বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে ২০০৮ সালের নির্বাচনে দলীয় মেনিফেস্টোতে অঙ্গীকার করেছিল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। এরই ধারাবাহিকতায় সরকার আইসিটির জন্য আলাদা মন্ত্রণালয় গঠন করে।প্রজাতন্ত্রের প্রতিটি মানুষের আন্তরিক প্রচেষ্টায় বাংলাদেশ এখন ডিজিটাল বাংলাদেশে পরিণত হয়েছে বলেও জানান তিনি। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সেবা খাত থেকে জিডিপিতে ১ শতাংশ অবদান রাখার লক্ষ্যে ইপিজেডের আদলে ঢাকায় সফটওয়্যার ইক্সপোর্ট জোন (এসইজেড) তৈরি করতে যাচ্ছে সরকার। একইসঙ্গে মেধাস্বত্ব সংরক্ষণে নতুন করে উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, দেশে বর্তমানে ৫ হাজরের মতো সাইট ও ইকমার্স ওয়েবপেজ রয়েছে। যার মাধ্যমে গত বছর ৬০০ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়েছে। একই সঙ্গে মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস) এর মাধ্যমে আয় হয়েছে ১০ হাজার কোটি টাকা।আইটিইউ মহাসচিব হাউলিন ঝাও বলেন, যে দেশ যতদ্রুত ইনফরমেশন হাইওয়েতে যুক্ত হবে তাদের অর্থনীতি ততটাই চাঙ্গা হবে। বাংলাদেশ ও বিভিন্ন দেশের সরকার আইসিটিতে যেভাবে গুরুত্ব দিচ্ছে তাতে করে খুব শিগগিরই এসব দেশ অর্থনৈতিক ভাবে সুসংহত হবে। অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবুল আব্দুল মুহিত বলেন, আইসিটি খাতের উন্নয়নে সবচেয়ে বড় অবদান রাখছে দেশের তরুণ প্রজন্ম। তাই নতুন উদ্যোক্তাদের সরকার সার্বিক সহায়তা দিচ্ছে।
আইসিটি প্রতিমন্ত্রী পলক জানান, ডিজিটাল বাংলাদেশ রূপকল্প বাস্তবায়নে সরকার অবকাঠামোর পাশাপাশি মানব সম্পদ উন্নয়নে কাজ করছে। বিদ্যমান ২০০ জিবিপিএস সাবমেরিন ক্যাবলের সক্ষমতা বাগিয়ে আগামী বছরের মধ্যে ১৪ শ’ জিবিপিএস স্থাপনের কাজ চলছে।তিনি বলেন, আগামী ২০২১ সালের মধ্যে দেশজুড়ে সাত লাখ ইন্টারনেট ভিত্তিক পেশাজীবি গড়ে তোলার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। একই সময়ে দেশের প্রত্যেকটি মানুষের কাছে ইন্টারনেট সংযোগ পৌছে যাবে। এর মধ্যে ৫০ শতাংশই থাকে ব্রডব্যান্ডে সংযুক্ত। ফোর্বস, জেপি মর্গান, গোল্ডম্যার স্যাচস এবং সিটি গ্রুপ এর মতো আন্তর্জাতিক বিশ্লেষণ প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ২০২১ সাল নাগাদ জিডিপিতে ৩ শতাংশ অবদান রাখবে টেলিকম ও আইসিটি খাত।কনফারেন্সে সার্কভূক্ত দেশে নেপাল, ভুটান, মালদ্বীপ, কম্বোডিয়া, ভিয়েতনাম ও ফিলিপিনের প্রতিনিধি ছাড়াও দেশের আইসিটি খাত সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।