দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ৯ ফেব্রুয়ারি: বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে বাংলাদেশের ৩০০ মিলিয়ন ডলারের (প্রায় ২শ’ ৩৬ কোটি টাকা) একটি ঋণচুক্তি সই হয়েছে। সোমবার বিকেলে রাজধানীর আগারগাঁও এনইসি-২ সম্মেলন কক্ষে এ চুক্তি সই হয়। এতে সরকারের পক্ষে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ মেসবাহউদ্দিন ও বিশ্বব্যাংকের পক্ষে কান্ট্রি ডিরেক্টর জনাথন জাট সই করেন।ইনকাম সাপোর্ট ফর দ্য পুয়রেস্ট (আইএসপিপি) প্রকল্পের আওতায় এই টাকা দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক। এর মাধ্যমে হতদরিদ্র অন্তঃসত্ত্বা মায়েদের গর্ভকালীন মোট চারবার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো হবে। এর সঙ্গে প্রতিবারে ২শ’ টাকা করে মোট নগদ ৮শ’ টাকা দেওয়া হবে।
দেশের ৫ লাখ দরিদ্র অন্তঃসত্ত্বা নারী ও শূন্য থেকে ৫ বছর বয়সী শিশু যারা আর্থিকভাবে অসচ্ছল তাদের নগদ অর্থ দেবে সরকার। সেই লক্ষ্যে বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে ঋণচুক্তি অনুষ্ঠিত হলো। দেশের রংপুর ও ঢাকা বিভাগের ৭ জেলার ৪২টি উপজেলার ৪৪৩টি ইউনিয়নের ১৬ লাখ পরিবার থেকে প্রাথমিকভাবে ৫ লাখ দরিদ্র মা নির্বাচন করা হয়েছে।প্রকল্পের আওতায় এ সহায়তা দেওয়া হবে। এতে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ২ হাজার ৩শ’ ৭৭ কোটি ৮১ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি অর্থায়ন ৩৭ কোটি ৮১ লাখ। বাকি ২ হাজার ২শ’ ৪০ কোটি টাকা প্রকল্প সাহায্য হিসেবে বিশ্বব্যাংক ঋণ সহায়তা দেবে। প্রকল্পটির মেয়াদকাল ধরা হয়েছে এপ্রিল ২০১৫ থেকে জুন ২০২০ পর্যন্ত।
তবে মঙ্গলবার (০৩ ফেব্র“য়ারি) শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় প্রকল্পটি চূড়ান্ত অনুমোদন পায়।শূন্য থেকে ২৪ মাস বয়সী দরিদ্র শিশুদের প্রতিমাসে একবার শরীর বৃদ্ধির পরীক্ষা করে নগদ আরও ৫০০ টাকা দেওয়া হবে। এছাড়া ২৫ থেকে ৬০ মাস বয়সী শিশুদের প্রতিমাসে একবার শরীর পরীক্ষা করা হবে এবং নগদ এক হাজার টাকা দেওয়া হবে।পরিসংখ্যান ব্যুরোর দরিদ্রতা ম্যাপ বিবেচনা করে গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, নীলফামারী, জামালপুর, শেরপুর ও ময়মনসিংহে প্রকল্পটি প্রাথমিকভাবে বাস্তবায়িত হবে। কারণ এই জেলাগুলোর দারিদ্র্য হার ৩৫ শতাংশেরও বেশি। সেই সঙ্গে এখানে বেশি অপুষ্টির হারও। তবে পর্যায়ক্রমে প্রকল্পটি ৬৪ জেলাতেই বাস্তবায়িত হবে।
অপরদিকে অন্তঃসত্ত্বা মায়েরা প্রতিমাসে অনুষ্ঠিত শিশু পুষ্টি ও উন্নত শিক্ষা সংক্রান্ত কর্মশালায় অংশ নিলে প্রতিমাসে ৫০০ টাকা করে পাবেন। শিশু ও নারী মৃত্যুহার হ্রাস পাওয়া ও দরিদ্র মায়েদের দারিদ্র্য নিরসন করাই প্রকল্পের অন্যতম উদ্দেশ্য।প্রকল্পের আওতায় সুফলভোগীদের মনিটর করতে ইউনিয়ন পরিষদের দক্ষতা উন্নয়ন করা হবে। মা ও শিশুর স্বাস্থ্যসেবাসহ জনসচেতনতার জন্য কমিউনিটি ক্লিনিকের দক্ষতা বাড়ানো হবে। বাড়ানো হবে দেশের স্থানীয় পর্যায়ে সরকারি- বেসরকারি সংস্থার দক্ষতাও। যাতে করে প্রকল্পটি সঠিকভাবে বাস্তবায়িত হয়।এই ঋণের উপর বিশ্বব্যাংককে ০ দশমিক ৭৫ শতাংশ হারে সার্ভিস চার্জ দিতে হবে। ছয় বছরের গ্রেস প্রিয়ডসহ ৩৮ বছরে ঋণের টাকা পরিশোধ করতে হবে।