r410

দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ৮ ফেব্রুয়ারি: দানবের সঙ্গে মানবের সংলাপ নয় বলে জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু৷ এছাড়া সেইসঙ্গে নির্বাচন পদ্ধতি নিয়ে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাবনা দেওয়ার জন্য রাজনৈতিক দল ও সুশীল সমাজের প্রতি আহ্বান জানান তিনি৷শনিবার সচিবালয়ে অবরোধের নামে নাশকতা প্রতিরোধ বিষয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন৷

খালেদা জিয়া গুলশান কার্যালয়কে ঘাটি বানিয়ে নাশকতার উসকানি দিচ্ছেন এ কথা উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, তিনি কোনো সুনির্দিষ্ট রাজনৈতিক প্রস্তাব নিয়ে আসেনি৷ নাশকতা বন্ধ না করলে কোনো ধরনের সংলাপ সম্ভব নয় আর নাশকতা বন্ধে সরকার কঠোর পথে যাবে৷

তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেন, নাশকতা বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত কোনো রাজনৈতিক আলোচনা নয়৷ বেগম খালেদা জিয়ার এজেন্ড নির্বাচন নয়৷ তারা নির্বাচন বানচাল করার জন্য অস্বাভাবিক অবস্থা তৈরি, দেশকে সংবিধানের বাইরে ঠেলে দিচ্ছে৷ অস্বাভাবিক সরকার প্রতিষ্ঠা করার জন্যই বেগম জিয়ার একটা গোপন এজেন্ডা আছে৷ অর্থাত্‍ দানবের সঙ্গে মানবের কোনো সংলাপ নয়৷

মন্ত্রী বলেন, সারাদেশের মানুষের শান্তির জন্য সব ধরনের প্রদক্ষেপ নিচ্ছে সরকার৷ হরতাল-অবরোধ ব্যর্থ হয়েছে৷ রাজধানীতে সব ধরনের যানবাহন চলাচল করছে৷ শুধু দূরপাল্লার যানবাহন চালাতে মালিকপক্ষ ভয় পাচ্ছে৷সংলাপ সম্পর্কে মন্ত্রী বলেন, গণতন্ত্রে নেতা বা দল বা জোটের সংলাপ স্বাভাবিক৷ এমনকি যুদ্ধের মধ্যেও দুইপক্ষের মধ্যে সংলাপ হয়৷ সংলাপের একটি উদ্দেশ্য থাকে৷ উদ্দেশ্য হতে পারে যুদ্ধ-বিরতি, শান্তি বা ভবিষ্যতের জন্য আরও শান্তি৷

বেগম জিয়া কি আগুনে পুড়িয়ে মানুষ মারা অন্তর্ঘাত-নাশকতা, সন্ত্রাস বন্ধে বা সাময়িক বিরতি দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন? উনি কি শান্তির ঘোষণা দিয়েছেন? উনি কি শান্তির নিশ্চয়তা দিয়েছেন? উত্তরে সকলে নাই বলবেন৷ তাহলে উনার সঙ্গে কিসের সংলাপ? উনি কি দেশবাসীকে জিম্মি করে উনার স্বার্থ হাসিল করতে চান? সরকার উনাকে আর সুযোগ দেবে না৷ আইনী প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সকল নাশকতার বিচার করা হবে৷

বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী সম্পর্কে তথ্যমন্ত্রী বলেন, উনি একজন বীরমুক্তিযোদ্ধা হয়ে জামায়তের সঙ্গে সুর মেলাচ্ছেন৷ এছাড়া কাদের সিদ্দিকী সম্পর্কে আর কোনো কথা বলতে চান না মন্ত্রী৷

মন্ত্রী বলেন, নাশকতা, অন্তর্ঘাত-সন্ত্রাস, সহিংসতা আর ভুল রাজনীতির জন্য আজ যখন দেশের মানুষ বিএনপির বিপক্ষে দাঁড়িয়েছে, তখন কিছু কতিপয় বুদ্ধিজীবী তাদেরকে রক্ষা করার জন্য সংলাপ নামে বিএনপির হীনকর্মকাণ্ডকে আড়াল করছে৷ তিনি ওই সব বুদ্ধিজীবীদের হোম ওয়ার্ক করার জন্য আহ্বান জানান৷

হাসানুল হক ইনু বলেন, ২০০৮ সালের নির্বাচনের পর আমরা তাকে (খালেদা জিয়া) সাড়ে তিন মাস সময় দিয়েছি৷ তারপরও তার সঙ্গে সংলাপে যেতে পারিনি৷ যারা সংলাপের কথা বলছে, আমরা তাদের সংলাপের বসার আগে নাশকতা, সহিংসতা, পেট্টোলবোমা মেরে মানুষ হত্যা বন্ধ করার কথা বেগম জিয়াকে বলার জন্য অনুরোধ করছি৷

বেগম খালেদা জিয়াকে উদ্দেশ করে তথ্যমন্ত্রী আরো বলেন, উনি হরতাল-অবরোধে হতাহতের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন৷ এসব ঘটনায় জড়িত প্রকৃত অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিরও দাবি করেছেন৷ কিন্তু তার এ বক্তব্য ভুতের মুখে রাম রাম ছাড়া আর কিছুই না৷

বেগম জিয়া তার গুলশান কার্যালয়কে ঘাঁটি বানিয়ে এবং তার ছেলে তারেক রহমান লন্ডন থেকে ৫ জানুযায়ির আগেই ভিডিও বার্তায় প্রকাশ্যে নাশকতা-অন্তর্ঘাতের উস্কানি দিয়েছেন এবং দিয়েই চলেছেন বলে অভিযোগ করেন ইনু৷বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও বিএনপির ভাইস েেচয়ারম্যান মেজর হাফিজ (অব.) এর দেয়া দু’টি বিবৃতির সমালোচনা করে হাসানুল হক ইনু বলেন, জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার নামে দেশের বেশকিছু সংখ্যক বুদ্ধিজীবী রাজনীতিক গোলটেবিল বৈঠকে একটি ঘোষণা দিয়েছেন৷ দেশের পরিস্থিতি এবং এসব বক্তব্য-বিবৃতির ব্যাপারে সরকারের তরফ থেকে বক্তব্য তুলে ধরার জন্য সব গণমাধ্যম কর্মকর্তাদের প্রতি অনুরোধ জানাই৷