দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ৭ ফেব্রুয়ারি: জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মিজানুর রহমান বলেছেন, যারা আগুন দিয়ে মানুষ পোড়ায় তারা কখনো দেশের কল্যাণ চাইতে পারে না৷তিনি বলেন, প্রতিদিন যেভাবে সাধারণ মানুষকে পেট্রোল বোমা দিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করা হচ্ছে সেই সময় আমরা ঘরে বসে থাকতে পারি না৷ আমরা যারা মানবাধিকারের কথা বলি তারা এখন ঐক্যবদ্ধভাবে সকল অগণতান্ত্রিক লড়াইয়ের বিরম্নদ্ধে সামনে এসে আন্দোলন করা উচিত৷
তিনি শনিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সংঘাত নয় সমঝোতা, সহিংসতা নয় শানত্মি’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় এসব কথা বলেন৷ড. মিজানুর রহমান বলেন, সরকারকেই আইন-শৃঙ্খলা ঠিক রাখার পদক্ষেপ নিতে হবে৷ এভাবে দেশ চলতে পারে না৷ অগণতান্ত্রিক পন্থায় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা যায় না বলে মন্তব্য করেছেন মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান৷
এতে মিজানুর রহমান বলেন, গণতন্ত্র রক্ষার নামে তথাকথিত যে আন্দোলন চলছে তার অশারতা আমাদের চোখে পড়ছে৷ দেশে আজ রাষ্ট্রবিরোধী গোষ্ঠী ও চক্র দ্বারা মানবাধিকার লঙ্ঘন হচ্ছে৷এসএসসি পরীক্ষার প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, এ লেভেল, ও লেভেল পরীক্ষার সময় রাজনীতিবিদরা যদি তাদের নিজ নিজ কর্মসূচি থেকে বিরত থাকতে পারেন তাহলে এসএসসি পরীক্ষা চলাকালে কেন হরতাল প্রত্যাহার করা হয়নি?
সন্ত্রাসীদের সঙ্গে কোনো সংলাপ হতে পারে না বলেও মন্তব্য করেন মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান৷ তিনি বলেন, শক্তি প্রয়োগের সর্বচ্চ ও একমাত্র ক্ষমতা থাকে রাষ্টের ওপর৷ কিন্তু আজকে রাজনৈতিক আন্দোলনের নামে রাষ্ট্রের শক্তি প্রয়োগের ক্ষমতাকে চ্যালেঞ্জ করা হচ্ছে৷ রাষ্ট্রের কাঠামোকে চ্যালেঞ্জ করা রাষ্ট্রদ্রোহিতার শামিল ও ফোজদারি অপরাধ৷ চলমান এ সহিংস আন্দোলন সাধারণ মানুষের বিরুদ্ধে৷ কিন্তু রাষ্ট্র সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারছে না৷
জনগণের নিরাপত্ত নিশ্চিত করতে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কাঙি্ক্ষত ভূমিকা পালনে ব্যর্থ হচ্ছে৷ এক্ষেত্রে তাদের যোগ্যতা ও দক্ষতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান৷
ফেডারেশন অব বাংলাদেশ হিউম্যান রাইটস অরগাইনাইজেশন (এইচআরও) আয়োজিত গোলটেবিল আলোচনায় সংগঠনের আহ্বায়ক ড. মো. শাহজাহানের সভাপতিত্বে ও সঞ্চালনায় আরো বক্তৃতা করেন বিচারপতি সৈয়দ আবু কায়সার মো. দাবিরম্নশ্বান, সাবেক সেনা প্রধান লে. জেনারেল (অব.) নুরম্নদ্দিন খান, ঢাবি’র দর্শন বিভাগের অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান, সাবেক আইজিপি ড. এম. এনামূল হক, সাবেক সচিব জাফর আহমেদ চৌধুরী, সাবেক এমপি গোলাম মওলা রনি, বিএফইউজে’র মহাসচিব আব্দুল জলিল ভূইয়া ও এম এ আজিজ এবং ডেপুটি এটনর্ী জেনারেল ড. মো. শহীদুল ইসলাম৷
বক্তারা বলেন, দেশের উদ্ভুত রাজনৈতিক সহিংসতায় সর্বসত্মরের জনগণের মানবাধিকার লংঘিত হয়ে চলেছে৷ দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা পযর্ুদসত্ম৷ হরতাল-অবরোধ, খেটে মানুষের আয়-রোজগার ও জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে৷ দেশের অর্থনীতির গতি বাধাগ্রসত্ম হচ্ছে৷ নারী-শিশু নির্বশেষে প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ ভয়াবহ অগি্নদগ্ধ ও বিভিন্ন প্রকার নৃশংসতার শিকার হচ্ছে৷ এর মধ্যে ১৪ জন শিশু অগি্নদগ্ধ হয়ে মৃতু্যবরণ করেছে৷ তারা বলেন, সংঘাত নয ও সহিংসতার পথ পরিহার করে সংলাপের মাধ্যমে শানত্মিপূর্ণ আলোচনা করে দেশের এই সংকট থেকে দেশবাসীকে মুক্তি দিন৷