DSC06430

দৈনিকবার্তা- ঢাকা, ৬ ফেব্রুয়ারি: বিকল্পধারা বাংলাদেশের সভাপতি এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী বলেছেন, প্রধান দুই দলের মধ্যে সংলাপই বর্তমান সংকট থেকে উত্তরণের একমাত্র পথ। এর কোনো বিকল্প নেই। সংলাপ যদি না হয়, তাহলে কিছুদিন পরে আর কোনো পক্ষের পিছু হটার কোনো সুযোগ থাকবে না। এর পরিণাম হবে দেশে গৃহযুদ্ধ; যা দেশের কোনো মানুষ চায় না।

শুক্রবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে দেশপ্রেমিক নাগরিক পার্টি আয়োজিত চলমান রাজনৈতিক সংকট নিরসনে জাতীয় সংলাপ সময়ের দাবি শীর্ষক এক আলোচনা সভায় বদরুদ্দোজা চৌধুরী এসব কথা বলেন।পেট্রলবোমা নিক্ষেপসহ সম্প্রতি কয়েকটি ঘটনার উল্লেখ করে বদরুদ্দোজা চৌধুরী বলেন, অনেক ঘটনার সঙ্গে সরকার ও আওয়ামী লীগও জড়িত। কে বা কারা এ মানুষ মারার কাজে জড়িত তা খুঁজে বের করতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিতে প্রধান বিচারপতির প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

বদরুদ্দোজা চৌধুরী বলেন, সংলাপের আহ্বান জানানোর প্রথম দায়িত্ব সরকারের। খালেদা জিয়কেও প্রস্তুত থাকতে হবে এবং ঘোষণা দিতে হবে যে, তিনিও সংলাপ চান।১৪ ফেব্র“য়ারি শনিবার চলমান রাজনৈতিক সংকটের বিরুদ্ধে ফুটপাতে দাঁড়িয়ে প্রতিবাদ জানানোর জন্য নগরবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিকল্প ধারা বাংলাদেশের সভাপতি।

আমরা গৃহযুদ্ধকে ভয় পাই। দেশ এক চরম সংকটের মধ্যে অতিবাহিত হচ্ছে। এটা এমন এক পর্যায় চলে গেছে, তা দ্রুত বন্ধ না হলে দেশ গৃহযুদ্ধের দিকে চলে যাবে, বলেছেন তিনি। নির্দলীয় সরকারের অধীনে মধ্যবর্তী নির্বাচনের দাবিতে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলের টানা অবরোধ এবং ওই দাবি না মানতে সরকারের অনড় অবস্থানের মধ্যে শুক্রবার এক আলোচনা সভায় এই শঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।বিকল্প ধারার সভাপতি বদরুদ্দোজা চৌধুরী দুই প্রধান জোটের উদ্দেশে বলেন, প্রধানমন্ত্রীকে বলব, দ্রুত সংলাপে বসুন। সরকার হিসেবে আপনাকেই প্রথম সংলাপের ঘোষণা দিতে হবে। একই সঙ্গে বিএনপি চেয়ারপারসন ও ২০ দলীয় জোট নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার প্রতি আহ্বান থাকবে, আপনি সংলাপের জন্য প্রস্তুতি নিন।

প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে তিনি বলেন, এই সংকটের সমাধানের একমাত্র পথ সংলাপ, সংলাপ এবং সংলাপ। প্রধানমন্ত্রী আপনার বাবা জনাব শেখ মুজিবুর রহমানও সংলাপ করেছেন। দয়া করে জনগণের ভাষা বোঝার চেষ্টা করুন।পত্র-পত্রিকায় এসেছে, আওয়ামী লীগের কর্মীরা বোমাবাজির ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়ার পর নেতারা আদালতে প্রত্যায়নপত্র দিয়ে তাদের ছাড়িয়ে নিয়ে যাচ্ছে। ক্ষমতাসীন দলের হলে পুলিশ তাদের ছেড়ে দিচ্ছে। আর বিএনপি ও ২০ দলীয় জোটের কর্মী বোমাবাজদের পুলিশ ধরে নিয়ে মামলা দিচ্ছে। এসব সংবাদের কোনটি সত্য, তা নিয়ে জনগণও বিভ্রান্তি তে রয়েছে। আমি সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির প্রতি অনুরোধ জানাব, আপনি সুষ্ঠু তদন্তের নির্দেশ দিন।

মন্ত্রীদের বক্তব্যের সমালোচনা করে সাবেক এই রাষ্ট্রপতি বলেন, একজন সিনিয়র মন্ত্রী বিএনপি চেয়ারপারসন সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে স্টুপিড বলেছেন। এটা কোনো রাজনৈতিক ভাষা হতে পারে না।খালেদা জিয়াকে নিয়ে কটূ মন্তব্য করার সমালোচনা করে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর পরেই অর্থমন্ত্রী। আর তিনি যদি বিএনপি চেয়ারপারসনকে স্টুপি ড বলে গালি দেন, সেটি একটি বড় রাজনৈতিক শিষ্টাচার বহির্ভূত ঘটনা।তিনি প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে বলেন, স্বাধীনতা সংগ্রামের সময় চরম শত্র“র সঙ্গে আপনার বাবা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সংলাপ করেছেন। কাজেই এখন সংলাপে সমস্যা কোথায়। সংলাপ এখন সময়ের দাবি। তাই কেন সংলাপের উদ্যোগ নেবেন না। এসএসসি পরীক্ষার বিষয়ে তিনি বলেন, আজকের এ অচলাবস্থায় শুক্রবার ছুটির দিনেও পরীক্ষা নিতে হচ্ছে। এ অবস্থা জাতীয় দুর্যোগে পরিণত হয়েছে। এভাবে চলতে থাকলে ভয়াবহ অবস্থার সৃষ্টি হবে।

এসময় তিনি ১৪ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠেয় বিকল্পধারার নিরন্ন প্রতিবাদ কর্মসূচিতে অংশ নেওয়ার জন্য দেশবাসীকে আহ্বান জানান।দেশপ্রেমিক নাগরিক পার্টির চেয়ারম্যান আহসান উল্লাহ শামীমের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশ মুসলিম লীগের সভাপতি নুরুল হক মজুমদার।