Benjir

দৈনিকবার্তা-কুমিল্লা, ৪ ফেব্রুয়ারি: কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে যাত্রীবাহী বাসে পেট্রলবোমা মেরে সাতজন পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় হত্যাকারীদের বিরুদ্ধে আইনি প্রতিশোধ নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন র্যাবের মহাপরিচালক (ডিজি) বেনজীর আহমেদ৷বুধবার কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম পাইলট উচ্চবিদ্যালয় মাঠে নাশকতা প্রতিরোধ ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি শীর্ষক এক মতবিনিময় সভায় বেনজীর এ মন্তব্য করেন৷

প্রধান অতিথির বক্তব্যে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) ডিজি শান্তিপ্রিয় মানুষ হত্যা করে কী অর্জিত হয়েছে তা জানতে চান৷ একই সঙ্গে ওই হত্যাকাণ্ডকে লজ্জার বিষয় বলে অভিহিত করেন৷ চৌদ্দগ্রামে যাত্রীবাহী বাসে পেট্রোলবোমা মেরে ৭ জনকে পুড়ে মারার ঘটনায় এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়৷

শান্তিটিপ্রয় মানুষ হত্যা করে কী অর্জিত হয়েছে এমন প্রশ্ন রেখে র্যাব ডিজি কুমিল্লায় পেট্রোলবোমা মেরে ৭ জন পুড়ে মারার ঘটনাকে লজ্জার বিষয় বলে মন্তব্য করেন৷এতে অন্যান্যের মধ্যে পুলিশের ডিআইজি (চট্টগ্রাম রেঞ্জ) মো. শফিকুর রহমান, কুমিল্লা জেলা প্রশাসক মো. হাছানুজ্জামান কল্লোল, কুমিল্লার পুলিশ সুপার টুটুল চক্রবর্তী প্রমুখ বক্তব্য দেন৷

প্রসঙ্গত, গত সোমবার রাত সাড়ে ৩টার দিকে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে কঙ্বাজার থেকে ঢাকা অভীমুখী আইকন পরিবহনের বাসে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা৷ এ ঘটনায় সাতজন নিহত ও অন্তত ১০ জন দগ্ধ হয়েছেন৷ সাতজন নিহত হওয়ার ঘটনায় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে হুকুমের আসামি করে দুটি মামলা হয়েছে৷মঙ্গলবার বিকালে চৌদ্দগ্রাম থানায় মামলা দুটি করা হয়৷ উভয় মামলার বাদী চৌদ্দগ্রাম থানার উপপরিদর্শক (এসআই) নুরুজ্জামান হাওলাদার৷ চৌদ্দগ্রাম থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আবদুল্লাহ আল মাহফুজ বলেন, আগুনে পুড়িয়ে সাতজনকে হত্যা করার অভিযোগে একটি মামলা হয়েছ৷ অপর মামলাটি হয়েছে বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে৷

পেট্রলবোমায় পুড়ে অঙ্গার সাতজনউভয় মামলায় চট্টগ্রাম এলাকার জামায়াতের সাবেক সাংসদ ও কেন্দ্রীয় নেতা সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের, কেন্দ্রীয় যুবদলের সদস্য কামরুল হুদা, চৌদ্দগ্রাম উপজেলা জামায়াতের সভাপতি সাহাবউদ্দিন ও সাধারণ সম্পাদক শাহ মো. মিজানুর রহমানসহ ৫৬ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে৷ অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে ১৫-২০ জনকে৷দুটি মামলাতেই হুকুমের আসামি করা হয়েছে খালেদা জিয়াকে৷ হুকুমের আসামি হিসেবে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী, সালাউদ্দিন আহমেদ, স্থায়ী কমিটির সদস্য রফিকুল ইসলাম মিয়ার নামও রয়েছে৷উপজেলার জগমোহনপুর এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে সোমবার দিবাগত রাত সাড়ে তিনটার দিকে যাত্রীবাহী আইকন পরিবহনের বাসে পেট্রলবোমা ছোড়া হয়৷ বাসটি কঙ্বাজার থেকে ঢাকা যাচ্ছিল৷

পেট্রলবোমার আগুনে পুড়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান বাবা- মেয়ে, মা- ছেলেসহ সাতজন নিরীহ বাসযাত্রী৷ আহত হন আরও অন্তত ২৮ জন বাসযাত্রী৷পেট্রলবোমায় নিহত ব্যক্তিরা হলেন যশোর শহরের সেন্ট্রাল রোডের বাসিন্দা নুরুজ্জামান পপলু ও তাঁর মেয়ে যশোর পুলিশ লাইনস মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী মাইশা তাসনিম; কঙ্বাজারের চকরিয়ার আবু তাহের ও আবু ইউসুফ; নরসিংদীর পলাশ উপজেলার বালুচরপাড়া গ্রামের আসমা বেগম ও তাঁর ছেলে মো. শান্ত এবং ঢাকার কাপ্তানবাজার এলাকার মো.ওয়াসিম৷