দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ৩ ফেব্রুয়ারি: সারা দেশে বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০-দলীয় জোটের চলমান ৭২ ঘণ্টার হরতাল আগামী বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে বিরোধী জোট।মঙ্গলবার বিকেলে এক বিবৃতিতে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সালাহউদ্দিন আহমেদ জোটের পক্ষ থেকে হরতালের সময়সীমা বাড়ানোর এই ঘোষণা দেন।
বিবৃতিতে জানানো হয়, নেতা-কর্মীদের খুন-গুম, সংবাদমাধ্যম নিয়ন্ত্রণ, বিচারব্যবস্থার ওপর সরকারি নগ্ন হস্তক্ষেপ, খালেদা জিয়া এবং দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবসহ সব নেতা ও বিশিষ্ট নাগরিকদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়েরের প্রতিবাদে দেশব্যাপী অবরোধ কর্মসূচির পাশাপাশি চলমান ৭২ ঘণ্টার শান্তিপূর্ণ হরতাল ৫ফেব্র“য়ারি বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত বাড়ানো হলো।গত শুক্রবার এক বিবৃতিতে রোববার থেকে টানা ৭২ ঘণ্টার হরতাল ডেকেছিল বিএনপি-জোট।এই ৭২ ঘণ্টা শেষ হওয়ার আগেই বৃহস্পতিবার পর্যন্ত হরতাল বাড়ানোর ঘোষণা এল।
দেশব্যাপী ২০ দলীয় জোটের নেতাকর্মীদের নির্বিচারে খুন, গুম, হামলা-মামলা ও গণগ্রেপ্তারের প্রতিবাদে সোমবার থেকে চলা ৭২ ঘণ্টা হরতালের সময় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।মঙ্গলবার বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমেদ স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে হরতালের সময় বাড়ানোর কথা বলা হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, বিএনপি চেয়ারপারসন ও ২০ দলীয় জোট নেতা বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে আজ দেশের সব গণতন্ত্রকামী জনতা ঐক্যবদ্ধ। সংবিধান স্বীকৃত সব মৌলিক ও মানবাধিকার, ভোটের অধিকার, জনপ্রতিনিধিত্ত্বশীল সরকার প্রতিষ্ঠা ও ভোটারবিহীন জবরদখলকারী অবৈধ সরকারের পতনের লক্ষ্যে চলমান গণআন্দোলন বিজয়ের দ্বারপ্রান্তে উপনীত প্রায়।
এতে বলা হয়, প্রতিদিন আন্দোলনকারীদের রক্তে রঞ্জিত হচ্ছে কালো রাজপথ। গতকালও ( সোমবার) সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ার জামায়াত নেতা সাইদুল ইসলামকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে গুলি করে হত্যা করেছে সরকারের পেটোয়া পুলিশ বাহিনী। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম সম্পাদক আরিফুল ইসলাম মুকুলকে একইভাবে ডিবি পুলিশ হত্যা করে এবং রূপনগর থানা বেড়িবাঁধ এলাকায় তার লাশ ফেলে রেখে যায়। ঠাণ্ডা মাথার এসব হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা, প্রতিবাদ ও বিচার দাবি করছি আমরা। সমগ্র দেশকে মৃত্যুপুরীতে পরিণত করলেও এই অবৈধ সরকারের শেষ রক্ষা হবে না।
বিবৃতিতে বলা হয়, গণতন্ত্র মুক্তি আন্দোলনকে কলুষিত করার ষড়যন্ত্র অব্যাহত রেখেছে সরকার। প্রতিদিন সরকারি এজেন্টদের মাধ্যমে পেট্রোল বোমা হামলা চালিয়ে তার দায়-দায়িত্ব বিরোধী দলের ওপর চাপানোর অপচেষ্টা চালানো হচ্ছে। কিছুসংখ্যক সরকারি মদদপুষ্ট ও নিয়ন্ত্রিত ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়া এই অপপ্রচারে রীতিমত প্রতিযোগিতায় নেমেছে।
বিবৃতিতে জঘন্য কর্মকাণ্ডের জন্য দায়ী ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার ও সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে বিচার দাবি করা হয়। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি মেনে নিয়ে দ্রুত পদত্যাগ করে সুষ্ঠু ও অবাধ এবং অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের ঘোষণা না দেয়া পর্যন্ত চলমান শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক আন্দোলন অব্যাহত রাখার আহ্বানও জানানো হয়।