142248487844

দৈনিকবার্তা- ঢাকা, ৩০ জানুয়ারি: আগামী সোমবার থেকে শুরু হচ্ছে এসএসসি এবং সমমানের পরীক্ষা৷ আর এ পরীক্ষা চলাকালেই লাগাতার অবরোধ কমূসূচি চালিয়ে যাবে ২০দলীয় জোট৷কেন্দ্রীয় ভাবে অবরোধের পাশাপাশি হরতাল কর্মসূচিও যুক্ত হতে পারে৷ আর এমনিতেই জেলা ভিত্তিক হরতাল দেয়া হচ্ছে৷ ২০দল প্রাথমিকভাবে এ সিন্ধান্ত নেয়া হয়েছে৷ এছাড়া একটি গ্রহণ যোগ্য সরকারের অধীনে যথাশীঘ্র নতুন নির্বাচনের দাবীতে ফেব্রুয়ারি মাস থেকে লাগাতার অসহযোগ কর্মসূচি নিয়েও জোর আলোচনা চলছে৷ এর আগে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে গ্রেপ্তার কিংবা গুলশান কার্যালয় থেেেক চলে যেতে বাধ্য করা হলে কর্মসূচিতেও পরিবর্তন আসতে পারে৷ অবশ্য এসএসসি বা সমমানের পরীক্ষাথর্ীদের অবরোধ হরতালের আওতামূক্ত রাখা যায় কিনা তা নিয়ে অবশ্য দলের ভিতরে দুই মত রয়েছে৷ দলীয় সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে৷

শোককে শক্তিতে পরিণত করে খুব শিগগিরই দাবি আদায়ে চূড়ান্ত আন্দোলনে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট৷ গ্রহণযোগ্য সরকারের অধীনে নতুন নির্বাচন আয়োজনে ক্ষমতাসীনরা বাধ্য না হওয়া যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলা করে চলমান আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার নীতিগত সিদ্ধান্তও নিয়েছেন জোটের শীর্ষ নেতারা৷

২০ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতারা জানান, সব ধরনের দমন নিপীড়ন নির্যাতন ও সরকারের রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করেই চলমান আন্দোলন অব্যাহত থাকবে৷ ফেব্রুয়ারি মাসেই চূড়ান্ত আন্দোলনের ডাক দেয়ার কথাও ভাবা হচ্ছে৷ কিভাবে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জনে চূড়ান্ত আন্দোলন শুরু করা যায় তা নিয়েও নিজেদের মধ্যে আলাপ-আলোচনা চালাচ্ছেন জোট নেতারা৷ জোটের এক শীর্ষ নেতা জানিয়েছেন, চলমান আন্দোলনকে আরো বেগবান করে ফেব্রুয়ারি মাস থেকে আমাদের দ্বিতীয় পর্যায়ের কর্মসূচি শুরু হবে৷ দ্বিতীয় পর্যায়ের কর্মসূচিতে অবরোধের সঙ্গে লাগাতার হরতালও দেয়া হতে পারে৷ পাশাপাশি ফেব্রুয়ারি মাসের যে কোনো সময় অসহযোগ আন্দোলন দেয়ার বিষয়টিও বিবেচনায় রয়েছে জোটের৷ পুত্রশোকে কাতর বিএনপি চেয়ারপার্সন ও ২০ দলীয় জোট নেতা খালেদা জিয়ার মানসিক অবস্থার কিছুটা উন্নতি হলেই তার সঙ্গে আলোচনা করেই এসব বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে৷ নির্ধারণ করা হবে চূড়ান্ত আন্দোলনের কর্মকৌশল ও কর্মসূচি৷

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জে. (অব.) মাহাবুবুর রহমান বলেন, কোকোর মৃতু্যতে খালেদা জিয়া কিছুটা ভেঙে পড়েছেন৷ মা হিসেবে এটা হওয়া স্বাভাবিক৷ তবে গণতন্ত্র ও জনগণের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনার চলমান আন্দোলন থেকে তিনি পিছু হটবেন না৷ কয়েকদিনের মধ্যেই বিএনপি চেয়ারপার্সন শোক কাটিয়ে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে যথাযথ ভূমিকা পালন করবেন বলেও তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন৷যুগ্ম মহাসচিব রহুল কবীর রিজভী আহমেদ বলেন, আন্দোলন আরো কঠোরতর হবে৷ দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে৷ সামনের দিনগুলোতে আরো কঠোর কর্মসূচি দেয়ার ইঙ্গিতও দেন তিনি৷

গত শনিবার বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা রাষ্ট্রপতি প্রয়াত জিয়াউর রহমান ও খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকো হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে আকস্মিকভাবে মালয়েশিয়ায় ইন্তেকাল করেন৷ বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের সর্বস্তরের লাখো মানুষের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত জানাজা শেষে গত মঙ্গলবার তাকে বনানীর কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে৷ ছোট ছেলেকে হারিয়ে গত কয়েকদিন ধরে গুলশান কার্যালয়ে নির্বাক হয়ে রয়েছেন খালেদা জিয়া৷ জানা গেছে, সামনে যে পরিস্থিতিই আসুক আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার পক্ষে বিএনপি৷ এ কারণেই বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর আকস্মিক মৃতু্য ও দাফনকে সামনে রেখেও চলমান অবরোধ শিথিল করা হয়নি৷ বিএনপির স্থায়ী কমিটির এক সদস্য জানান, নিজের আদরের ছোট ছেলেকে হারিয়ে খালেদা জিয়া মানসিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়েছেন৷ পুত্রশোক কাটিয়ে উঠতে হয়তো তার আরো কয়েকদিন সময় লাগবে৷ কিন্তু জনগণের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দিতে চলমান আন্দোলনের বিজয় না আসা পর্যন্ত তিনি কোনো ধরনের আপস করবেন না৷বিএনপির স্থায়ী কমিটির অপর এক সদস্য জানান, কোকোর দাফন অনুষ্ঠানকে সামনে রেখে চলমান অবরোধ কিছুটা ঢিলেঢালাভাবে পালিত হলেও সামনের দিনগুলোতে অবরোধ আরো কঠোর হবে৷ অবরোধ কঠোরভাবে পালনের সুবিধার্থে জেলা ও বিভাগভিত্তিক হরতাল কর্মসূচিও অব্যাহত থাকবে৷ বিএনপির মাঠপর্যায়ের একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে সারাদেশে যৌথবাহিনীর সাঁড়াশি গ্রেফতার অভিযানের মধ্যেও গত মঙ্গলবার বায়তুল মোকাররমে আরাফাত রহমান কোকোর জানাজায় লাখ লাখ মানুষের অংশগ্রহণ বিএনপির নেতাকর্মীদের মনোবলকে বাড়িয়ে দিয়েছে৷ ২০ দলীয় জোটের নেতাকর্মীরাও আশার আলো দেখছেন৷ বিএনপি নেতারা মনে করেন, কোকোর মৃতু্যতে গভীর শোকের মধ্যেও তার জানাজায় মানুষের উপস্থিতি প্রমাণ করেছে খালেদা জিয়ার সঙ্গে জনগণ রয়েছে৷ এই ঘটনা একদিকে যেমন দলীয় নেতাকর্মীদের উত্‍সাহিত করছে৷ অন্যদিকে ক্ষমতাসীন সরকার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অতিউত্‍সাহী কর্মকর্তাদেরও এক ধরনের বার্তা দিয়েছে৷

জানা গেছে, কোকোর মৃত্যুর শোককে বিএনপি শক্তি পরিণত করে সামনের দিনগুলোতে দাবি আদায়ের চূড়ান্ত আন্দোলনে নামবে দল ও জোটের নেতাকর্মীরা৷ বিএনপির নেতাকর্মীদের কেউ কেউ আরাফাত রহমান কোকোর অকাল মৃত্যুর জন্য ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগকেও দায়ী করেন৷ কোকোর মৃতু্যর পর যুক্তরাষ্ট্রে গায়েবানা জানাজায় অংশ নিয়ে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সাদেক হোসেন খোকা এমন অভিযোগ করে বলেছেন, এত অল্প বয়সে কোকোর মৃতু্য কেউ আশা করেনি৷ সে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার বলি৷ তার অকাল মৃতু্যর দায় সরকার এড়াতে পারে না৷ তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে চলমান আন্দোলনই একমাত্র মুক্তির পথ৷

বিএনপির অপর একজন নীতিনির্ধারক বলেন, সরকারের বক্তব্য ও দেশের সার্বিক পরিস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে চলমান অনির্দিষ্টকালের অবরোধে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ইতিমধ্যে দুর্বল হয়ে গেছে৷ আন্দোলন দমনে রাজনৈতিক শক্তির চেয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর সরকারের নিভর্রশীলতাই তা প্রমাণ করে৷এদিকে চলমান অবরোধে গাড়ি পোড়ানোর অভিযোগে খালেদা জিয়াকে হুকুমের আসামি করে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় একাধিক মামলা দায়ের ঘটনাকে হালকাভাবে দেখছেন না বিএনপির নেতাকর্মীরা৷ পুত্র হারানোর শোকের মধ্যেও খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের ও পুরনো মামলা সচল করার বিষয়ে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে৷ বিএনপির নেতাকর্মীরা মনে করেন, খালেদা জিয়াকে আটক করে চলমান আন্দোলনকে দুর্বল ও নেতাকর্মীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়ানোর জন্যই সরকার এই পথ বেছে নিয়েছে৷ কিন্তু তাদের দাবি খালেদা জিয়াকে গ্রেফতার করা হলে আগুনের মধ্যে ঘি ঢালার মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে৷ চলমান আন্দোলন আরো বেগবান হবে৷ যা সরকারের পক্ষে কোনো বাহিনী দিয়েই সামাল দেয়া সম্ভব হবে না৷গুলশান কার্যালয়ের একটি সূত্র জানায়, গত ৩ জানুয়ারি থেকে গুলশান কার্যালয়ে অবস্থানের পর থেকে খালেদা জিয়া নিজের গ্রেফতারের মানসিক প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছেন৷ তাকে গ্রেফতার করা হলে কিভাবে চলমান আন্দোলন চলবে সে সম্পর্কে দলের নেতাদের আগাম দায়িত্ব বন্টন ও নির্দেশনা দিয়েছেন৷ তবে আরাফাত রহমান কোকোর মৃতু্যতে খালেদা জিয়াকে সান্ত্বনা জানাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গুলশান কার্যালয়ে যাওয়া ও তাকে সেখানে প্রবেশ করতে না দেয়ার বিষয়টি নিয়ে দলের শীর্ষ নেতাদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে৷ প্রধানমন্ত্রীকে সম্মান না দেয়া সঠিক হয়নি বলে প্রকাশ্য মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ৷ তবে দলের একটি অংশ মনে করে, একই দিন খালেদা জিয়াকে হুকুমের আসামি করে মামলা দায়ের ও কোকোর মৃতু্যতে সমাবেদনা জানাতে প্রধানমন্ত্রীর গুলশান কার্যালয়ে যাওয়া একটি রাজনৈতিক কৌশল ছিল৷অপরদিকে বিএনপি চেয়ারপার্সনের পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা রিয়াজ রহমানের ওপর হামলার ঘটনায় কূটনীতিক মহলেও বিএনপির পক্ষে অনেকটা সহানুভূতি সৃষ্টি হয়েছে৷ সমপ্রতি বিএনপির কূটনীতি দেখভাল করেন ভাইস চেয়ারম্যান শমশের মবিন চৌধুরী আটক করা হয়৷ অপর উপদেষ্টা সাবিহউদ্দিন আহমেদের গাড়িতে আগুন দেয়ার ঘটনাও ঘটে৷ এসব ঘটনার পরপর ঢাকায় নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকরা তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন৷ বিএনপি আশা করছে, চলমান পরিস্থিতিতে আন্দোলন চালিয়ে গেলে নতুন নির্বাচন আদায়ে সরকারকে সংলাপে বসাতে আন্তর্জাতিক মহলের চাপ আরো বাড়বে৷ ঢাকায় নিযুক্ত নতুন মার্কিন রাষ্ট্রদূত আনুষ্ঠানিকভাবে কাজে যোগ দিলে কূটনৈতিক তত্‍পরতা সক্রিয় হওয়ার আশা করছে ২০ দল৷

এদিকে,সমপ্রতি হরতাল, অবরোধসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক মামলার বাড়তি চাপে ভারাক্রান্ত হয়ে পড়েছে উচ্চ আদালতসহ দেশের সব আদালত৷ দৈনন্দিন মামলার স্বাভাবিক কার্যক্রম পরিচালনাই যেখানে দুষ্কর, সেখানে আদালতগুলোকে ব্যস্ত থাকতে হচ্ছে অসংখ্য রাজনৈতিক মামলা নিয়ে৷ এতে স্বাভাবিক বিচার কাজ বিঘি্নত হচ্ছে৷ বিচারপ্রার্থীদের মাঝে দেখা দিয়েছে অস্থিরতা৷ ন্যায় বিচার পাওয়া নিয়ে শঙ্কা৷ দীর্ঘসূত্রতার ভয়ে সাধারণ মানুষ এখন আদালতমুখী হতে চান না৷ অভিজ্ঞমহলের ধারণা, রাজনৈতিক মামলার চাপে সাধারণ মানুষের মামলার শুনানি বিলম্ব হয়৷ রায় পেতে দীর্ঘ সময় পার হয়ে যায়৷ ততক্ষণে অর্থনৈতিকভাবেও দুর্বল হয়ে পড়েন বিচারপ্রার্থীরা৷ তাই রাজনৈতিক মামলার জন্য পৃথক বেঞ্চ করে দেয়ার দাবি করেন আইনজ্ঞরা৷ দেশের রাজনীতি যতই অস্থির হচ্ছে আদালতগুলোতে ততই বাড়ছে জামিন, আগাম জামিন, জামিনের মেয়াদ বর্ধিতকরণ ও রিট মামলা৷ এসব মামলার কোনো কোনোটি সৃষ্টি করছে নতুন রাজনৈতিক ইসু্য৷ রাজনীতিকে ঠেলে দিচ্ছে নতুন উত্তেজনার আগুন৷ অন্যদিকে সময়মতো মামলার শুনানি না হওয়ায় হয়রানির শিকার হচ্ছেন বিচারপ্রার্থীরা৷ বাড়ছে মামলা পরিচালনা ব্যয়৷ গত কয়েক মাসে রাজনৈতিক নিপীড়নমূলক মামলার সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে করছেন আইনজীবীরা৷ আইনজীবী ও ভুক্তভোগীরা জানান, রাজনৈতিক অঙ্গন উত্তপ্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে চাপ বাড়ছে বিচারাঙ্গনের ওপর৷ বিশেষ করে জামায়াত-বিএনপির ডাকা সমপ্রতি বেশ কিছু কর্মসূচি পালন এবং সরকারের হার্ডলাইন অবলম্বনের শেষ পরিণতি গিয়ে ঠেকছে মামলায়৷হরতালে সারাদেশ থেকে হাজার হাজার ওেনতাকর্মী গ্রেফতার হন৷ তাদের জামিনের শুনানি করতে হয় স্থানীয় ম্যাজিস্ট্রেট আদালতগুলোতে৷ এছাড়া সামপ্রতিক হরতালে পুলিশের কাজে বাধা দান, গাড়ি ভাঙচুর, গাড়িতে পেট্রলবোমা নিক্ষেপসহ নানা অভিযোগে দায়ের করা মামলা মাথায় নিয়ে যারা আত্মগোপনে আছেন, তারা আগাম জামিনের জন্য ভিড় জমাচ্ছেন হাইকোর্টে৷ সমপ্রতি দেশের বিভিন্ন স্থানে হরতাল চলাকালে ককটেল নিক্ষেপ, গাড়ি ভাঙচুর, অগি্নসংযোগের মামলায় উচ্চ আদালতের জামিনের জন্য শরণাপন্ন হবেন রাজনৈতিকরা৷ এতে স্বাভাবিক বিচারকাজ বাধাগ্রস্ত হবে৷

অন্যদিকে সরকারি তরফে বলা হচ্ছে, কূটনীতিকরা কোথাও যেতে চাইলে তাদের জন্য রয়েছে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা৷ এ নিয়ে তারা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের রাষ্ট্রচার অনুবিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ করলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে৷ আর কূটনীতিক জোনে রাজনৈতিক কার্যালয় উঠিয়ে দেয়ার কূটনীতিকদের প্রস্তাব নিয়ে কাজ করছে সরকার৷

নবম সংসদের বিরোধী দল বিএনপি অংশ না নেয়ার বাস্তবতায় এবং সাংবিধানিক বাধ্যকতায় গত বছরের ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হয় দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন৷ এ নির্বাচনের পর দেশের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপিসহ সমমনা দলগুলো নতুন নির্বাচনের দাবি তোলে৷

গত ৫ জানুয়ারিকে ঘিরে বিএনপি কর্মসূচি দেয় এবং দলের চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া গুলশানের দলীয় কার্যালয়ে অবরুদ্ধ থাকেন৷ এর পর আসে অবরোধ, টানা অবরোধ ও হরতাল৷ এ কর্মসূচির সহিসংতায় এ পর্যন্ত প্রায় ৩৮ জনের প্রাণহানি হয়েছে৷

সূত্র জানায়, গত ৪ জানুয়ারি দেশে সহিংসতা শুরু হওয়ার পর থেকে বিদেশি কূটনীতিকরা সার্বিক পরিস্থিতি গভীর পর্যবেক্ষণে ছিলেন৷ তবে সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ও বিএনপি নেতা রিয়াজ রহমানের ওপর হামলা এবং রংপুরে চলন্ত বাসে পেট্রলবোমায় হতাহতের ঘটনায় তারা মুখ খোলেন৷ এ বিষয়টি নিয়ে তোলপাড় শুরু হলে ওবামা প্রশাসন থেকে শুরু করে ইউরোপের বিভিন্ন দেশ থেকে উদ্বেগ জানানো হয়৷

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলেন, চলমান রাজনৈতিক সহিংসতায় আন্তর্জাতিক উদ্বেগের পরিপেট্রক্ষিতে সরকার এরই মধ্যে ঢাকাস্থ বিদেশি কূটনীতিদের বলেছে, অপেক্ষা করুন আপনাদের উদ্বেগ নিরসন হবে৷ জবাবে কূটনীতিকরাও বলেছেন, সহিংস কর্মকাণ্ড করে গণতন্ত্র শক্তিশালী করা যায় না৷ আশা করছি খুব শিগগিরই এসব সহিংসতা বন্ধ হবে৷

সূত্র আরো জানায়, চলমান সহিংসতায় ভাবমূর্তি সংকটে পড়েছে বাংলাদেশ৷ সামপ্রতিক দিনগুলোয় অনাকাঙ্ক্ষিত প্রাণহানির ঘটনা এবং অরাজক পরিস্থিতি বৃদ্ধি পাওয়ায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ছে সবখানে৷ সে উদ্বেগে ভর করেছে ঢাকার কূটনীতিকদেরও৷