যোগাযোগমন্ত্রী-ওবায়দুল-কাদের

দৈনিকবার্তা- ঢাকা, ২৯ জানুয়ারি: সড়ক,রেল ও নৌপথে নিরাপদে যাত্রী পরিবহনে কঠোর নিরাপত্তা জোরদার করা হচ্ছে জানিয়েছেন সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।বৃহস্পতিবার বিকেলে সচিবালয়ে আন্তঃমন্ত্রণালয়ের বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি। অবরোধে নাশকতার মধ্যে যাত্রী ও পণ্য পরিবহন নির্বিঘ্ন করতে বিজিবির পর এবার দেশের ৯৯৩টি পয়েন্টে ১২ হাজার আনসার মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের জানিয়েছেন, শুক্রবার থেকেই জাতীয় ও আঞ্চলিক মহাসড়কের ২১৬টি পয়েন্টে আনসার সদস্যদের মোতায়েন করা হবে। পর্যায়ক্রমে আনসার মোতায়েন হবে অন্য পয়েন্টেও।

বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে ‘মহাসড়ক, নৌ ও রেলপথে যাত্রী এবং পণ্য পরিবহন নিরাপদ-নির্বিঘ্ন করতে’ এক আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়।সভার পর মন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, নাশকতার বিষয়ে জনসচেতনা সৃষ্টিরও উদ্যোগ নেওয়া হবে, যাতে জনপ্রতিনিধিদের সম্পৃক্ত করা হবে। জনসচেতনতা তৈরিতে সাংসদ, উপজেলা ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যন, ইউপি সদস্যরা সহযোগিতা করবেন। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেবে।

নাশকতা মোকাবেলায় রাজনৈতিক সমন্বয়ের ওপর জোর দিয়ে মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে আলোচনা করেই এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।জনগণের মাঝে ঘৃণার আগুন জ্বালিয়ে সহিংসতার আগুনের জবাব দেব। গত ৫ জানুয়ারি থেকে দেশব্যাপী বিএনপি জোটের লাগাতার অবরোধ চলছে, মাঝে-মধ্যে হরতালও থাকছে। নাশকতা- সহিংসতায় এ পর্যন্ত ৩৯ জনের মৃত্যু হয়েছে, পেট্রোল বোমা আর যানবাহনে দেওয়া আগুনে দগ্ধ হয়েছে বহু মানুষ। নাশকতায় এই প্রাণহানীর জন্য বিএনপিকে দায়ী করে আসছেন ক্ষমতাসীন দলের নেতারা। বিএনপি প্রধান খালেদা জিয়াকে হুকুমের আসামি করে মামলাও দায়ের করেছে পুলিশ। তিনকোণা একটি ধাতব বস্তু সাংবাদিকদের দেখিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, এগুলো ব্যবহার করে গাড়ি পাংচার করা হচ্ছে।

মন্ত্রী জানান, চলমান অবরোধে ৩২৫টি বাস-ট্রাক আগুনে পুড়েছে, ৫০০টি ভাংচুরের শিকার হয়েছে। আর বিআরটিসির পাঁচটি গাড়ি পুড়েছে ও ২৬টি ভাংচুর হয়েছে।চলমান নাশকতায় ১৫ জন পরিবহন শ্রমিক নিহত হয়েছেন বলেও সড়ক পরিবহন মন্ত্রী জানান।অবরোধে মহাসড়কে যাত্রীবাহী যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটায় একদিনে যেমন সাধারণ মানুষের ভোগান্তি হচ্ছে, তেমনি পণ্য পরিবহনে সঙ্কট তৈরি হওয়ায় পাইকার বাজারে সরবরাহের ঘাটতি তৈরি হয়েছে। এই পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠতে জানুয়ারির মাঝামাঝি সময় থেকে দেশের বিভিন্ন জেলায় বিজিবিও মোতায়েন রয়েছে, যারা পাহারা দিয়ে যানবাহন চলাচলে সহায়তা করছেন। অবরোধে ক্ষতিগ্রস্ত যানবাহনের মালিকদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনায় রয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করে যত দ্রুত সম্ভব এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেব।

অন্যদের মধ্যে নৌমন্ত্রী শাজাহান খান, রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক, স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল, স্থানীয় সরকার প্রতিমন্ত্রী মসিউর রহমান রাঙ্গা সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তারা সভায় উপস্থিত ছিলেন।এ জন্য সড়ক-মহাসড়কের ২১৬টি ঝুঁকিপূর্ণ পয়েন্টে ৩০ জানুয়ারি থেকে আনসার মোতায়েন করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে কথা উল্লেখ করে সেতুমন্ত্রী বলেন, অবরোধে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবহন মালিকদের ক্ষতিপূরণ দেয়ার বিষয়েও চিন্তা করছে সরকার।সরকারি হিসেবে গত ২৩ দিনে ২০ দলীয় জোটের রাজনৈতিক কর্মসূচিতে পেট্রোল বোমা ছুড়ে ৩২৫টি যানবাহন পুড়ে ফেলেছে অবরোধ হরতাল সমর্থকরা। আর এতে ১৫ পরিবহন শ্রমিক নিহত হয়েছেন। আহত হয়ে চিকিৎসাধীন ৫৬ জন। আর ৫০০ এর বেশি যানে ভাঙচুর করা হয়েছে।