দৈনিকবার্তা- ঢাকা, ২৯ জানুয়ারি: বাংলাদেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে এবার উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজাররিক৷গত ২২ জানুয়ারি জাতিসংঘের নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ উদ্বেগ প্রকাশ করেন৷
সেই সঙ্গে শান্তিরক্ষী বাহিনীতে সার্বিকভাবে শীর্ষে অবস্থানকারী দেশ হিসেবে বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনী যদি নিজ দেশে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে ব্যর্থ হয় তাহলে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মিশনে তাদের নিয়োগের বিষয়ের যৌক্তিকতা প্রসঙ্গেও কথা এসেছে৷
ব্রিফিংয়ে জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্রের কাছে প্রশ্ন করা হয়-বাংলাদেশে রাজনৈতিক সংঘাত ও সহিংসতা বেড়ে চলেছে, বহু মানুষের মৃতু্য হয়েছে৷ সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে গ্রেফতারের আহ্বান জানানো হচ্ছে এবং গণমাধ্যমের ওপরও বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে৷ যদিও মহাসচিব বান কি মুন এর আগে এ বিষয়ে কথা বলেছেন এমনকি তিনি এ ব্যাপারে কিছু আলোচনা করারও চেষ্টা করেছেন৷ জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশ গুরুত্বপূর্ণ দেশ৷ সেক্ষেত্রে ডিপিএ (ডিপার্টমেন্ট অব পলিটিক্যাল অ্যাফেয়ার্স) বা মহাসচিব কি করছেন?
জবাবে জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্র বলেন, আমার মনে হয় আমরাও (জাতিসংঘ) এ ব্যাপারে উদ্বিগ্ন৷ এর আগে হিউম্যান রাইটস হাইকমিশনারের কার্যালয় থেকেও এ ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে৷ শান্ত থাকার আহ্বান জানানো হয়েছিল হাইকমিশনারের কার্যালয়ের পক্ষ থেকে৷ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কর্তৃক বিরোধী দলের গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের গ্রেফতার ও বন্দী রাখার প্রক্রিয়া যাতে বিধিবহির্ভূত না হয় ও আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে সব পদক্ষেপ নেয়া হয় এবং তা যেন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের মানদণ্ডে পরিচালিত হয়, তা নিশ্চিতে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে৷
তিনি আরো বলেন, আমরা যে পরিস্থিতি দেখেছি, তা অবশ্যই স্বাভাবিক অবস্থাকে বিঘ্ন করছে৷
মুখপাত্রের কাছে সাংবাদিক লির প্রশ্ন ছিল- আমি একটি সুনির্দিষ্ট বিষয় সম্পর্কে জানতে চাই৷ জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে অবদান রাখার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ এখন এক নম্বরে অবস্থান করছে এবং দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীর পদতলেই বর্তমানে কয়েকটি হয়রানির ঘটনা ঘটেছে৷ তাই শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশি সেনা মোতায়েনে পুনর্বিবেচনায় তা কি কোন ধরনের ভূমিকা রাখবে?
জবাবে মুখপাত্র বলেন, আমি মনে করি,সেনা মোতায়েনের ক্ষেত্রে জাতিসংঘের আদর্শ মানদণ্ডে মানবাধিকার পর্যালোচনা নীতি প্রয়োগের স্বাভাবিক প্রক্রিয়াই চলমান থাকবে৷
জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্রের এমন মন্তব্য সম্পর্কে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর সাবেক উইং কমান্ডার সালাউদ্দিন চৌধুরী জানান, এটি জাতিসংঘের পক্ষ থেকে সেনাবাহিনীর সদস্য, সরকার ও রাজনীতিবিদদের জন্য একটি বার্তা৷ কারণ, বাংলাদেশ জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনীতে সার্বিকভাবে শীর্ষে অবস্থানকারী দেশ হিসেবে নিজের দেশের শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে ব্যর্থ হলে আন্তর্জাতিকভাবে প্রশ্ন উঠবেই৷