nahid_0

দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ২৬ জানুয়ারি: বিএনপি অবরোধ চালিয়ে গেলে তার মধ্যেই এসএসসি পরীক্ষা নেওয়ার ইংগিত দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ৷এদিকে পরীক্ষা যতো এগিয়ে আসছে, পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকদের শঙ্কা ততো বাড়ছে৷ অবরোধের কারণে প্রস্তুতিতে ব্যাঘাত ঘটছে বলেও জানিয়েছেন কয়েকজন পরীক্ষার্থী৷

আগামী ২ ফেব্রুয়ারি থেকে সারাদেশে একযোগে শুরু হচ্ছে এবারের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা, যাতে ১৪ লাখের বেশি শিক্ষার্থী অংশ নেবেন৷শিক্ষামন্ত্রী নাহিদ সোমবার সচিবালয়ে বলেন, পরীক্ষার সব প্রস্তুতি শেষ৷ এখন সরকারের প্রত্যাশা, শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করে এসএসসি পরীক্ষার সময় বিএনপি অবরোধ তুলে নেবে৷

তাদের অবরোধের তো কোনো সময়সীমা নেই৷ তাই আমরা যে পরীক্ষা পিছিয়ে দেব তারও তো কোনো উপায় নেই৷ যথাসময়েই পরীক্ষা নিতে হবে৷ পরীক্ষা পেছানোর কোনো সুযোগ নেই৷গত ৫ জানুয়ারি থেকে দেশব্যাপী লাগাতার অবরোধ কর্মসূচি পালন করছে বিএনপি৷ তারই মধ্যে মাঝে মধ্যে হরতাল থাকছে৷ নাশকতা ও সহিংসতায় সারা দেশে এ পর্যন্ত অন্তত ৩৪ জনের মৃতু্য হয়েছে৷

বিএনপি-জামায়াতের হরতালের কারণে ২০১৩ সালে এসএসসির ৩৭টি বিষয় এবং এইচএসসির ৪১টি বিষয়ের পরীক্ষা পেছাতে বাধ্য হয়েছিল কর্তৃপক্ষ৷ওই বছরের জেএসসি-জেডিসির ১৭টি বিষয় এবং প্রাথমিক ও ইবতেদায়ী শিক্ষা সমাপনীর দুটি বিষয়ের পরীক্ষা হরতালের কারণে পিছিয়ে দেওয়া হয়৷

এছাড়া গত বছরের শেষ দিকে জেএসসি-জেডিসি এবং প্রাথমিক ও ইবতেদায়ী পরীক্ষাও বিএনপির হরতালের কবলে পড়লে বেশ কয়েকটি পরীক্ষা পিছিয়ে যায়৷শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, অবরোধের মধ্যে পরীক্ষা নেওয়া হলেও যেদিন হরতালের কর্মসূচি থাকবে সেদিনের পরীক্ষা পিছিয়ে দেওয়া হতে পারে৷

একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন,অবরোধের মধ্যে পরীক্ষার্থীদের নিরাপত্তার বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেওয়া হয়েছে৷ তারা বলেছেন, একসঙ্গে ১৪ লাখ শিক্ষার্থীকে নিরাপত্তা দেওয়ার মতো লোকবল আইনশৃঙ্খলা বাহিনীতে নেই৷তবে অবরোধের মধ্যে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা চিহ্নিত করে সেখানে অতিরিক্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আশ্বস্ত করেছে বলে ওই কর্মকর্তা জানান৷

পরীক্ষার মধ্যে রাজনৈতিক কর্মসূচিতে ক্ষোভ প্রকাশ করে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ছয় বছর আগেই নির্ধারিত হয়েছে ১ ফেব্রুয়ারি এসএসসি এবং ১ এপ্রিল থেকে এইচএসসি পরীক্ষা শুরু হবে৷ পরীক্ষার রুটিন দেখেও এই সময়ে তারা কেন এসব কর্মসূচি দেন? তাদের কি কাণ্ডজ্ঞান নেই?

হরতাল-অবরোধ করে বিএনপির কোনো লাভ হচ্ছে না মন্তব্য করে নাহিদ বলেন, তারা শিক্ষার্থী ও পুরো শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংস করতে উঠেপড়ে লেগেছে৷ এটা কারো কাম্য নয়, এটা হতে দেওয়া যায় না৷

ও এবং এ লেভেলের পরীক্ষা সমপ্রতি অবরোধের আওতামুক্ত ঘোষণা করে বিএনপি৷ তবে আসন্ন এসএসসি পরীক্ষা অবরোধের আওতামুক্ত রাখা হবে কি না সে বিষয়ে এখনো কিছু বলেননি দলটির নেতারা৷শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, পরীক্ষার মধ্যে অবরোধ প্রত্যাহার হবে না এমনটি ধরে নিয়েই পরীক্ষা নেওয়ার প্রস্তুতি হয়েছে৷তবে আমরা তাকিয়ে আছি, ইংরেজি মাধ্যমের মতো এসএসসি পরীক্ষাও বিএনপি অবরোধের আওতামুক্ত রাখে কিনা৷তবে পরীক্ষার এক সপ্তাহ আগেও রাজনৈতিক পরিস্থিতির কোনো উন্নতি না হওয়ায় পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকদের উদ্বেগ বাড়ছে৷