দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ২৪ জানুয়ারি: অধিকার আদায়ের নামে বিএনপির মানুষ পুড়িয়ে মারার রাজনীতির অবসান হওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা৷ শনিবার গণভবনে ভিডিও কনফারেন্সে গোপালগঞ্জের কয়েকটি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন শেষে তিনি এ কথা বলেন৷শেখ হাসিনা বলেন, ভয় দেখিয়ে দেশের উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত করতে পারবেন না বিএনপি নেত্রী৷ জ্বালাও-পোড়াওয়ের পথ থেকে সরে আসার ব্যাপারে তার সুমতি হোক৷
তিনি আরো বলেন, যারা দেশের মানুষকে হত্যা করতে পারে তাদের রাজনীতি দেশের জনগণের কল্যাণের জন্য নয়৷বিএনপি দেশের মানুষ পুড়িয়ে মারার সংস্কৃতি শুরু করেছে উল্লেখ করে এমন ধ্বংসাত্মক রাজনীতি থেকে সরে আসতে আবারো বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার প্রতি আহ্বান জানান শেখ হাসিনা৷
গোপালগঞ্জ, নড়াইল, বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক ও কর্মকর্তাদের উদ্দেশে দেয়া বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোনো কারণ ছাড়াই দেশের উন্নয়নকে ব্যাহত করতে পেট্রোলবোমা হামলা চালিয়ে সাধারণ মানুষকে হত্যার রাজনীতি শুরু করছে বিএনপি-জামাত৷এর আগে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে গোপালগঞ্জের মধুমতি নদীর ওপর শেখ লুত্ফর রহমান সেতুর উদ্বোধন, কালনা সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন ও টুঙ্গিপাড়া বিআরটিসি ইন্সটিটিউটের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা৷
শান্তিপূর্ণ পরিবেশের মধ্যে কোন কারণ ছাড়াই বিএনপি-জামায়াত অহেতুক মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা৷তিনি বলেন, যাদের হাত মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করে, যাদের হাতে পোড়া মানুষের গন্ধ তারা কার জন্য রাজনীতি করে৷শনিবার বিকেলে গণভবনে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে গোপালগঞ্জে বেশ কয়েকটি উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন৷
টুঙ্গিপাড়ার পাটগাতীতে মধুমতি নদীর উপর নির্মিত শেখ লুত্ফর রহমান সেতু এবং বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন সংস্থার (বিআরটিসি) ডিপো ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী৷ এছাড়া গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীতে মধুমতি নদীতে কালনা ব্রিজের ভিস্তি প্রস্তরও স্থাপন করেন শেখ হাসিনা৷
গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রকল্পগুলোর উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন৷এ সময় গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে উপস্থিত ছিলেন, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, গোপালগঞ্জ, নড়াইল ও বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক সহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা৷
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, অত্যন্ত দুঃখের বিষয় বাংলাদেশে গত এক বছর শান্তিপূর্ণ পরিবেশ ছিলো৷ দেশ উন্নয়নের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, বাংলাদেশ বিশ্বের কাছে উন্নয়নের মডেল৷ এর মধ্যে কোন কারণ ছাড়াই বিএনপি-জামায়াত মানুষ পুড়িয়ে মারা শুরু করেছে৷
তিনি বলেন, তারা গত কয়েকদিনে ৩শ’-৪শ’ বাস পুড়িয়েছে৷ ড্রাইভার শ্রমিকদের পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছে৷ ছোট ছোট শিশুরাও রক্ষা পাচ্ছে না৷আন্দোলনতো আমরাও করেছি৷ আমরা তো কোন দিন মানুষ পুড়িয়ে মারিনি৷ এ ধরনের মানুষ হত্যার আন্দোলন আর দেখিনি৷খালেদা জিয়াকে উদ্দেশ্য করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব৷ সেই মানুষকে পুড়িয়ে মারছে তারা৷ কত মায়ের বুক খালি করেছে খালেদা জিয়া৷ খালেদা জিয়াকে আল্লাহ সুমতি দিক তিনি যেন মানুষ পুড়িয়ে মারার আন্দোলন বন্ধ করুন৷
শনিবার বিকেলে গণভবনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ার পাটগাতীতে মধুমতি নদীর উপর নির্মিত শেখ লুত্ফর রহমান সেতু এবং বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন সংস্থার (বিআরটিসি) ডিপো ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী৷ এছাড়া গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীতে মধুমতিনদীতে কালনা ব্রিজের ভিস্তি প্রস্তরও স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী৷গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রকল্পগুলোর উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী৷ এ সময় গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে উপস্থিত ছিলেন, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, গোপালগঞ্জ, নড়াইল ও বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা৷
এর আগে গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক মো. খলিলুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে ভিডিও কনফারেন্সে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর সেতু দিয়ে যানবাহন চলাচল শুরু হবে৷ সেতু নির্মাণের মধ্য দিয়ে পিরোজপুর, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, বরগুনা ও গোপালগঞ্জ জেলার মানুষের আর্থ-সামাজিক-উন্নয়নের দ্বার উন্মোচিত হবে৷২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর ৭২.৬৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ৩৯১.৪৯১ মিটার দীর্ঘ ও ৯.৫০ মিটার প্রস্থের সেতুটির নির্মাণ কাজ শেষ হয়৷আওয়ামী লীগ সরকারের প্রথম মেয়াদ ২০০০ সালের ২৩ ডিসেম্বর এই সেতুর ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা৷ ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর সেতুটির নির্মাণ কাজ বন্ধ ছিলো৷
২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ সরকার দ্বিতীয় দফায় আবারো ক্ষমতায় এলে ২০০৯ সালে সেতুটির অসমাপ্ত নির্মাণ কাজ শুরু হয়৷ ২০১২ সালের ৫ মে সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল৷ কিন্তু নির্ধারিত সময়ে কাজটি শেষ না হওয়ায় অবশেষে ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর সেতুর কাজ সমাপ্ত হয়৷ নানা প্রতিবন্ধকতার কারণে সেতুটি নির্মাণ করতে সময় লেগেছে ১৫ বছর৷