দৈনিকবার্তা-ঢাকা ১২ জানুয়ারি: স্থানীয় সরকারমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বিএনপির উদ্দেশে বলেছেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনও শেখ হাসিনার অধীনে হবে৷ ওই নির্বাচনও আপনারা বয়কট করতে পারেন৷ তবে করলে আপনাদের অস্তিত্ব থাকবে না৷ সোমবার বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আওয়ামী লীগের সমাবেশে সৈয়দ আশরাফ এ কথা বলেন৷ তিনি বলেন, গত পরশুদিন একটি পত্রিকায় দেখলাম একজন বুদ্ধিজীবী লিখেছেন, শেখ হাসিনাকে ছাড়া বিএনপি নির্বাচনে যেতে পারে৷ কেন যে এসব বুদ্ধিজীবীরা খালেদা জিয়াকে নির্বাচনে আসতে বলেননি৷ তাঁরা মনে করেছিলেন, আওয়ামী লীগ ফুঁ দিলে উড়ে যাবে৷ কিন্তু আওয়ামী লীগ তো ফুঁ দিলে উড়ে যাওয়ার দল নয়৷
সৈয়দ আশরাফ আরও বলেন, কিছু সংবাদপত্রে লেখা হচ্ছে এখন নির্বাচন দিলে শেখ হাসিনার অধীনেই তাঁরা আসবেন৷ তিনি প্রশ্ন তুলে বলেন, তাহলে কেন আগে তাঁরা নির্বাচনে আসলেন না? নির্বাচন কী বনভোজন? দাওয়াত দিয়ে নিয়ে আসতে হবে৷
বিএনপির উদ্দেশে আওয়ামী লীগের নেতা আশরাফ আরও বলেন, ‘আপনারা যে নির্বাচনে আসলেন না এই ভুলটা স্বীকার করেন৷’ তিনি দলীয় নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে বলেন, বিএনপি অশুভ দল৷ এদের ব্যাপারে সতর্ক থাকুন৷ দলকে শক্তিশালী করুন৷ আওয়ামী লীগ সভাপতিণ্ডলীর সদস্য ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেন, বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া বারবার পরাজিত হয়েছেন, আবারও পরাজিত হবেন৷
খালেদা জিয়ার উদ্দেশ্যে নাসিম বলেন, আপনি (খালেদা) পরাজিত, ব্যর্থ৷ যে সেনাপতি যুদ্ধক্ষেত্রে নামে সেই ব্যর্থ হয়৷ আপনি বরাবরের মতো এবারও পরাজিত হয়েছেন৷ ভবিষ্যতেও হবেন৷তিনি বলেন, ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে অংশ না নিয়ে বিএনপি ভুল করেছে৷ আর এই ভুলের খেসারত কেন জনগণ দেবে? পানি ছাড়া যেমন মাছ বাঁচে না, তেমনি নির্বাচন ছাড়া রাজনৈতিক দল বাঁচে না৷ আপনার দলও বাঁচবে না৷
২০১৯ সালের আগে েদেশে নির্বাচন হবে না জানিয়ে মোহাম্মদ নাসিম বলেন, ২০১৯ সালের নির্বাচনও জননেত্রী শেখ হাসিনার অধীনেই হবে৷ সেই নির্বাচনে শেখ হাসিনা জয়ী হয়ে হ্যাট্রিক করবেন৷বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় উপস্থিত নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্য করে সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেন, খবর পাইছেন, খালেদা জিয়া ধরা খাইছে?
সুরঞ্জিত বলেন, বিএনপি বলল খালেদা জিয়াকে নাকি বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ ফোন দিয়েছেন অথচ অমিত শাহ বললেন তিনি কোন ফোন করেন নাই৷ এবার মিথ্যাচার করে খালেদা জিয়া কাপড়- চোপড়ে ধরা পড়ছেন৷ খালেদা জিয়া হাতে নাতে ধরা খাইছে৷
খালেদা জিয়াকে উদ্দেশ্য করে সুরঞ্জিত বলেন, নওয়াজকে (পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী) ফোন করে দেখেন, তিনিও আপনার ফোন ধরবেন না৷ ইমরান খান কয়েকদিন আগে নওয়াজের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে বাড়ি ফেরত গেছেন, আপনারও সময় হয়েছে বাড়িতে ফেরত যাওয়ার৷ আপনি ইমরানকেও ফোন করে দেখতে পারেন, সেও আপনার ফোন ধরবেন না৷সাবেক এ রেলমন্ত্রী আরো বলেন, আপনি (খালেদা জিয়া) বসে বসে অবরোধ ডাকবেন আর মানুষ পোড়াবেন এ অধিকার কোথায় পেলেন? উন্নত দেশে এরকম অবরোধ ডেকে মানুষ পোড়ানোর কোন সাংবিধানিক অধিকার নেই৷
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ সেলিম বলেছেন, ব্রিটিশ সরকারকে বলবো উন্মাদ তারেক রহমানকে চিকিত্সা করান, আর না পারলে তাকে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেন৷ এ দেশের মানুষ জানে কিভাবে উন্মাদের চিকিত্সা করাতে হয়৷ সেলিম বলেন, খালেদা জিয়া আপনি বোমা মেরে মানুষ হত্যা করে কি চান বাংলাদেশে? আপনি কি এদেশকে পাকিস্তান বানাতে চান? কিন্তু এ স্বপ্ন বাস্তবায়ন হবে না৷ আপনার পুত্র কুলাঙ্গার তারেক রহমান বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কটূক্তি করছে৷সরকারের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে সেলিম বলেন, আমি অনুরোধ করবো ইন্টারপোলের মাধ্যমে এ উন্মাদকে দেশে ফিরিয়ে আনুন৷ এদেশের মানুষ তার বিচার না হওয়া পর্যন্ত শান্তি পাবে না৷
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য এবং সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর সভাপতিত্বে জনসভায় বক্তব্য দেন, দলটির উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, জাহাঙ্গীর কবির নানক, ঢাকা মহানগরের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এম এ আজিজ, সাধারণ সম্পাদক, ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, সাংগঠনিক সম্পাদক আফম বাহাউদ্দিন নাছিম, ঢাকা মহানগরের যুগ্ম সম্পাদক অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, জাতীয় শ্রমিক লীগের সভাপতি শুক্কুর মাহামুদ, মহিলা লীগের সভাপতি আশরাফুন্নেছা মোর্শারফ, যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশীদ, কৃষক লীগের সভাপতি মোতাহার হোসেন মোল্লা, স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মোল্লা মো. আবু কাউসার, যুব মহিলা লীগের সভাপতি নাজমা আক্তার প্রমুখ৷