দৈনিকবার্তা-ঢাকা ১০ জানুয়ারি: দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত ২০ দলীয় জোটের অনির্দিষ্টকালের অবরোধ কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ৷এ সময় তিনি দলীয় নেতাকর্মীদেরকে শান্তিপূর্ণভাবে সর্তক থেকে অবরোধ বাস্তবায়ন করতে সর্বশক্তি দিয়ে রাজপথে নামার আহবান জানিয়েছেন৷
শনিবার সকালে রাজধানীর গুলশানের একটি বাসায় সাংবাদিকদের তিনি একথা জানান৷ শনিবার সকালে কয়েকটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলকে ডেকে নিয়ে রাজধানীর গুলশানের একটি অজ্ঞাতস্থান থেকে এ আহ্বান জানান তিনি৷রিজভী বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে পিপার সপ্রে প্রয়োগ করে তার রাজনৈতিক কার্যালয় অবরুদ্ধ করে রেখে সরকার প্রতিনিয়ত নাটক করছে৷
বাংলাদেশে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি বৃদ্ধি পেয়েছে সরকারের মন্ত্রীদের বক্তব্যের প্রসঙ্গে রিজভী বলেন, অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি বৃদ্ধি নয় বরং লুটপাট ও দুর্নীতি করে নিজেদের পকেট ভারী করছে৷ তারা মিথ্যাচারের মাধ্যমে বিভ্রান্তি ছড়িয়ে দিয়ে দেশ চালাচ্ছে৷
তিনি আরো বলেন, আমাদের নাগরিক ও ধর্মীয় স্বাধীনতা রক্ষা করতে হলে এ সরকারকে পদত্যাগ করতেই হবে৷এ সময় প্রশাসনে রদবদল প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিএনপির দলীয় কর্মসূচি বাস্তবায়নে বাধা দিতেই প্রতিনিয়ত প্রশাসনে রদবদল আনা হচ্ছে৷
রুহুল কবির রিজভী বলেন, আমাদেরকে সতর্ক অবস্থানে থেকে আন্দোলন চালিয়ে যেতে হবে৷ কারণ, সরকার নিজেই নাশকতা করে তার দায় আন্দোলনরত বিএনপির নেতাকর্মীদের ওপর চাপানোর চেষ্টা করবে৷ হামলা-মামলা ও গ্রেফতারের মাধ্যমে চলমান আন্দোলনকে স্তব্ধ করার অপচেষ্টাও চালাবে তারা৷তিনি বলেন, বিরোধী দলের শান্তিপূর্ণ অবরোধ কর্মসূচি দমন ও রক্তাক্ত করে আরো মানুষ হত্যার পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সরকার প্রশাসন রদবদলের পদক্ষেপ নিয়েছে৷একই সঙ্গে বলব, সরকার বিভিন্ন স্থানে নিজেরা নাশকতা সৃষ্টি করছে, এই ব্যাপারে সবাইকে সর্তক থাকতে হবে৷ এর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে৷৫ জানুয়ারি দশম সংসদ নির্বাচনের বর্ষপূতির্র দিনে কর্মসূচি পালনে ব্যর্থ হওয়ার পর বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া সারাদেশে লাগাতার অবরোধের ডাক দেন৷
অবরোধের মধ্যে গত কয়েকদিনে বিভিন্ন স্থানে পুলিশ ও সরকার সমর্থকদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়েছে বিএনপি-জামায়াত কর্মীরা৷ রাজধানীতে গাড়িতে অগি্নসংযোগ, ভাংচুর এবং রেললাইন উপড়ানোর ঘটনাও ঘটছে৷অবরোধ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়ে রিজভী বলেন, শান্তিপূর্ণভাবে অবরোধ কর্মসূচির মাধ্যমে এই অবৈধ সরকারের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক প্রতিরোধ গড়ে তুলুন৷
‘নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি জানিয়ে বিএনপির এই নেতা বলেন, অবশ্যই সরকারকে এই মুহূর্তে পদত্যাগ করে স্বচ্ছ নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে৷গুলশানের কার্যালয়ে সাত দিন ধরে অবরুদ্ধ দলীয় প্রধানকে নিয়ে তিনি বলেন, দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে কার্যালয়ে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে৷ তার সামনে বিষাক্ত পেপার সপ্রে ছোড়া হয়েছে৷ গেইটে তালা ঝুলিয়ে আবার খোলা হচ্ছে৷ প্রতিদিন সরকার এভাবে নাটক করছে৷ এ থেকে বোঝা যায়, তাদের কোনো কাজই সঠিক নয়৷
খালেদা জিয়ার সঙ্গে ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) প্রেসিডেন্ট অমিত শাহর ফোনালাপ নিয়েও সরকার বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে বলে মন্তব্য করেন রিজভী৷গত বৃহস্পতিবার বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেস সচিব মারুফ কামাল খান জানিয়েছিলেন, বিজেপি সভাপতি খালেদার জিয়াকে ফোন করে তার খোঁজ-খবর নিয়েছেন৷ যদিও পরে বিজেপির নেতৃত্ব দুই নেতার মধ্যে ফোনালাপের মতো ঘটনা ঘটেনি বলে জানিয়েছেন৷এ বিষয়ে রিজভী বলেন, তিনি (অমিত শাহ) টেলিফোন করে বিএনপি চেয়ারপারসন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার খোঁজ-খবর নিয়েছেন, তাকে অবরুদ্ধ করে রাখার নিন্দা জানিয়েছেন৷
এ নিয়ে সরকার নানা বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে৷ আমি চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলছি, বিজেপি প্রধান বেগম জিয়াকে টেলিফোন করেছিলেন৷ এটাই সত্যি৷আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-নেতারা যা বলবে, তার বিপরীতটাই সত্য৷ এই সরকার মিথ্যার ওপর ভিত্তি করে নিষ্ঠুর-নির্মম দমন নিপীড়নের মাধ্যমে দেশ চালাচ্ছে৷