দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ৭ জানুয়ারি: বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর খোঁজ না পাওয়ায় থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছে অ্যাপোলো হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ৷ রিজভী হাসপাতালের বিল পরিশোধ করেননি বলেও জিডিতে উল্লেখ করা হয়েছে৷ বুধবার সকালে হাসপাতালটির নিরাপত্তা কর্মকর্তা শাহ আলম রাজধানীর ভাটারা থানায় জিডিটি করেন৷ ভাটারা থানার কর্তব্যরত কর্মকর্তা (ডিউটি অফিসার) হাবিবুর রহমান এ তথ্য জানিয়েছেন৷হাবিবুর বলেন, সকাল সোয়া ১০টায় জিডিটি নথিভুক্ত করা হয়েছে৷ জিডি নম্বর ৩৩৫৷
জিডিতে উল্লেখ করা হয়েছে, অসুস্থতার কারণে গত ৪ জানুয়ারি রাত থেকে অ্যাপোলো হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন রুহুল কবির রিজভী৷ গত রাত আনুমানিক ৩টা ৪৫ মিনিটে রিজভীর খোঁজখবর নিতে কেবিনে যান হাসপাতালের সেবিকা লাবণী৷ তিনি সেখানে গিয়ে দেখেন রিজভী নেই৷ এরপর পুরো হাসপাতাল খুঁজেও রিজভীকে পাওয়া যায়নি৷ গত দিবাগত রাত ১২টার পর যেকোনো সময় কাউকে না জানিয়ে রিজভী পালিয়ে গেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে৷ রিজভী হাসপাতালের পাওনাও পরিশোধ করেননি৷গত ৪ জানুয়ারি রাতে অসুস্থ রিজভীকে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে অ্যাপোলো হাসপাতালে নিয়ে যায় গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)৷ এর আগে অবশ্য বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল, নয়াপল্টনের কার্যালয়ে রিজভী বুকে ব্যথা অনুভব করছেন৷
অ্যাপোলো হাসপাতালের নিরাপত্তা কর্মকর্তা শাহ আলম বুধবার সকালে রাজধানীর ভাটারা থানায় জিডি করেন বলে এসআই হাবিবুর রহমান জানান৷জিডিতে বলা হয়েছে, রিজভী গত ৪ জানুয়ারি হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিত্সা নিচ্ছিলেন৷গত রাত ১২টার সময় তার কেবিনে গিয়ে দেখা যায়, তিনি টিভি দেখছেন৷ এরপর নিয়মিত চেক আপের লক্ষ্যে রাত ৩টা ৪০ মিনিটে নার্স লাবণী আক্তার তার কক্ষে গিয়ে তাকে পাননি৷এরপর হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে ঘোরাঘুরি করেও তাকে পাওয়া যায়নি৷ বিল পরিশোধ ছাড়াই বিএনপির এই যুগ্ম মহাসচিব হাসপাতাল থেকে চলে গেছেন বলে জিডিতে উল্লেখ করা হয়েছে৷ তবে বিলের পরিমাণ সম্পর্কে তাতে কিছু বলা হয়নি বলে এসআই হাবিব জানিয়েছেন৷
দুপুরে অ্যাপোলো হাসপাতালের ডিউটি ম্যানেজার মফিজুল ইসলাম জানান, গ্যাস্ট্রোএন্টেরোলজির অধ্যাপক মজিবুর রহমানের তত্ত্বাবধানে হাসপাতালের দশম তলার ১১ নম্বর কেবিনে চিকিত্সাধীন ছিলেন রিজভী৷ গোপনীয় বলে তার চিকিত্সার ব্যয় সম্পর্কে বলতে রাজি হননি হাসপাতালের এই কর্মকর্তা৷ তবে রিজভী যে কেবিনে ছিলেন তার প্রতিদিনের ভাড়া ১০ হাজার টাকার মতো বলে জানিয়েছেন তিনি৷ শনিবার রাত থেকে ওই কেবিনে ছিলেন রিজভী৷ চার দিনের মাথায় মঙ্গলবার মধ্যরাতে হাসপাতাল ছেড়েছেন তিনি৷
অ্যাপোলোর কর্মকর্তা মফিজুল বলেন, হাসপাতালের প্রতিটি ফ্লোরে সিসি ক্যামেরা আছে, সিকিউরিটি কর্তৃপক্ষ আছে- প্রয়োজনে তদন্ত কমিটি গঠন করে তারাই দেখবেন কীভাবে ও কখন ওই কেবিন থেকে রিজভী আহমেদ বেরিয়ে গেলেন৷এই ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলার কারণে কারো বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, কারো বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে কি না তা তার জানা নেই৷ তবে কারো গাফিলতি থাকলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিতে পারে৷ সকালে রিজভীর সহকারী মজিদ বিডিনিউজ বলেন, স্যার রাত ৩টার দিকে অ্যাপোলো হাসপাতাল থেকে চলে এসেছেন৷তিনি নিরাপদে আছেন,ভালো আছেন৷কাউকে বলার প্রয়োজন নেই৷রিজভীর কয়েক ঘনিষ্ঠ জনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, শীতের গভীর রাতে হাসপাতালের কেবিনের দরজার বাইরে গোয়েন্দা পুলিশের কয়েকজন সদস্য ঘুমিয়ে থাকার ফাঁকে বেরিয়ে যান তিনি৷বিএনপির ৫ জানুয়ারির কর্মসূচি নিয়ে উত্তেজনার মধ্যে গত শনিবার রাত ১২টার দিকে নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে অসুস্থ রিজভীকে তুলে নিয়ে অ্যাপোলো হাসপাতালে ভর্তি করে গোয়েন্দা পুলিশ৷