666_48889

দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ৩ জানুয়ারি: ব্যাংক খাতের জন্য এক কলঙ্কিত বছর ছিল ২০১৪ সাল৷ বিশ্লেষকরা মনে করেন, চট্টগ্রামে ব্যবসায়ীদের হাজার হাজার কোটি টাকা লুটের ঘটনা উন্মোচন, সরকার মনোনীত পরিচালকের সহযোগিতায় বেসিক ব্যাংকের সাড়ে পাঁচ হাজার কোটি টাকা লুট, সুড়ঙ্গ কেটে ব্যাংকের ভল্ট থেকে টাকা লুট,কেন্দ্রীয় ব্যাংককে পাত্তা না দিয়ে বেসরকারি ব্যাংকগুলো থেকে ঋণের নামে লুটের মহোত্‍সব, বছরজুড়ে আলোচনা-সমালোচনার কেন্দ্রে ছিলো এসব৷ পাশাপাশি ছিলো বিনিয়োগে স্থবিরতা আর লাগামহীন খেলাপি ঋণ৷ তবে ইতিবাচক দিক হলো রিজার্ভ বেড়েছে৷

২০১৪ সালের ১ লা জানুয়ারী৷ এক দিকে তত্‍কালীন বিরোধীদলীয় নেতার রোড ফর ডেমোক্রেসির ডাক অপরদিকে ক্ষমতাসীনদের ৫ জানুয়ারী নির্বাচনের ঘোষণা- দেশজুড়ে জ্বালাও পোড়াও আর অবরোধের রাজনীতি৷ সব মিলিয়ে ছিল চরম উত্‍কন্ঠার পরিবেশ৷ যার রেশ ছিল অর্থনীতিতে৷ বছর ঘুরতে না ঘুরতেই খেলাপি ঋনের পরিমান এক লাফে বেড়ে দাড়ায় প্রায় ১৭ হাজার কোটি টাকা৷

বিনিয়োগের অন্যতম শর্ত রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা৷ অস্থিতিশীল পরিবেশের কারণে থমকে দাড়ায় বিনিয়োগের চাকাও৷ ফলে চাহিদার অভাবে বিপুল পরিমান অলস অর্থ ব্যাংকের হাতে৷ পরিমান প্রায় ২৮ হাজার কোটি টাকা৷২০১৩ সালে রেমিট্যান্সের উচ্চ প্রবৃদ্ধি ধরে রাখা যায়নি ২০১৪ তে৷ নভেম্বর পর্যন্ত দেশে রেমিট্যান্স এসেছে ১ হাজার ৩শ ৬৫ কোটি ডলার৷ ২০১৩ সালের একই সময়ে যার পরিমান ছিল ১ হাজার ২শ ৬২ কোটি৷ তবে, রিজার্ভ ছুয়েছে ২২ বিলিয়ন ডলারের রেকর্ড৷

তবে সব কিছুকেই ছাপিয়ে যায় ব্যাংকখাতের দুর্নীতির নানা খবর৷ রাজধানী নয়, চট্টগ্রামের বড় বড় গ্রুপগুলো হাতিয়ে নেয় প্রায় ১১ হাজার কোটি টাকা৷ তত্‍কালীন পরিচালনা পর্ষদের যোগসাজশে নজিরবিহীন অনিয়মের মাধ্যমে বেসিক ব্যাংক থেকে প্রায় সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকা লুটের ঘটনা পুরো বছর জুড়েই ছিলো আলোচনায়৷ আর যারা কাগজ কলমে সিদ্ধহস্ত নয়, তারা বেছে নেয় সুড়ঙ্গ খুড়ে কিংবা ভল্ট ভেঙ্গে টাকা লুট৷ বিশ্লেষকরা মনে করেন, ২০১৪ সাল ছিল ব্যাংকখাতের জন্য কলংকের বছর৷

তবে এসব ঘটনার মধ্যে অর্জন ছিলো অনেক৷ রিজার্ভের অনন্য উচ্চতা, বছর শেষে রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাংকগুলোর পুনর্গঠন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকসহ ব্যাংকখাতের আধুনিকায়ন উল্লেখযোগ্য৷কুয়াশার চাদরে মুড়ি দিয়ে পঞ্জিকার নতুন বছর ২০১৫ যাত্রা হলো শুরু৷ আগের বছরের কলংক আর ব্যর্থতার গ্লানি মুছে নতুন বছরটি হবে ব্যাংকখাতের সফলতার- এমন প্রত্যাশাই করছে সবাই৷