দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ২ জানুয়ারি: সিরিয়ায় চার বছর ধরে চলমান সংঘাতে ২০১৪ সালেই সবচেয়ে বেশি সংখ্যক মানুষ নিহত হয়েছেন বলে দেশটির গৃহযুদ্ধ পর্যবেক্ষণকারী একটি গ্রুপ জানিয়েছে৷শুক্রবার বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, যুক্তরাজ্যভিত্তিক সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস বলছে, গত বছর সিরিয়ায় ৭৬ হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন৷ তাদের মধ্যে ১৭ হাজার ৭৯০ জন বেসামরিক, যাদের তিন হাজার ৫০১ জনই শিশু৷
এদিকে ২০১৪ সালে ইরাকে সহিংসতায় ১৫ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন৷ ২০০৭ সালের পর সহিংসতায় দেশটিতে এ বছরই সবচেয়ে বেশি সংখ্যক মানুষ প্রাণ হারিয়েছে৷ মধ্যপ্রাচ্যের এ দুই দেশে সহিংসতায় প্রাণহানি বাড়ার জন্য উগ্রপন্থী গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের (আইএস) উত্থানকে দায়ী করা হচ্ছে৷ সিরিয়ায় সরকারি বাহিনী ও বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে লড়াইরত আইএসকে লক্ষ্য করে যুক্তরাষ্ট্রের বিমান হামলা এবং ইরাকে গোষ্ঠীগত দাঙ্গাও নিহতের সংখ্যা বাড়িয়েছে৷গত অগাস্টে জাতিসংঘ জানায়, ২০১১ সালে সিরিয়ায় শুরু হওয়া সংঘাতে মোট এক লাখ ৯১ হাজার মানুষ নিহত হয়েছে বলে তাদের ধারণা৷তবে নিহতের সংখ্যা আরো অনেক বেশি বলে যুদ্ধ পর্যবেক্ষণকারী বিভিন্ন গ্রুপ বলে আসছে৷
গত বছর সিরিয়ায় নিহতের সংখ্যা সম্পর্কে নিরপেক্ষ কোনো উত্স থেকে নিশ্চিত হওয়া যায়নি৷ তবে বৃহস্পতিবার সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস বলেছে, সারা দেশ থেকে সংগ্রহ করা তথ্যের ভিত্তিতে তারা এ পরিসংখ্যান দিয়েছেন৷তারা বলেছে, ২০১৪ সালে ৭৬ হাজার ২১ জন নিহত হয়েছেন৷ আগের বছর নিহত হন ৭৩ হাজার ৪৪৭ জন৷ ২০১৪ সালে নিহতদের মধ্যে অন্তত ২২ হাজার ৬২৭ জন প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের অনুগত সেনা সদস্য বা তার সমর্থক৷জঙ্গি গোষ্ঠী আইএস ও আল-নুসরা ফ্রন্টের প্রায় ১৭ হাজার জন এ সময় নিহত হয়েছেন৷ আর বিভিন্ন ইসলামী গোষ্ঠী ও বাশারবিরোধী বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর ১৫ হাজারের বেশি যোদ্ধা নিহত হয়েছেন৷সংঘাতে প্রাণ হারিয়েছেন ১৭ হাজার ৭৯০ জন সাধারণ মানুষ৷
একই দিন ইরাক সরকার ২০১৪ সালে দেশটিতে সহিংসতায় হতাহতের সংখ্যা প্রকাশ করেছে৷এ বছর সংঘাতে ১৫ হাজার ৫৩৮ জন নিহত এবং ২২ হাজারের বেশি মানুষ আহত হয়েছেন বলে তারা জানিয়েছে৷তবে ইরাকভিত্তিক এনজিও ইরাক বডি কাউন্ট নিহতের সংখ্যা ১৭ হাজার ৭৩ জনের কথা বলেছে৷ সংস্থাটি বলেছে, স্থলে নতুন ববর্রতা এবং পুনরায় আকাশ হামলায় হাজারো মানুষ হতাহত হয়েছেন৷ এছাড়া যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন বিমান হামলায়ও অনেক বেসামরিক মানুষ নিহত হয়েছেন৷বছরের শুরুর দিকে আইএসের কাছে পশ্চিম ইরাকের ফাল্লুজা ও রামাদির অংশ বিশেষের নিয়ন্ত্রণ হারায় সরকারি বাহিনী৷এরপর জুনে আইএসের প্রচণ্ড আক্রমণে দ্বিতীয় নগরী মসুলসহ ইরাকের উত্তরাঞ্চলের ব্যাপক অংশের নিয়ন্ত্রণ চলে যায় জঙ্গিদের কাছে৷