দৈনিকবার্তা–ঢাকা, ৩১ ডিসেম্বর : বৃহস্পতিবার থেকে শুররু হচ্ছে ইংরেজি নববর্ষ ২০১৫৷ ২০১৪ সালের শেষ দিন বুধবার৷ রাত বারোটা এক মিনিট পরেই শুরু হবে ইংরেজি নববর্ষকে সাদর সম্ভাষন জানানোর ক্ষণ৷ উন্মোচিত হবে নববর্ষকে স্বাগত জানানোর পর্দা৷ দেশ ও দেশের বাইরের লোক জন এসময় সমস্বরে উচচারণ করবেন ‘ হ্যাপি নিউ ইয়ার ৷ নতুন প্রত্যাশা আর স্বপ্নে উদ্ভাসিত নতুন বছর ২০১৫৷
নানা উত্সব আয়োজনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বের মানুষ স্বাগত জানাবে খ্রিস্টীয় নতুন বছর ২০১৪কে৷ মেতে উঠবে নতুন বছরের আগমনী উল্লাসে৷গত বছরের প্রত্যাশা আর প্রাপ্তির হিসাব খুঁজতে খুঁজতে নতুন বছরকে সামনে রেখে আবর্তিত হবে নতুন নতুন স্বপ্নের৷বাংলাদেশে ইংরেজি নববর্ষ পালনের ধরণ বাংলা নববর্ষ পালনের মত ব্যাপক না হলেও এ উত্সবের আন্তর্জাতিকতার ছোঁয়া থেকে বাংলাদেশের মানুষও বিচ্ছিন্ন নয়৷এ উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিরোধীদলীয় নেতা ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া পৃথক বাণী দিয়েছেন ৷
নানা কারণেই বিদায়ী বছর ২০১৪ ছিল ঘটনাবহুল৷ দেশীয়-আনত্মর্জাতিক রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে বিদায়ী এই একটি বছরে ছয় শীর্ষ যুদ্ধাপরাধীর বিচারের রায় ঘোষিত হয়েছে৷ ছয় জনের বিরুদ্ধেই ঘোষিত হয়েছে সর্বোচ্চ শাসত্মি মৃতু্যদন্ডের রায়৷ এরা হচেছ- আলবদর প্রধান মতিউর রহমান নিজামী, মীর কাশেম আলী, জাহিদ হোসেন খোকন ওরফে খোকন রাজাকার, মোবারক হোসেন, সৈয়দ মোহাম্মদ কায়সার ও এটিএম আজহারুল ইসলাম৷ সে কারণে বাঙালী জাতিকে কলঙ্কমুক্ত এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে শাণিত করার বছরটিও ছিল ২০১৪ ৷জাতীয় জীবনে ও রাজনীতির ইতিহাসে এক অভিনব অধ্যায়ের যোগ হয় এই বছরটিতে৷ গণতন্ত্রকে হত্যা করে অসাংবিধানিক শাসন প্রতিষ্ঠার যে সুগভীর ষড়যন্ত্র শুরম্ন হয়েছিল বিদায়ী বছরের শুরম্নতে সেই ষড়যন্ত্র-চক্রানত্ম আর ভয়াল নাশকতার পথ পেরিয়ে ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্রের নবযাত্রার শুভ সূচনা আর জনমনে শানত্মি স্বসত্মি ফিরিয়ে দিতে সমর্থ হয়েছিল ২০১৪ সাল৷
বিশিষ্ট নাগরিকরা বলেছেন বিদায়ী বছরে নিশ্চিত অসাংবিধানিক শাসনের হাত থেকে মুক্তি পেয়েছিল বাঙালী জাতি৷ মোটামুটি স্থিতিশীল ও শানত্মিপূর্ণ রাজনৈতিক পরিবেশ রেখেই বিদায় নিচ্ছে ২০১৪ সাল৷৫ জানুয়ারির নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দেশব্যাপী যে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি বিশেষ করে বিএনপি-জামায়াত জোট দেশজুড়ে যে ভয়াল নাশকতা, ধ্বংসযজ্ঞ, নৃশংসভাবে মানুষ হত্যা, লাগাতার অবরোধ-হরতালের নামে ব্যাপক সহিংসতা চালিয়ে পুরো দেশকেই চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে ঠেলে দিয়েছিল তা দৃঢ়তার সাথে মোকাবেলা করে শানত্মি ফিরিয়ে আনা ছিল একটি বড় চ্যালেঞ্জ৷ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাহসী ও দৃঢ় নেতৃত্ব সেই চ্যলেঞ্জ মোকাবেলা করে দেশে গনতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছে৷
বিদায়ী বছরে অন্যতম বড় অর্জন হচ্ছে গ্লোবাল সাউথ সাউথ ডেভেলপমেন্ট এক্্রপো-২০১৪ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ভিশনারী এ্যাওয়াডপ্রদান করা৷এছাড়া কমনওয়েলথ পার্লামেন্টারি এ্যাসোসিয়েশন (সিপিএ) ও ইন্টার পার্লামেন্টারি ইউনিয়নের (আইপিও) নির্বাচনে বাংলাদেশের দুই প্রার্থী স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী ও সংসদ সদস্য সাবের হোসেন চৌধুরীর বিজয়৷ ১৮৮টি দেশের নির্বাচিত প্রতিনিধিরা তাদের ভোট দিয়ে বিজয়ী করেছেন৷এছাড়াও ইন্টারন্যানাল মোবাইল স্যাটেলাইট অর্গানইজেশনের মহাপরিচালক এবং হিউম্যান রাইটস কাউন্সিল ও ইন্টারন্যাশনাল টেলি কমিউনিক্যাশন ইউনিয়নের নির্বাচনে বিজয়ী হযেছে বাংলাদেশ৷
বিদায়ী বছরে উন্নয়ন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা৷দেশী-বিদেশী নানা ষড়যন্ত্র, চক্রানত্ম, বিশ্ব মন্দার মধ্যেও দেশের অর্থনীতিকে অতীতের যে কোন সময়ের তুলনায় শক্ত ভিতের ওপর দাঁড় করিয়েছেন তিনি৷
শুধু তাই নয় অনেকে মনে করেন সবদিক থেকে এগিয়ে যাচেছ বাংলাদেশ৷ দুর্নীতি-সন্ত্রাস-জঙ্গীবাদের তকমা মুছে ফেলে সারাবিশ্বে বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের রোল মডেল৷ কৃষি, অর্থনীতি, শিক্ষা, সাহিত্য, সংস্কৃতি, রাজনীতিসহ সার্বিক প্রেক্ষাপটে নতুন বছরের অনেক প্রত্যাশার বীজও বনে গেছে বিদায়ী বছরটি৷
৫ জানুয়ারির নির্বাচন প্রতিহত করতে অনির্দিষ্টকালের অবরোধ কর্মসূচি পালনের মধ্য দিয়ে ২০১৪ সালটি শুরু করেছিল বিএনপি৷ বছরের প্রথম দিন বুধবার সারাদেশে সড়ক, নৌ ও রেলপথ অবরোধ কর্মসূচি পালন করে দলটি৷ কিন্ত শেষ পর্যন্ত নির্বাচন প্রতিহত করতে পুরোপুরি ব্যর্থ হয় তারা৷
এদিকে নির্বাচন প্রতিহত করার নামে আসলে শীর্ষ যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বাধাগ্রস্ত করতে দেশব্যাপী জামায়াতে ইসলামীর চালানো নজিরবিহীন সহিংসতা চালায়৷ স্বাধীনতাবিরোধী এই দলটির নৈরাজ্য ও ভয়াবহ সহিংসতার পরিপ্রেক্ষিতে তাদের সঙ্গে সম্পর্কচ্ছেদ এবং সহিংস কর্মসূচি থেকে বিরত থাকতে বিভিন্ন মহল থেকে ব্যাপক চাপের মুখে পড়ে বিএনপি৷ চাপের মুখে অবশেষে ১৩ জানুয়ারি হঠাত্ই আন্দোলন কর্মসূচি অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করেন খালেদা জিয়া৷
এর আগে ৫ জানুয়ারির নির্বাচনকে সামনে রেখে তা প্রতিহত করতে এবং নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়কের অধীনে নির্বাচন দিতে সরকারকে বাধ্য করতে মার্চ ফর ডেমোক্রেসি (২৯ ডিসেম্বর ২০১৩) কর্মসূচি ছিলো বিএনপির সর্বশেষ প্রচেষ্টা৷ সেটিও যখন আর সফল হলো না তখন অগত্যা আন্দোলনে হাল ছেড়ে দেয় দলটি৷
ওই সময় বিএনপির হাইকমান্ড উপলব্ধি করেন, তত্ত্বাবধায়কের দাবিতে ২০১১ সাল থেকে চালিয়ে আসা আন্দোলনে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তৃণমূল নেতা-কর্মীরা৷ সহিংসতার অভিযোগে বিভিন্ন মামলায় গ্রেপ্তার ও গ্রেপ্তারের ভয়ে বাড়ি-ঘর ছেড়ে পালিয়ে বেড়ানো নেতা-কর্মীদের ঘরে ফেরানো এবং তাদের গুটিয়ে যাওয়া ব্যবসা-বাণিজ্য পুনরায় চালুর সুযোগ করে দিতে আপাতত আন্দোলনে বিরতি দিতেই হবে৷
সে কারণে ঈদুল ফিতরের পর কঠোর আন্দোলন শুরুর ফাঁকা আওয়াজ দিলেও বাস্তবে শেষ পর্যন্ত অবস্থান বদলায় বিএনপি৷এ সময় ইস্যুভিত্তিক কর্মসূচি দিয়ে ধীরে চলো নীতি গ্রহণ করে বিএনপি৷ কিন্তু সরকারের কঠোর ও অনড় অবস্থানের কারণে ২০ জানুয়ারির পর একাধিকবার চেষ্টা করেও ঢাকায় জনসভা করতে পারেননি খালেদা জিয়া৷
বছরের শেষদিকে এসে সর্বশেষ ভরসা কূটনীতিতেও প্রচণ্ড রকম ধাক্কা খায় বিএনপি৷ ডিসেম্বরে ঢাকা সফরে এসে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের দক্ষিণ এশিয়া সম্পর্ক বিষয়ক কমিটির চেয়ারপারসন জিন ল্যাম্বার্ট সাফ জানিয়ে দেন নতুন নির্বাচনের কথা বলবে না ইউরোপীয় পার্লামেন্ট৷ বরং পরবর্তী নির্বাচন পদ্ধতি কী হবে তা নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সংলাপের তাগিদ তুলে ধরেছে৷বিদায়ী মার্কিন রাষ্ট্রদূত বিএনপির সুহৃদ বলে পরিচিত ড্যান ডবি্লউ মজিনা, কানাডীয় হাই কমিশনার হিদার ক্রুডেন এবং বহু দেন দরবার করে নিয়ে আসা দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিশা দিশাই বিসওয়াল বিএনপিকে ধৈয্র্ ধারণের পরামর্শটুকুই কেবল দিয়ে গেছেন৷ কাজের কাজ কিছুই হয় নি তাতে৷
আন্দোলনে নেতা-কর্মীদের পিঠ বাঁচিয়ে চলা, কূটনৈতিক ব্যর্থতা, জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করতে না পারা, স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তি জামায়াতের সঙ্গে সম্পর্ক অটুট রাখায় মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী রাজনৈতিক দল ও জনগণের বিরাট অংশকে কাছে টানতে না পারাসহ নানা কারণে বিএনপি কেবলই ধুঁকেছে৷ আর ঠিক সে সময়ই মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা হয়ে আসে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও মুক্তিযুদ্ধের মহানায়ক জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সম্পর্কে দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেওয়া রুচিহীন, উদ্ভট, কাণ্ডজ্ঞানহীন, নোংরা ও অমার্জনীয় বক্তব্য৷
হাজার বছরের শ্যেষ্ঠ বাঙালি বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সম্পর্কে আপত্তিকর কটূক্তি করে এবং বাংলাদেশ রাষ্ট্রের অভ্যুদয় সম্পর্কে ঔদ্ধত্বপূর্ণ বক্তব্য দিয়ে বিএনপিকে আরো বেশি বিপাকে ফেলে দেন তারেক রহমান৷
এর জের ধরে ফলশ্রুতিতে বছরের একেবারে শেষ দিকে এসে গাজীপুরের জনসভা থেকে পিছু হটতে হয় বিএনপিকে৷সুতরাং বলা যায়, ৫ জানুয়ারির নির্বাচন ঠেকানোর ব্যর্থতা দিয়ে শুরু হয়েছিলো বিএনপির ২০১৪৷ আর শেষ হয় ২৭ ডিসেম্বর গাজীপুর জনসভা থেকে পিছু হটে৷নানা উত্সব আয়োজনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বের মানুষ স্বাগত জানাবে খ্রিস্টীয় নতুন বছর ২০১৪কে৷ মেতে উঠবে নতুন বছরের আগমনী উল্লাসে৷
গত বছরের প্রত্যাশা আর প্রাপ্তির হিসাব খুঁজতে খুঁজতে নতুন বছরকে সামনে রেখে আবর্তিত হবে নতুন নতুন স্বপ্নের৷বাংলাদেশে ইংরেজি নববর্ষ পালনের ধরণ বাংলা নববর্ষ পালনের মত ব্যাপক না হলেও এ উত্সবের আন্তর্জাতিকতার ছোঁয়া থেকে বাংলাদেশের মানুষও বিচ্ছিন্ন নয়৷
বাণীতে রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ ইংরেজি নববর্ষ উপলক্ষে দেশবাসী ও প্রবাসী বাংলাদেশিদের আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান৷তিনি বলেন, নববর্ষ উদ্যাপন আমাদের জাতীয় সংস্কৃতির একটি উল্লেখযোগ্য দিক৷ ইংরেজি বর্ষপঞ্জিকা আমাদের প্রাত্যহিক জীবনে বহুল ব্যবহৃত হওয়ায় তা সকলকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করে৷ পুরাতন বছরের ব্যর্থতা ও গ্লানিকে পেছনে ফেলে নব উদ্যমে আমরা সোনালি ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে যাব এ হোক আমাদের অঙ্গীকার৷ ইংরেজি নববর্ষ ২০১৫ আমাদের ব্যক্তিগত ও জাতীয় জীবনে অগ্রগতি ও সমৃদ্ধি বয়ে আনুক-এ প্রত্যাশা করি৷বাণেিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইংরেজী নববর্ষ উপলক্ষে দেশবাসী, প্রবাসী বাঙালিসহ বিশ্ববাসীকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানান৷প্রধানমন্ত্রী মুক্তিযুদ্ধের আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে ক্ষুধা- দারিদ্র্যমুক্ত, অসাম্প্রদায়িক, সমৃদ্ধ ও শান্তিপূর্ণ বাংলাদেশ গড়ে তোলার আহবান জানান৷তিনি দেশবাসীর উদ্দেশ্যে বলেন, ‘আসুন আমরা সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের ‘সোনার বাংলা’ প্রতিষ্ঠা করি৷নতুনের আহ্বানে পুরাতন বছরের সব জঞ্জাল ধুয়ে-মুছে যাক৷ নতুন বছর আমাদের সবার জীবনে অনাবিল সুখ, সমৃদ্ধি ও শান্তি বয়ে আনুক৷
তিনি বলেন, দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন, সংবিধান ও গণতান্ত্রিক ধারা রক্ষা এবং জাতিকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত করার ক্ষেত্রে ২০১৩ সাল বাঙালি জাতির ইতিহাসে একটি গৌরবোজ্জ্বল বছর৷ সাথে সাথে তিনি বিগত একবছরে জাতির বিভিন্ন গৌরবোজ্জ্বল মহান অর্জনগুলোও বাণীতে তুলে ধরেন৷
এছাড়া খৃষ্টীয় নববর্ষ উপলক্ষে বিএনপি চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া নিম্নোক্ত বাণী দিয়েছেন৷ বাণীতে তিনি বলেন,খৃষ্টীয় নববর্ষ উপলক্ষে আমি দেশবাসী এবং বিশ্ববাসী সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান৷ কামনা করি সকলের অব্যাহত সুখ, স্বাচ্ছন্দ, শান্তি ও সমৃদ্ধি৷ শুভ নববর্ষ৷খালেদা জিয়া বলেন, ১লা জানুয়ারী প্রতিবছর নতুন বার্তা নিয়ে আমাদের দ্বারে উপস্থিত হয়৷ পুরনো বছরের ব্যর্থতা, গ্লানি, হতাশাকে ঝেড়ে ফেলে নবউদ্যমে এগিয়ে যাওয়ার প্রেরণা যোগায় নববর্ষ৷ পাশাপাশি অতীতের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে সুন্দর ভবিষ্যত বিনির্মাণে তত্পর হতে পারলে নতুন বছরটি হয়ে উঠতে পারে সাফল্যময়৷
তিনি বলেন,গেল বছরটি এখন আমাদের মনে স্মৃতি হয়ে থাকবে৷ গত বত্সরের বেশকিছু তিক্ত অভিজ্ঞতা, সজন হারানোর বেদনা এবং অধিকার হারানোর যন্ত্রণা আগামী বত্সরে আমাদের একদিকে যমন বেদনার্ত করবে আবার অন্যদিকে নুতন উদ্যোমে এগিয়ে যেতে তাগিদ সৃষ্টি করবে৷ বাংলাদেশসহ বিশ্বময় সংঘাত আর অশান্তির ঘটনা প্রবাহে নতুন বছরটিকে গণতন্ত্র, শান্তি ও অগ্রগতির বছরে পরিণত করতে আমাদের সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে৷ বাংলাদেশে অজস্র রক্তঋণে অর্জিত গণতন্ত্র অপহৃত হয়েছে৷ গণবিরোধী শক্তি জনগণের সকল অধিকারকে বন্দী করে রেখেছে৷ এমতাবস্থায় সকল গণতান্ত্রিক শক্তির মিলিত সংগ্রামে বহুদলীয় গণতন্ত্রকে পূণ:রুদ্ধার করতে হবে৷
খালেদা জিয়া নতুন বছরটি সবার জীবনে বয়ে আনুক বিজয়, অনাবিল সুখ ও শান্তি, বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বে প্রবাহিত হোক শান্তির অমিয় ধারা, দূর হয়ে যাক সব অন্যায়-উত্পীড়ণ, নির্যাতন৷ বন্ধ হউক হত্যা, গুম, খুন, যুদ্ধ বিগ্রহ ও অমানবিকতাসহ সকল ধরণের দমনমুলক নৃশংসতা-নববর্ষের শুরুতে আমি এ কামনা করছি৷ হৃত গণতন্ত্র ও ভোটের অধিকার ফিরে পাওয়ার জন্য বাংলাদেশের সংগ্রামী মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার আহবান জানান৷
গত বছরটি এখন আমাদের মনে স্মৃতি হয়ে থাকবে৷ বেশকিছু অমলিন ঘটনা ও অভিজ্ঞতা আমাদের উজ্জল আলোক বর্তিকা৷ তারই আলোকে আমাদেরকে তৈরী করতে হবে আগামী বছরের চলার পথ৷ বাংলাদেশসহ বিশ্বময় সংঘাত আর অশানত্মির ঘটনা প্রবাহে নতুন বছরটিকে শানত্মি ও অগ্রগতির বছরে পরিণত করতে আমাদের সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে৷
নতুন বছরটি সবার জীবনে বয়ে আনুক অনাবিল সুখ ও শানত্মি, বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বে প্রবাহিত হোক শানত্মির অমিয় ধারা, দূর হয়ে যাক সব অশানত্মি, যুদ্ধ বিগ্রহ ও অমানবিকতা-নববর্ষের শুরুতে সাফল্য কামনা করেনবেগম খালেদা জিয়া ৷ এদিকে, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মত নতুন বছরকে বরণ করতে বাংলাদেশেও এবার অনেকে নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে৷ আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিবেচনা ও ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের বিধি নিষেধ মাথায় রেখেই এবার ইংরেজী নববর্ষ উদযাপনের উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে বলে বিভিন্ন মহল থেকে জানানো হয়েছে৷ তবে দেশের পাঁচ তারকা হোটেলগুলো এ উপলক্ষে বর্ণিল সাজে সজ্জিত করা হয়েছে৷ নানা আয়োজন নিয়ে তাদের প্রস্তুতিরও কমতি নেই৷
নববর্ষকে ঘিরে বিক্রির জন্য রং বেরং-এর নতুন ক্যালেন্ডার ও ডায়েরিতে ছেয়ে গেছে বিভিন্ন বিপণি বিতানের প্রাঙ্গণ৷প্রিয়জনকে নববর্ষের শুভেচ্ছা জানাতে কার্ডের শো-রুমগুলোতে ক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে৷
দেশ-বিদেশে অবস্থানরত বন্ধু-বান্ধব ও প্রিয়জনদের আগামী বছরের মঙ্গল কামনা করে শুভেচ্ছা বার্তা পাঠানো শুরু হয়ে গেছে ফেসবুক, টুইটার ও মোবাইলের এসএমএস’এর মাধ্যমে৷বর্ষবরণ উপলক্ষে বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনও শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে বিবৃতি প্রদান করেছে৷ রেডিও টেলিভিশন নববর্ষকে স্বাগত জানিয়ে নানা অনুষ্ঠান মালা প্রচার করেছে৷থার্টিফাস্ট নাইটে সার্বিক নিরাপত্তা ও আইন-শৃঙ্খলার স্বার্থে রাস্তার মোড়, ফ্লাইওভারে কোনো জমায়েত বা জনসমাবেশ করা যাবে না৷ একইসঙ্গে কোনো অনুষ্ঠান করা যাবে না উন্মুক্ত স্থানে৷খ্রিস্টীয় নববর্ষের প্রথম প্রহরে উত্সব আনন্দ ঘিরে রাজধানীতে যে কেনো ধরনের বিশৃঙ্খলা ঠেকাতে সতর্ক থাকবে পুলিশ৷
মঙ্গলবার ঢাকা মহানগর পুলিশের গণমাধ্যম কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ কমিশনার বেনজীর আহমেদ বলেন, ৩১ জানুয়ারি রাতে পুলিশ ক্যামেরা নিয়ে নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করবে৷ রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় বসবে চেকপোস্ট, থাকবে পুলিশের টহলও৷
নগরবাসীর উদ্দেশে তিনি বলেন, সেদিন রাত ৮টার পর হাতিরঝিল এলাকায় কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না৷ গুলশান, বারিধারা, বনানী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় রাত ১২টার পর কোনো বহিরাগত ব্যক্তি অবস্থান করবেন না৷নববর্ষ উদযাপনে উন্মুক্ত স্থানে নাচগান বা কনসার্ট করার ক্ষেত্রেও থাকবে নিষেধাজ্ঞা৷ বাণিজ্যিক বারগুলো সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে বন্ধ করে দিতে হবে৷ বেনজীর আহমদ জানান, হাতিরঝিল এলাকায় রাত ৮টার পরে কেউ ঢুকবেন না৷ আতশবাজি ফোটানো যাবে না, ওভার স্পিডে গাড়ি চালানো যাবে না৷ গির্জা ও চার্চে থাকবে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা৷ পোশাকের পাশাপাশি সাদা পোশাকেও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা নিয়োজিত থাকবেন বলেও জানান তিনি৷