দৈনিকবার্তা–ঢাকা, ৩০ ডিসেম্বর: দেশের কোনো মানুষ এখন শান্তি ও নিরাপদে নেই৷ স্বাধীনতার পরবর্তী সময়ে যেভাবে মানুষের মুখ বন্ধ করতে খুন, গুম, হত্যা ও মিডিয়া বন্ধ করা হয়েছিল৷ ঠিক একইভাবে আবারও খুন, গুম ও হত্যা শুরু করেছে সরকার৷ এখন যা করছে তা ৭১-এর চেয়েও ভয়াবহ৷মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে লেবার পার্টির কাউন্সিল উপলক্ষে আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ফখরুল এ কথা বলেন৷এসময় আওয়ামী লীগ নেতাদের জন্মের উত্স (অরিজিন) নিয়েও প্রশ্ন তোলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল৷
মির্জা ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগের নেতাদের মুখের ভাষা শুনলে মনে হয় তারা একেকজন মানসিক বিকারগ্রস্ত৷ কেউ নেড়ি কুত্তার মতো পেটাতে চায়, কেউ হাত-পা ভেঙে দিতে চায়, কেউ চামড়া তুলে নিতে চায়৷সরকারের সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল অভিযোগ করেন, বর্তমান সরকার যা করছে, তা পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকেও হার মানাচ্ছে৷ তাঁর দাবি, সরকার প্রতিনিয়ত ইতিহাস বিকৃত করছে৷ মিথ্যা বলে মানুষকে বিভ্রান্ত করছে৷
মির্জা ফখরুল জানান, দেশ অত্যন্ত কঠিন সময় পার করছে৷ স্বাধীনতার ৪৩ বছরে অনেক চড়াই-উতরাই হয়েছে৷ ক্ষমতার পালাবদল হয়েছে৷ কিন্তু এখনকার মতো এত কঠিন সময় কখনো পার করতে হয়নি৷তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ জবর দখল করে ক্ষমতায় থাকতে চায়৷ এ জন্য বিরোধী পক্ষকে ঘায়েল করতে নানা কৌশল অবলম্বন করছে৷ খুন, গুম ও মিথ্যা মামলা দিয়েই শুধু শান্ত হয়নি৷ বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে অশ্লীল ভাষায় কথা বলছেন ও কুত্সা রটাচ্ছেন আওয়ামী লীগ নেতারা৷ আওয়ামী লীগ এখন যা করছে তা পাকিস্তান হানাদার বাহিনীকেও হার মানাচ্ছে৷
ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগ নেতারা যে ভাষায় কথা বলেন তার কী জবাব দেবো? তাদের ভাষা শুনলে বোঝা যায় তাদের অরিজিন কোথায়৷ তারা কোথা থেকে এসেছেন৷
প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের একটি উদ্ধৃতি দিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপি জনপ্রিয়তা যাচাই করতে যেকোন প্রেতিযোগিতা মোকাবেলায় প্রস্তত৷ আওয়ামী লীগ জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে ভয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিল করে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন দিয়ে জোর করে ক্ষমতা ছিনিয়ে নিয়েছে৷
বিএনপির জনসমর্থন আছে কি-না প্রমাণ করতে তত্ত্বাবধায়ক সরেকারের অধীনে নির্বাচন দিয়ে যাচাই করে দেখুন বলেও মন্তব্য করেন ফখরুল৷ তিনি বলেন, আপনাদের অবস্থা কী হয় দেখুন৷ জনগণ আপনাদের প্রত্যাখান করবে৷জোর করে ক্ষমতায় থাকা দানব সরকারকে সরাতে হলে শক্তভাবেই এদেরকে ধাক্কা দিতে হবে৷ না হলে এদের সরানো যাবে না৷
লেবার পার্টির ঢাকা মহানগরের আহবায়ক মো. শামসুদ্দিন পারভেজের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেন, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরানসহ অন্যান্যরা৷
মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে জিয়াউর রহমানের কবরে শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, বৃহত্তর আন্দোলনের লক্ষ্যে কৌশলগত কারণে বিএনপি গাজীপুরে সমাবেশ করা থেকে পিছু হটেছিল বলে মন্তব্য করেন ৷কৃষক দলের টওতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সংগঠনের নেতা-কর্মীদের নিয়ে জিয়াউর রহমানের কবরে শ্রদ্ধা জানান বিএনপির এই নেতা৷
গত শনিবার গাজীপুরে জনসভা করার ঘোষণা দিয়েছিল বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০-দলীয় জোট৷ ছাত্রলীগও এই দিন একই জায়গায় সমাবেশ করার ঘোষণা দেয়৷
বিএনপি বলেছিল, যেকোনো মূল্যে তারা সমাবেশ করবে৷ পাল্টা-সমাবেশের ঘোষণার পরিপ্রেক্ষিতে গাজীপুরে ১৪৪ ধারা জারি করে টওশাসন৷ পরে সমাবেশ থেকে পিছু হটে গাজীপুরে হরতাল ও সারা দেশে বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করে বিএনপি৷ এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে মির্জা ফখরুল বলেন, আন্দোলনের বিভিন্ন পর্যায় আছে, কৌশল আছে, স্তর আছে৷ একটি রাজনৈতিক দল তার এসব কৌশল নিয়েই কাজ করে৷ সব সময় আপনারা যেভাবে ভাবেন, সেভাবে না-ও হতে পারে৷ কৌশলের কারণ বিভিন্ন রকম হতে পারে৷ বৃহত্তর আন্দোলনের জন্য কৌশলগতভাবে সেদিনকার সিদ্ধান্ত হয়েছে৷