দৈনিকবার্তা-কলাপাড়া, ২৮ ডিসেম্বর: কুয়াকাটার দৃশ্যপট হঠাত্ করে উল্টোদিকে ধাওয়া করছে৷ থার্টি ফাস্ট নাইটের প্রস্তুতি ভেসত্মে যাওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে৷ আয়োজকরাও পড়েছেন চরম বিপাকে৷ হোটেল-মোটেলসহ ব্যবসায়ীদের চোখ-মুখ হতাশায় ফ্যাকাশে হয়ে গেছে৷ গতকাল ও আজ সোমবারের অনত্মত ৪০০ কৰের বুকিং বাতিল হয়ে গেছে৷ তিনদিন আগেও ব্যবসায়ীদের চোখে-মুখে ছিল ব্যবসায় সফলতার স্বপ্ন৷ বিএনপিসহ ২০ দলীয় জোটের ডাকা আজকের (২৯ ডিসেম্বর) হরতালে সব যেন শেষ হয়ে গেছে৷ কুয়াকাটার হাজারো ব্যবসায়ীদের বাড়া ভাতে যেন ছাই পড়ল৷
রবিবার দুপুরের পর থেকে কুয়াকাটা ছেড়েছে হাজার হাজার পর্যটক৷ খালি হয়ে গেছে অধিকাংশ হোটেল-মোটেল৷ ২৯ ডিসেম্বরের পরে ফের হরতাল কর্মসূচি আসতে পারে এমন শঙ্কায় আরেক দফা শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা৷ সারা বছরের লোকসান কাটাতে ডিসেম্বর থেকে ফেব্রম্নয়ারি মাস পর্যনত্ম অধীর আগ্রহে অপেৰায় থাকেন কুয়াকাটার হোটেল-মোটেলসহ সকল ব্যবসায়ীরা৷ গেল বছর পুরো মৌসুম বিএনপি-জামায়াতের হরতাল-ধংসের তান্ডব আর রাজনৈতিক অস্থিরতায় কুয়াকাটা পর্যটন এলাকার ব্যবসায়ীদের অবস্থা কাহিল হয়ে গেছে৷ লোকসানের বোঝায় এরা চরম শঙ্কায় পড়েন৷ এবছর রাজনৈতিক অস্থিরতা ছিল না, নবেম্বর থেকে পর্যটক-দর্শনাথর্ীর পদচারনা বাড়তে থাকে৷ যা ২৫ ডিসেম্বর থেকে তিনদিনে পুর্ণতা পায়৷ একইভাবে বুকিং থাকে ২০১৫ সালের প্রথম সপ্তাহ পর্যনত্ম৷ কিন্তু হঠাত্ করে আজকের হরতালে সব যেন ওলট-পালট হয়ে গেল৷ কুয়াকাটার আবাসিক হোটেল-মোটেল, খাবার হোটেল, ঝিনুক, কাপড়সহ বিভিন্ন ধরনের হাজার হাজার ব্যবসায়ীরা ফের যেন এক অজানা ৰতির শঙ্কায় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন৷
কুয়াকাটা পর্যটন হলিডে হোম্স ও ইয়থ-ইন এর ব্যবস্থাপক আজহারম্নল ইসলাম জানান, তাদের অনত্মত ১০টি কৰের রবিার রাত থেকে সোমবারের বুকিং বাতিল হয়ে গেছে৷ যারা রবিবার রাতে থাকতেন তারাও হরতালের কারণে বিকালে কুয়াকাটা ছেড়েছেন৷ হোটেল নীলঞ্জনার সুপার ভাইজর আকতার হোসেন জানালেন একই তথ্য৷ কুয়াকাটা হোটেল-মোটেল ওনার্স এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মোতালেব শরীফ জানান, তাদের সমিতির সদস্যভুক্ত ৩০টি নিয়ে অনত্মত অর্ধশত আবাসিক হোটেলের রবিবারের বুকিং বাতিল হওয়ায় গড়ে একেকটি হোটেলের কমপৰে অর্ধলৰ টাকার ৰতি হয়েছে৷ শুধু তাই নয় সোমবারের আগাম বুকিংও সব বাতিল হয়ে গেছে৷ একই বক্তব্য গ্রেভার-ইন, কুয়াকাটা ইন, বিশ্বাস-সী প্যালেস, বীচ হেভেন, সী-ভিউসহ সকল হোটেল কতর্ৃপৰের৷ খাবার হোটেল ‘খাবার ঘর’ এর ব্যবস্থাপক মোঃ সেলিম জানালেন, গত বছরের ব্যবসায়ীক লোকসান ঘোচাতে কেবল কিছুটা সামনে আগাচ্ছিলেন৷ কিন্তু ফের হরতালে আবার বড় ধরনের ধাক্কায় পড়েছেন৷ মোট কথা ঝিনুক, স্টেশনারী, ছোট ছোট খাবার হোটেল, চায়ের স্টল, সুটকির দোকান, হোন্ডা চালক, ফটোগ্রাফার, টু্যরিস্ট বোট মালিক, ভ্যান-রিঙ্াসহ অনত্মত হাজার হাজার বিভিন্ন পেশার মানুষ ফের ব্যবসা-বাণিজ্য নিয়ে হরতালের শঙ্কায় পড়েছেন৷ কুয়াকাটা পৌর-আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলহ্জ মনির আহম্মেদ ভুইয়া জানান, হরতালে কুয়াকাটায় কোন প্রভাব পড়ে না৷ কিন্তু দুর-দুরানত্ম থেকে বাসসহ যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকায় কোন পর্যটক আসতে পারছে না৷ কুয়াকাটায় থার্টি ফাস্ট নাইটের অনুষ্ঠান মালার আয়োজকদের পৰ থেকে দাবি করা হয়েছে অনত্মত পর্যটনকেন্দ্রের হাজারো ব্যবসায়ীদের জীবন-জীবিকার বিষয় বিবেচনায় রেখে আগামি ৫ জানুয়ারি পর্যনত্ম নতুন করে আর হরতাল না দেয়ার জন্য ২০ দলীয় জোটের নেতৃবৃন্দের কাছে অনুরোধ করেছেন৷ তাদের দাবি পুরনো বছরের বিদায় এবং নতুন বছরকে বরণকে কেন্দ্র করে পর্যটন নির্ভর ব্যবসাকে যেন পন্ড করে দেয়া না হয়৷