দৈনিকবার্তা-ঢাকা,২৮ ডিসেম্বর: যমুনা ও বসুন্ধরার মতো কোনো আবাসন নির্মাতা কোম্পানির সঙ্গে আপস না করে কুড়িল ফ্লাইওভারের পাশে লেক বানানোর নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা৷ কাউকে কোনো ছাড় না দিয়ে কুড়িল লেকের কাজ চালিয়ে যেতে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রতি নির্দেশ দিয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা৷
রোববার সকালে সচিবালয়ে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় পরিদর্শনে এসে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী, সচিব ও কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে দেওয়া বক্তৃতায় তিনি এ নির্দেশনা দেন৷প্রধানমন্ত্রী বলেন, কুড়িল ফ্লাইওভারের ওখানে যেখানে দুটো লেক করার কথা, জানি অনেক বাধা আছে ওখানে পুলিশের কিছু জায়গা পড়েছে, তারা বাধা দিতে পারে, তারপর যমুনা ও বসুন্ধরা- তাদেরও ঘোর আপত্তি রয়েছে৷ তবে এ আপত্তিতে কিছু আসে না৷
মূলপ্ল্যানে আছে দুটো লেক হবে৷ কাজেই এটা খুব দ্রুত করা দরকার৷ কারো আপত্তি মানার কোনো প্রয়োজন নেই বলে জানান প্রধানমন্ত্রী৷ শেখ হাসিনা বলেন, বিশাল জনগোষ্ঠীর উন্নত জীবনমানের কথা মাথায় রেখে সুষ্ঠু ও পরিকল্পিত ভূমি ব্যবস্থাপনার ওপর গুরুত্বারোপ প্রয়োজন৷
কুড়িল ফ্লাইওভারের পাশের ওই এলাকায় লেকের বদলে বঙ্ কালভার্ট করতে চাইছে যমুনা বা বসুন্ধরা গ্রুপ এ তথ্য জানার পর প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোথাও কোনো বঙ্ কালভার্ট হবে না৷ সব লেক হবে, ওপেন লেক হবে৷ দরকার হলে লেকের পাশ দিয়ে ব্রিজ করে নেবে তারা৷ তাদের পয়সার তো অভাব নাই৷
কারো আপত্তিতে কান না দিয়ে দ্রুত কাজ শেষ করতে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি৷প্রধানমন্ত্রী বলেন, কুড়িল ফ্লাইওভারের ওখানে যেখানে দুটো লেক করার কথা, আমি জানি অনেক বাঁধা আছে৷ ওখানে পুলিশের কিছু জায়গা পড়েছে তারা বাঁধা দেয়৷ তারপরে যমুনা ও বসুন্ধরা- তাদেরও ঘোর আপত্তি৷ তবে এই আপত্তিতে কিছু আসে না৷
মূল প্ল্যানে আছে দুটো লেক হবে৷ কাজেই এটা খুব দ্রুত করা দরকার৷ কারো আপত্তি মানার কোনো প্রয়োজন নাই৷
পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ এগিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ওই লেকের সঙ্গে সরাসরি নদীর যোগাযোগ থাকবে৷ বন্যা বা ভারী বৃষ্টির সময় ওই এলাকার পানি নিষ্কাশনের জন্যই ওই লেক জরুরি৷এর আগে গত ২৫ অগাস্ট মন্ত্রিসভার বৈঠকেও কুড়িল ফ্লাইওভার থেকে পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পগামী রাস্তার দুই পাশে লেক তৈরির ওপর জোর দেন প্রধানমন্ত্রী, যে লেকের সঙ্গে বালু নদীর সংযোগ থাকবে৷
১৮ সেপ্টেম্বর ভূমি মন্ত্রণালয় পরিদর্শনে গিয়ে তিনি জলাশয়ে সাইনবোর্ড টাঙিয়ে’ ভূমি দখলকারী আবাসন নির্মাতাদের ভূমিখেকো আখ্যায়িত করেন এবং এসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মন্ত্রণালয়কে শক্ত হতে কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন৷
তিনি বলেন, কুড়িল ফ্লাইওভারের পাশের ওই এলাকায় লেকের বদলে বঙ্ কালভার্ট করতে চাইছে যমুনা বা বসুন্ধরা গ্রুপ৷ কোথাও কোনো বঙ্ কালভার্ট হবে না৷ সব লেক হবে, ওপেন লেক হবে৷ দরকার হলে লেকের পাশ দিয়ে ব্রিজ করে নেবে তারা৷ তাদের পয়সার তো অভাব নাই৷
শেখ হাসিনা বলেন,কোনোমতেই এখানে কমপ্রোমাইজ করা যাবে না৷ কাজেই বিষয়টা আপনাদের দেখতে হবে এবং খুব তাড়াতাড়ি এটা শুরু করতে হবে৷বিভিন্ন সময়ে ঢাকার জলাধারগুলো নষ্ট করার তথ্য তুলে ধওে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মতিঝিলের এক সময় একটি ঝিল থাকলেও আইয়ুব খান সেটি বন্ধ করে দেন৷ পরে বিভিন্ন সরকারের সময়ে শান্তিনগর খাল, পান্থপথ খালসহ বিভিন্ন খাল বন্ধ করে দেয় অথবা বঙ্ কালভার্ট নির্মাণ করে৷
অথচ এই খালগুলি একটা শহরের শিরা উপশিরার মতো৷ আপনারা আমাদের একটা অনুরোধ রক্ষা করবেন, বঙ্ কালভার্ট যেন শহরের ভেতর আর না করা হয়৷সুযোগ থাকলে ঢাকার সব বঙ্ কালভার্ট তুলে দিয়ে খাল উদ্ধারের চেষ্টা করতেন বলেও প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন৷
সুযোগ থাকলে ঢাকার সব বঙ্ কালভার্ট তুলে দিয়ে খাল উদ্ধারের চেষ্টা করতেন বলেও প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন৷শহরের বিভিন্ন জায়গায় থাকা জলাধারগুলো যথাযথ সংরক্ষণের ওপর জোর দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিভাগীয় শহরগুলোতে মাস্টারপ্ল্যানের মাধ্যমে বস্তিবাসীসহ স্বল্পআয়ের মানুষের জন্য বাসস্থান তৈরি করতে হবে৷
আবাসিক এলাকায় হাসপাতালের বজর্্য ব্যবস্থাপনা বিষয়ে বিরোধিতা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাদেরকে নিজ দায়িত্বে বজর্্য ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে হবে৷
এ সময় তিনি শুধু ঐতিহ্য রক্ষার কথা না বলে ব্রিটিশ আমলের ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলো ভেঙে ফেলার ও কথা বলেন৷গত ২৫ আগস্ট মন্ত্রিসভার বৈঠকেও কুড়িল ফ্লাইওভার থেকে পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পগামী রাস্তার দুই পাশে লেক তৈরির ওপর জোর দেন প্রধানমন্ত্রী৷
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ঐতিহ্য রক্ষার নামে ব্রিটিশদের সব লাল দালান রক্ষার প্রয়োজন নেই৷ অপ্রয়োজনীয় ভাঙ্গা দালান টিকিয়ে রাখার কোনো অর্থ হয় না৷ স্বাধীন দেশে ব্রিটিশদের হেরিটেজ রক্ষার কোনও প্রয়োজন দেখিনা৷তিনি বলেন, ঐতিহ্য রক্ষার নামে ব্রিটিশ আমলের অপ্রয়োজনীয় ভাঙ্গা দালান বা তাদের অনেক জিনিস ধরে রাখার প্রবণতা দেখা যায়৷ দৃষ্টিনন্দন থাকলে, স্থাপত্য শিল্পের দিক পওয়োজন আছে এমন দু-একটা রাখা যেতে পারে৷ সব দালান ধরে রাখার কোনো যৌক্তিকতা নেই৷
কিসের হেরিটেজ? এমন প্রশ্ন তুলে প্রধানমন্ত্রী বলেন,ব্রিটিশরা আমাদের গোলামি করিয়েছে৷ এখন স্বাধীন দেশে তাদের হেরিটেজ রক্ষা করার কোনো প্রয়োজন আছে বলে আমি মনে করি না৷তাদের বিরুদ্ধেও আমাদের লড়াই করতে হয়েছে, সংগ্রাম করতে হয়েছে, রক্ত দিতে হয়েছে৷ এটাও মনে রাখতে হবে৷
তবে যেসব ভবনের স্থাপত্য শিল্পের গুন রয়েছে সেগুলো যাতে নষ্ট না হয় সেদিকে খেয়াল রাখার পরামর্শ দেন প্রধানমন্ত্রী৷
ঐতিহাসিক নির্দশনগুলো রক্ষার নির্দেশ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ঐতিহাসিক জায়গাগুলোতে একটা কিছু নির্মাণ করে ফেলা হয়, এটা ঠিক নয়৷ কোনো নির্মাণের আগে প্ল্যান করার সময় বিষয়টি খেয়াল রাখতে হবে৷
এ সময় গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনসহ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন৷ সূচনা বক্তব্যের পর প্রধানমন্ত্রী মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয়ে মতবিনিময় করেন৷
১৮ সেপ্টেম্বর ভূমি মন্ত্রণালয় পরিদর্শনে গিয়ে তিনি জলাশয়ে সাইনবোর্ড টাঙিয়ে ভূমি দখলকারী আবাসন নির্মাতাদের ভূমিখেকো আখ্যায়িত করেন এবং এসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মন্ত্রণালয়কে শক্ত হতে কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন৷