দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ২৭ ডিসেম্বর: তীব্র শীত আর ঘন কুয়াশায় বিপর্যস্ত রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলার জনজীবন৷পঞ্চগড়, কুড়িগ্রাম ও দিনাজপুরসহ উত্তরবঙ্গের বেশিরভাগ জেলায় দিনের অধিকাংশ সময়ই দেখা মিলছে না সূর্যের৷ উত্তরের হিমেল হাওয়ায় শীতের তীব্রতা আরও বাড়িয়েছে৷ প্রচণ্ড ঠাণ্ডায় দুর্ভোগে পড়েছেন বৃদ্ধ, শিশু আর ছিন্নমূল মানুষেরা৷ বাড়ছে শীতজনিত রোগের প্রকোপ৷
হাড় কাঁপানো শীতে কাজে যেতে পারছেন না দিনমজুররা৷ ঘন কুয়াশার কারণে বিঘি্নত হচ্ছে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া ও মাওয়া-কাওড়াকান্দি নৌরুটের ফেরি চলাচল৷তীব্র শীতের কারণে দুপুরের পরেই ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে হাটবাজারগুলো৷ ঘন কুয়াশায় সন্ধ্যার আগেই অন্ধকার হয়ে আসছে চারপাশ৷গত কয়েকদিন ধরেই সূর্যের দেখা মিলছে না পঞ্চগড়রসহ উত্তরবঙ্গের বেশ কয়েকটি জেলায়৷ কনকনে শীতে বেড়েছে গরম কাপড়ের বেচাকেনা৷ এদিকে, ঠাণ্ডার কারণে বাড়ছে কাশি, শ্বাসকষ্ট, নিউমোনিয়াসহ শীতজনিত নানা রোগের প্রকোপ৷
দেশের বিভিন্ন স্থানে গত কয়েক দিন যাবত শীত অনুভুত হচ্ছে৷ রংপুর ও রাজশাহী বিভাগসহ যশোর, কুষ্টিয়া, সাতৰীরা ও টাঙ্গাইল অঞ্চলসমূহের উপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারী ধরনের শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে৷ঘন কুয়াশা, সূর্যের আলো কম থাকা, উত্তরের ঠান্ডা বাতাস এবং সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রার ব্যবধান কমে যাওয়া শীতের অন্যতম কারণ৷আবহাওয়া অফিস জানায়, শীতের তীব্রতা আগামী ২ দিন থাকতে পারে৷ ঘন কুয়াশার কারণে সূর্যের আলো কম থাকায় বেশী শীত অনুভূত হচ্ছে৷ সূর্যের আলোর দেখা মিললে শীতের তীব্রতা কমে যাবে৷
আবহাওয়া অফিস আরও জানায়, এ মাসের শেষে অথবা আগামী মাসের প্রথম দিকে দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টি হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে৷ বৃষ্টি হলে কুয়াশা অনেকটাই কমে যাবে৷রাজশাহী, ঈশ্বরদী, রংপুর, দিনাজপুর, সৈয়দপুর, সাতৰীরা, যশোর, চুয়াডাঙ্গা ও টাঙ্গাইলের উপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারী ধরনের শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে৷ শনিবার সকাল ৬টায় দেশে ঈশ্বরদীতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৭ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস৷ ঢাকায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১২ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস৷
সারাদেশে রাত থেকে সকাল পর্যনত্ম মাঝারী থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে৷আবহাওয়া অফিস জানায়, আজ সকাল ৯টা থেকে আগামী ৭২ ঘন্টা সময়ের শেষাংশে তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে এবং দেশের দক্ষিণাংশে বৃষ্টিপাতের সম্ভবনা রয়েছে৷ দেশের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলে বিরাজমান মৃদু শৈত্যপ্রবাহ ধীরে ধীরে অন্য এলাকায় বিস্তার করে আরও তিন দিন চলমান থাকতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর৷
আবহাওয়াবিদরা বলছেন,পৌষ মাসের দ্বিতীয়ার্ধে এসে শুক্রবার ঘন কুয়াশার চাদরে উত্তরী হাওয়ায় তাপমাত্রা কমছে৷ কোথাও কোথাও শৈত্যপ্রবাহ মাঝারি পর্যায়ে (সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৬ থেকে ৮ ডিগ্রি ওেসলসিয়াস) রূপ নিতে পারে৷ তবে বৃষ্টি হলে আবার তাপমাত্রা ধীরে ধীরে বাড়বে৷
আবহাওয়া অধিদপ্তরের জ্যেষ্ঠ আবহাওয়াবিদ সানাউল হক বলেন, পাবনা, যশোর ও কুষ্টিয়া অঞ্চল সমূহের উপর দিয়ে মৃদু শৈত্য প্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং বিরাজমান শৈত্যপ্রবাহ আরো অন্তত তিনদিন চলতে পারে৷শুক্রবার মধ্যরাত থেকে শনিবার সকাল পর্যন্ত সারাদেশে মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে বলে জানান এই আবহাওয়াবিদ৷এদিন দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে যশোরে ৯ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস৷ রাজধানীসহ দেশের অধিকাংশ এলাকায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ থেকে ১৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসে অবস্থান করছে৷
সানাউল বলেন, ২৯ ডিসেম্বর থেকে ৪ জানুয়ারি পর্যন্ত এ সপ্তাহে বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে৷ এসময় তাপমাত্রা একটু বাড়তে পারে৷আবহাওয়া অফিস জানায়, স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে ৷ সারাদেশে ডিসেম্বরে ৮ থেকে ১০ মিলিমিটার স্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে৷ বৃষ্টির পর জেঁকে বসা একটু তীব্র হতে পারে৷
আবহাওয়া অধিদপ্তরের দীর্ঘমেয়াদী পূর্বাভাসে জানানো হয়, নভেম্বরে সারাদেশে স্বাভাবিক অপেক্ষা ৯৮ শতাংশ কম বৃষ্টিপাত হয়েছে৷ গত মাসে পশ্চিমা লঘুচাপ দুর্বল থাকায় এবং বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট কোনো লঘুচাপ বা নিম্নচাপ বাংলাদেশের উপকূল অতিক্রম না করায় সারাদেশে স্বাভাবিকের চেয়ে কম বৃষ্টিপাত হয়েছে৷এর আগে পৌষের প্রথম সপ্তাহ থেকে জেঁকে বসেছে শীত৷ জানুয়ারিতে কয়েক দফা মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাওয়ার পূর্বাভাসও রয়েছে৷
জানুয়ারি মাসে সামগ্রিকভাবে দেশে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের (৭-১৩ মিলিমিটার) সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানায় আহাওয়া অধিদপ্তর৷এ মাসে দেশের উত্তর, উত্তর-পূর্বাঞ্চল, পশ্চিম ও মধ্যাঞ্চলে ১-২ টি মাঝারি থেকে তীব্র ধরনের শৈত্যপ্রবাহ এবং অন্যত্র ২-৩টি মৃদু থেকে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে৷
দেশের সর্বনিন্ম তাপমাত্রা ঈশ্বরদীতে
পাবনা: দু’দিন ধরে তীব্র্র শৈত্যপ্রবাহে বিপর্যসত্ম হয়ে পড়েছে পাবনার জনজীবন৷ জেলার ঈশ্বরদীতে এখন সবচেয়ে কম তাপমাত্রা৷শনিবার ঈশ্বরদীতে সর্বনিন্ম তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৭ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস৷ এটা এ বছরে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা বলে জানিয়েছেন ঈশ্বরদী আবহাওয়া অফিস৩শৈত্য প্রবাহের পাশাপাশি ঘন কুয়াশায় ঢেকে আছে আকাশ৷ হেডলাইট জ্বালিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে যানবাহন৷গা হিম হওয়া ঠান্ডা বাতাসে সবচেয়ে বেশী কষ্ট পাচ্ছে শিশু, বৃদ্ধ আর ছিন্নমূল মানুষ৷ আগুন জ্বেলে শীতের তীব্রতা থেকে বাঁচার চেষ্টা করছে অনেকে৷
ঈশ্বরদী আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফরমান আলী জানান, এ বছর জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে শনিবার ৭ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস৷ এটাই এখন পর্যনত্ম এ বছর দেশে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা৷তিনি জানান, এ অবস্থা আরো দু-একদিন থাকবে৷ কুয়াশা কমলে তাপমাত্রা আরো কমার আশঙ্কা রয়েছে বলে তিনি জানান৷শনিবার দুপুর ২টা পর্যনত্ম সূর্ষের মুখ দেখা যায়নি৷ ঘন কুয়াশা আর ঠান্ডা বাতাসের দাপটে বাইরে যাওয়া কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে৷ তবু কর্মজীবী মানুষকে জীবিকার সন্ধানে বের হতে হচ্ছে৷ আবার দিনমজুর-শ্রমিকরা কাজ না পেয়ে পরিবার নিয়ে দুর্ভোগে পড়ছে৷
জেলা প্রশাসক কাজী আশরাফ উদ্দিন জানান, শীতার্ত মানুষের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ শুরু করা হয়েছে জেলার ৯টি উপজেলায়৷ ইতোমধ্যেই প্রায় ১৫ হাজার কম্বল বিতরণ করা হয়েছে বলে তিনি জানান৷ তিনি বলেন, অতিরিক্ত বরাদ্দ চেয়ে চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছে সংশ্লিষ্ট দফতরে৷ পাওয়া মাত্র বিতরণ করা হবে৷ এ ছাড়া বিভিন্ন বেসরকারি সংগঠন নিজ উদ্যোগে শীতবস্ত্র বিতরণ অব্যাহত রেখেছে বলে তিনি জানান৷ রাজশাহী: রাজশাহীতে একদিনের ব্যবধানে তাপমাত্রা কমেছে ২ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস৷ শুক্রবার রাজশাহী অঞ্চলে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ দশমিক ০৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস থাকলেও শনিবার চলতি মৌসুমের সর্বনিম্ন তামপাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৭ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস৷
একদিকে রেকর্ড তাপমাত্রা হ্রাস অন্যদিকে ঘন কুয়াশা আর কনকনে ঠাণ্ডা বাতাসে বেড়েছে শীতের তীব্রতা৷ এতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে রাজশাহীর স্বাভাবিক জীবনযাত্রা৷ হাড় কাঁপানো শীতে রীতিমত থর থর করে কাঁপতে শুরু করেছে এ অঞ্চলের মানুষ৷ সবচেয়ে দুর্ভোগ পড়েছে ছিন্নমূল মানুষ৷
শনিবার (সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত সূযের্র মুখ দেখা যায়নি৷ ঘনকুয়াশা আর ঠাণ্ডা বাতাসের দাপটে বাইরে বের হওয়াই দায় হয়ে পড়েছে৷ তবুও কর্মজীবী মানুষকে এ শীত উপেক্ষা করেই জীবিকার সন্ধানে বের হতে হচ্ছে৷ আজ থেকে এ অঞ্চলে শৈত্যপ্রবাহের পূর্বাভাস দিয়েছে রাজশাহী আবহাওয়া অধিদফতর৷
রাজশাহী আবহাওয়া অধিদফতরের সহকারী আবহাওয়া কর্মকর্তা আনোয়রা বেগম জানান, শনিবার এ অঞ্চলে এ মৌসুমে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে৷ এদিন সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় মাত্র ৭ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস৷ অথচ একদিন আগেও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১০ দশমিক ০৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস৷ এছাড়া বৃহস্পতিবার ছিল ৯ দশমিক ৮ এবং বুধবার ৯ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস৷
গত সপ্তাহের প্রথম থেকেই রাজশাহীতে ঘন কুয়াশার সঙ্গে ঠাণ্ডা বাতাসও বইছে৷ সেই সঙ্গে কমছে দিনের তাপমাত্রাও৷ শনিবার রাতে শীতের মাত্রা আরও বাড়তে পারে বলেও জানান তিনি৷
রাজশাহী আবহাওয়া অধিদফতরের সহকারী আবহাওয়া কর্মকর্তা আনোয়ারা বেগম ঢাকা আবহাওয়া অফিসের বরাত দিয়ে জানান, ডিসেম্বরের শেষার্ধে রাজশাহী অঞ্চলে ১ থেকে ২টি মৃদু (৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস) অথবা মাঝারি (৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস) শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে৷ এছাড়া মাসের শেষে রাত থেকে সকাল পর্যন্ত রাজশাহী অঞ্চলে মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে বলেও জানান এ আবহাওয়া কর্মকর্তা৷এদিকে, শীতের তীব্রতা বৃদ্ধি পাওয়ায় দুর্ভোগের মুখে পড়েছেন রাজশাহী অঞ্চলের ছিন্নমূল মানুষ৷ তাদের কষ্ট বেড়েছে কয়েকগুণ৷ রাজশাহীর চর ও গ্রামাঞ্চলেও বেড়েছে শীতের তীব্রতা৷ এ এলাকার মানুষ খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন৷ এরইমধ্যে বিভিন্ন সামাজিক ও বেসকারি সংস্থা এবং সরকারিভাবে শীতার্তদের মধ্যে শীতবস্ত্র বিতরণ শুরু হলেও তা চাহিদার তুলনায় অপ্রতুল৷
রাজশাহী জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মেজবাহ্ উদ্দিন চৌধুরী জানিয়েছেন, রাজশাহীতে শীত মোকাবেলায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে৷ এরই মধ্যে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সরকারের কাছে ৮০ লাখ টাকা অথবা ওই পরিমাণ মূল্যের শীতবস্ত্রের চাহিদা দেওয়া হয়েছে৷এর মধ্যে প্রথম দফায় ৭০ হাজার কম্বল রাজশাহী মহানগরীসহ জেলার ৯টি উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তাদের মাধ্যমে দুঃস্থ ও প্রতিবন্ধীদের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে৷ এছাড়া স্থানীয় বিভিন্ন পর্যায়ে শীতবস্ত্র সংগ্রহ ও বিতরণের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে বলে জানান জেলা প্রশাসক৷
মানিকগঞ্জ: ঘন কুয়াশার কারণে প্রায় ৯ ঘন্টা বন্ধ থাকার পর পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া ফেরিঘাটের মধ্যে পুনরায় ফেরি চলাচল শুরম্ন হয়েছে৷ এসময়ে লঞ্চসহ সকল যান্ত্রিক যান চলাচল বন্ধ ছিল৷বাংলাদেশ অভ্যনত্মরীণ নৌপরিবহন করপোরেশন (বিআইডবি্লউটিসি) পাটুরিয়া ঘাট সূত্র জানায়, ঘন কুয়াশার কারণে গতরাত ৮টা থেকে রাত পৌনে ৪টা পর্যনত্ম নৌযান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়৷ যাত্রী নিয়ে ৭টি ফেরি মাঝপদ্মায় আটকা পড়ে৷ এছাড়া পাটুরিয়া ঘাটে ৫টি এবং দৌলতদিয়া ঘাটে ৪টি ফেরি যাত্রীবাহী বাস ও পণ্যবোঝাই ট্রাক নিয়ে আটকা পড়ে৷ ঘাটের উভয় পারে বিপুলসংখ্যক বাস ও ট্রাক পারাপারের অপেক্ষা ছিল৷
বিআইডবিস্নউটিসি পাটুরিয়া ঘাটের ব্যবস্থাপক বিদু্যত্ কুমার সাহা জানান, কুয়াশা কেটে গেলে ভোর পৌনে ৫টা থেকে ফেরি চলাচল পুনরায় শুরু হয়৷
দিনাজপুর: দিনাজপুর জেলায় সর্ব নিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৮দশমিক ৫ডিগ্রি সেলসিয়াস৷ জেলার দরিদ্র জন গোষ্ঠীর শিত নিবারণের জন্য ৬০ পিস বস্ত্র ও ৫ লাখ টাকা চেয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে ত্রাণ ও পুনর্বাসন মন্ত্রণালয়ে জরম্নরি ফ্যাঙ্ বার্তা পাঠানো হয়েছে৷
প্রেরিত ফ্যাঙ্ বার্তায় ২০ হাজার পিস কম্বল, ১০ হাজার পিস চাদর, ১০ হাজার পিস জ্যাকেট ও ২০ হাজার পিস শিশু পোশাক উল্লেখ করা হয়৷দিনাজপুর আবহাওয়া অফিসের অফিস সহকারী আশিকুর রহমান জানান, আজ শনিবার দিনাজপুর আবহাওয়া অফিস সর্বনিম্ন মাপমাত্রা ৮ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস ও ১১০ কিলোমিটার বেড়ে বাতাসের বেগ রেকর্ড করা হয়েছে৷ তবে সারা দিনই ঘন কুয়াশায় রাসত্মা-ঘাট ঢাকা ছিল৷ ফলে দিনাজপুরে শীতের প্রকোপ ক্রমান্বয়ে বেড়ে যায়৷ শীতের তীব্রতা নিবারণে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে এবং বিভিন্ন সংগঠন শীতার্ত জনসাধারণের মাঝে শীত বস্ত্র বিতরণ অব্যাহত রেখেছে৷
মাগুরা: মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলা শহীদ মিনার চত্বরে ৫’শ দরিদ্র শীতার্ত নারী-পুরুষের মধ্যে কম্বল বিতরণ করা হয়েছে৷শনিবার দুপুরে উপজেলা আওয়ামী সমবায় লীগের উদ্যোগে এ কম্বল বিতরণ করা হয়৷এ উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় আওয়ামী সমবায় লীগের মহম্মদপুর উপজেলা শাখার সভাপতি মো. ইউসুফ আলী শেখের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথিছিলেন মাগুরা জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মো. তানজেল হোসেন খাঁন৷ সেখানে আরও বক্তব্য রাখেন- উপজেলা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক ঈদুল শেখ, মনির হোসেন, শামসুর রহমান, অ্যাড. রবিউল ইসলাম রিংকু, রাজিবুল ইসলাম খবির, সিরাজুল ইসলাম ও আনিছুর রহমান প্রমুখ৷
অনুষ্ঠানে উপজেলা আওয়ামী সমবায় লীগের নতুন কমিটির নেতৃবৃন্দকে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়
পাঁচবিবি (জয়পুরহাট) সংবাদদাতা \\ দরিদ্র ও দুঃস্থ শীতার্ত মানুষের মাঝে ইসলামী ব্যাংক লিঃ পাঁচবিবি শাখার উদ্যোগে গতকাল শুক্রবার ২৬ ডিসেম্বর বিকেলে ব্যাংক মিলনায়তনে শীতের চাদর, কম্বল ও সুয়েটার সহ ৪শতাধিক শীত বস্ত্র বিতরন করা হয়৷ শাখা ম্যানেজার সেত্তাজুল হকের সভাপতিত্বে বিতরনী অনুষ্ঠানে প্রধান ও বিশেষ অতিথি ছিলেন ইসলামী ব্যাংকের এক্রিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট ও বগুড়া জোনের ম্যানেজার মোশাররফ হোসাইন, পাঁচবিবি উপজেলা নির্বাহী অফিসার নুর উদ্দিন আল ফারম্নক, জয়পুরহাট চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাসট্রিজ এর প্রেসিডেন্ট আব্দুল হাকিম মন্ডল, সাবেক উজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মাওঃ আঃ ওয়াদুদ, জয়পুরহাট শাখা ম্যানেজার হাবিবুুর রহমান, উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আবু বক্কর সিদ্দিক মন্ডল, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মিছির আলী, বায়তুন নূর জামে মসজিদের পরিচালনা কমিটির সম্পাদক আব্দুস সাত্তার, পাঁচবিবি শাখার সহকারী ম্যানেজার সামিউল ইসলাম প্রমুখ৷
চট্টগ্রাম: বন্দর নগরী চট্টগ্রাম এবং নগরীর পাশর্্ববতর্ী এলাকায় আজ ঘন কুয়াশায় ও শৈত্য প্রবাহে বিমান চলাচল ব্যাহত হয়েছে৷শনিবার সকালের পর থেকে চট্টগ্রাম শাহ আমানত আনত্মর্জাতিক বিমানবন্দরে ঘন কুয়াশায় বিমানের কয়েকটি ফ্লাইট ওঠা-নামায় বিঘ্ন ঘটে৷
বিমানবন্দর সূত্রে বলা হয়, শনিবার সকাল ৮টা ৪৫ মিনিটে আবুধাবী থেকে আসা একটি ফ্লাইটের অবতরণ করার কথা ছিলো৷ কিন্তু কুয়াশার কারণে এটি নির্ধারিত সময়ে এমনকি সকাল ১১টা পর্যনত্ম অবতরণ করতে পারেনি৷ এ ঘটনায় অভ্যনত্মরীণ রম্নটের দুটি ফ্লাইট নির্ধারিত সময়ে বিমানবন্দর থেকে আকাশে উড়তে পারেনি৷বেসামরিক বিমান চলাচল বিভাগের ম্যানেজার নূর-ই-আলম বাসসকে জানান, কুয়াশায় বিমান চলাচল বন্ধ হয়নি৷ তবে কিছুটা বিঘ্ন ঘটেছে৷ সকার ১১টা ৩০ মিনিটের পর বিমান চলাচল পুনরায় স্বাভাবিক হয়৷চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপৰের (সিপিএ) সেক্রেটারি জাকের হোসেন বলেন, গভীর রাতের পর থেকে আজ দুপুর পর্যনত্ম বন্দর চ্যানেলে সকল প্রকার জাহাজ চলাচল বন্ধ ছিলো৷
আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, আগামী দুই থেকে তিনদিন নদী অববাহিকায় এ অবস্থা অব্যাহত থাকবে৷