anisul-haq_18936

দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ২৩ ডিসেম্বর: যুদ্ধাপরাধের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক দল জামায়াতকে নিষিদ্ধ করার আইন অনুমোদনের জন্য জানুয়ারিতেই মন্ত্রিসভায় উপস্থাপন করা হবে বলে জানিয়েছেন আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক৷

মঙ্গলবার সৈয়দ কায়সারের রায়ের প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা জানান৷ রায়ের পর সচিবালয়ে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আমরা পুরো বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে সন্তুষ্ট৷বিচার সঠিকভাবেই চলছে৷এসময় মন্ত্রী বলেন, জামায়াতকে নয়, ১৯৭১ সালে যারা দেশের বিরোধী ছিল এবং অপরাধ সংগঠিত করেছিল তাদের নিষিদ্ধের জন্য আইন করা হবে৷

রায় প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘যারা মুক্তিযুদ্ধের সময় হত্যাকাণ্ড বা নাশকতার পরিকল্পনা করেছিল এতদিন তাদের বিচার হয়েছে৷ এখন যারা পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য কাজ করেছিল তাদের বিচার হচ্ছে৷ এটা অত্যন্ত তাত্‍পর্যপূর্ণ, এবং এ সাজা তার প্রাপ্য ছিল৷রায় কার্যকর করা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিচার মানেই কিছ প্রক্রিয়া মানতে হবে৷ তাই সকল প্রক্রিয়া মেনেই রায় কার্যকর করা হবে৷

কামারুজ্জামানের রায়ের পূর্ণাঙ্গ কপি এখনো প্রকাশ হয়নি জানিয়ে তিনি বিচার প্রক্রিয়ার সঙ্গে সম্পৃক্ত সকলকে প্রতিবন্ধকতা দূর করে দ্রুত কাজ এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানানমুক্তিযুদ্ধের সময় ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও হবিগঞ্জে হত্যা, গণহত্যা, ধর্ষণের মতো যুদ্ধাপরাধের দায়ে সাবেক প্রতিমন্ত্রী সৈয়দ মোহাম্মদ কায়সারের মৃতু্যদণ্ডের রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক৷ একাত্তরে মুসলিম লীগের রাজনীতি করা কায়সারের বিরুদ্ধে প্রসিকিউশনের আনা ১৬টি অভিযোগের ১৪টি প্রমাণিত হওয়ায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবু্যনাল-২ তাকে সর্বোচ্চ সাজা দেয়৷আনিসুল হক বলেন, একাত্তরে যুদ্ধাপরাধে জড়িত দলের বিচারের বিষয়ে জানুয়ারিতে মন্ত্রিসভায় একটি সংশোধনী বিল উত্থাপন করা হবে৷ মন্ত্রিসভা অনুমোদন দিলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে৷

যুদ্ধাপরাধের বিচারের মধ্যেই গত বছরের ১ অগাস্ট হাই কোর্ট এক রায়ে রাজনৈতিক দল হিসেবে জামায়াতের নিবন্ধন অবৈধ ঘোষণা করে৷এরপরই জামায়াতের যুদ্ধপরাধের তদন্ত শুরু করে ট্রাইবু্যনাল৷ট্রাইবু্যনালের বিভিন্ন রায়ে দল হিসেবে জামায়াতের যুদ্ধাপরাধে সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি উঠে আসে৷ দলটির সাবেক আমির গোলাম আযমের রায়েও জামায়াতকে একটি ‘ক্রিমিনাল সংগঠন উল্লেখ করা হয়৷এক প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, সরকার চাইলেই জামায়াতকে নিষিদ্ধ করতে পারে৷ তবে সরকার চায় বিষয়টি আইনি প্রক্রিয়ায় হোক৷

জামায়াতকে ব্যান করা যায় যদি আজকেই আমরা চাই৷ কিন্তু আমরা বিশ্বাস করি আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ১৯৭১ সালে তারা যেসব অপরাধ করেছিল সংগঠন হিসাবে তার বিচার হবে৷এ পর্যন্ত ঘোষিত যুদ্ধাপরাধের রায়গুলো কার্যকরে সবার সহযোগিতা চেয়ে মন্ত্রী বলেন, জনগণের প্রতিনিধি হিসাবে প্রত্যাশা, এই রায় কার্যকর করার ক্ষেত্রে ছোটখাট যেসব প্রতিবন্ধকতা আছে, যে যেখানে আছেন সেখান থেকে আপনারা তা পরিষ্কার করে দেবেন, যেন আমরা রায় কার্যকর করতে পারি৷ দুই বছর আগে যুদ্ধাপরাধের বিচার শুরুর পর এ পর্যন্ত যে ১৪টি মামলায় রায় হয়েছে তার মধ্যে আপিলের চূড়ান্ত নিষ্পত্তি শেষে কেবল আবদুল কাদের মোল্লার ফাঁসি কার্যকর হয়েছে৷