দৈনিকবার্তা-কলাপাড়া, ২১ ডিসেম্বর: কুয়াকাটা সৈকতের বেলাভূমে পঁচা মাছের উত্কট গন্ধে পর্যটক-দর্শনাথর্ীর ভোগানত্মির শেষ নেই৷ নির্বিঘ্নে সৈকতে বেড়ানো, একটু নির্মল বাতাসে স্বসত্মির নিঃশ্বাস নেয়া; এসব সুযোগ থাকছে না৷ বীচের জিরো পয়েন্ট থেকে মাত্র দু’শ গজ পশ্চিম দিকেই এ দুরাবস্থার দৃশ্য৷ কারেন্ট জালে শিকার করা মনকে মন মাছ ডিঙি নৌকাসহ বীচে জালসহ তোলা হয়৷ তারপরে নৌকার চারদিকে ১০/১২ জন নারী-পুরুষ-শিশু শ্রমিকরা জাল থেকে মাছ ছড়ানোর কাজ করছে৷ জালে বেশি পেচানো বিপুল পরিমান মাছ আর ছাড়ানো হয় না৷ জালসহ বীচে ফেলে রাখা হয়৷ পচে-গলে, কাকে-কুকুড়ে খেয়ে সাবাড় করলে আবার জাল নিয়ে সাগরে নামেন জেলেরা৷ এমনকি জালে আটকা মাছসহ জাল আবার লোকচক্ষ এড়ানোর জন্য বালি দিয়ে ঢেকে রাখা হয়৷ ফলে ওই এলাকায় উত্কট গন্ধ ছড়ায়৷ পর্যটক-দর্শনাথর্ীরা পড়েন চরম অস্বসত্মিকর পরিবেশে৷ অনেকে বমি করে দেয়৷ দিনে রাতে সমানে চলছে এমন মাছ শিকার, ছড়ানো ও ফেলে রাখার কাজ৷
সৈকত লাগোয়া অগভীর সমুদ্রে এখন কারেন্ট জাল দিয়ে বিভিন্ন ধরনের সাদা মাছ শিকারের তান্ডব চলছে৷ আর এসব মাছ জাল থেকে ছাড়ানোর কাজ পর্যটক-দর্শনাথর্ীর বীচ ভ্রমনের অনত্মরায় হয়ে পড়েছে৷ কারণ প্রত্যেকটি জালে আটকে থাকা প্রচুর মাছ বীচে জালসহ ফেলে রাখায় পচে-গলে একাকার হয়ে উত্কট দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে৷ বীচ ম্যানেজমেন্ট কমিটি কিংবা কুয়াকাটা পৌর কতর্ৃপক্ষ এসব সমস্যা নিরসনের কোন উদ্যোগ নিচ্ছে না৷ ফলে বেড়াতে আসা পর্যটক-দর্শনাথর্ীর ভোগানত্মির শেষ নেই৷ পরিচ্ছন্ন সৈকত হিসাবে কুয়াকাটার আলাদা সুনাম রয়েছে৷ এৰেত্রে সরকারি প্রশাসন, পৌর পরিষদ কিংবা কুয়াকাটা বীচ ম্যানেজমেন্ট কমিটির কোন ভুমিকা নেই৷ ইতোপুর্বে টু্যরিস্ট বোট মালিক সমিতি স্থানীয় লোকজনকে নিয়ে বীচে ফেলা ডাবের খোসা, বিভিন্ন ধরনের পলিথিন অপসারনের কাজ শুরু করে৷ বর্তমানে তাও প্রায় বন্ধ৷
বর্তমানে জেলেদের কারেন্ট জালে ফালিশা, জাটকা ইলিশ, চাপিলা, চেলা, কারেন্টসহ বিভিন্ন ছোট মাছ ধরার ধুম চলছে৷ একেকবারে একেকটি নৌকায় প্রায় চার/পাঁচ মন মাছ ধরা পড়ছে৷ এসব মাছ খন্ডকালীন নারী-পুরম্নষ-শিশু শ্রমিকদের নিয়ে জাল থেকে ছাড়ানো হয়৷ কিন্তু জালে বেশি পেচানো থাকা মাছ আর ছাড়ানো হয় না৷ জালসহ বীচে ফেলে রাখা হয়৷ যা পঁচে-গলে দুর্গন্ধ ছড়ায়৷ কেউ কেউ আবার জালে আটকে থাকা মাছসহ জাল বালি দিয়ে ঢেকে রাখে৷ ফলে ওই এলাকায় নির্বিঘ্নে ভ্রমন পিপাষুরা চলাফেরা করতে পারছে না৷ উত্কট গন্ধে নাকমুখ চেপে পর্যটক-দর্শনাথর্ী বীচ ত্যাগ করতে বাধ্য হয়৷ এব্যাপারে মাছ শিকারি জেলেরা কোন মনত্মব্য তো দুরের কথা, নাম পর্যনত্ম বলতে রাজি নয়৷ অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে কুয়াকাটা সৈকত এখন অভিভাবকহীন হয়ে পড়েছে৷ পর্যটক-দর্শনাথর্ীরা কুয়াকাটা পৌছেই উচ্ছ্বাসের সঙ্গে সৈকতের বেলাভূমে দৌড়াদৌড়ি করতে থাকে৷ প্রাণখুলে আনন্দ উপভোগ করতে থাকে৷ কিন্তু মূলবীচের মাত্র দুই শ’ গজ দুরে পশ্চিম দিকে জেলেদের ফেলে রাখা পচা মাছের দুর্গন্ধে অবর্ণনীয় পরিস্থিতির শিকার হন আগতরা৷ কুয়াকাটা পৌর প্রশাসক ও কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, অবশ্যই এসব যারা করছে তাদের বিরম্নদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে৷ বীচ ম্যানেজমেন্ট কমিটির সদস্য সচিব কুয়াকাটা পর্যটন হলিডে হোমস এন্ড মোটেলস এর ম্যানেজার মো. আজহারুল ইসলাম জানান, তিনি বীচ ম্যানেজমেন্ট কমিটির সভাপতি জেলা প্রশাসক মহোদয়ের সঙ্গে আলোচনা করে এসব সমস্যা নিরসনের উদ্যোগ নিবেন৷ কুয়াকাটা হোটেল মোটেল ওনার্স এসোসিয়েশন এর সাধারণ সম্পাদক মোতালেব শরীফ জানান, বিষয়টি নিরসনে তারাও পদক্ষেপ নিবেন৷