দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ২০ ডিসেম্বর: প্রতি বছরের তালিকা শুরুতে যে আয়োজন সবচেয়ে আগে স্থান করে নিয়েছে, তা হলো বাণিজ্য মেলা৷ বছর ঘুরে আবার আসছে সেই ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য েেমলা৷ মাসব্যাপী এ মেলার অপেক্ষায় থাকেন নগরবাসী৷ ২০তম এ মেলাকে লক্ষ্য করেই পুরোদমে চলছে প্রস্তুতি৷ ১৪টি দেশের অংশগ্রহণে আগামী ১ জানুয়ারি থেকে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে এ মেলা শুরু হবে৷ আগের বছর মেলা ১০ দিন পিছিয়ে শুরু হলেও এবার যথাসময়ে শুরু হবে৷ ২০১৫ সালের ১ জানুয়ারি মেলার উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা৷ দেশি-বিদেশি সব মিলিয়ে ৫০৮টি স্টল অংশ নেবে এবারের মেলায়৷ প্রমবারের মতো এবার নারী উদ্যোক্তাদের জন্য দেয়া হচ্ছে আলাদা স্টল৷ দেশি নারী উদ্যোক্তাদের উত্সাহিত করতে এবারের মেলায় আলাদা ব্যবস্থা রাখার কথা জানিয়েছেন কর্তৃপক্ষ৷
এ বছর নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই মেলার সাজসজ্জা,স্টল বরাদ্দসহ মেলাপ্রাঙ্গণ প্রস্তুতি করতে আগেভাগেই মাঠে নেমেছেন আয়োজকরা৷ আয়োজন নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা৷ সঠিক সময়ে সব প্রস্তুতি নিয়েই মেলা শুরু করাটাই তাদের লক্ষ্য৷ প্রতিবছর মেলা শুরুর পরও সপ্তাহজুড়ে চলে নির্মাণ ও সাজসজ্জার কাজ৷ তবে এ বছর এমনটা হোক তা চাচ্ছেন না আয়োজক ও ব্যবসায়ীরা৷ তাই দিন-রাত কাজ করে যাচ্ছে নির্মাণ শ্রমিকরা৷
শনিবার মেলাপ্রাঙ্গণ ঘুরে দেখা গেছে, দেশি-বিদেশি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান তাদের স্টল ও প্যাভিলিয়ন তৈরির কাজ শুরু করেছে জোরেশোরেই৷ প্রায় ৫০ শতাংশ কাজ সম্পন্ন করতে পেরেছেন বলে দাবি করেছেন ব্যবসায়ীরা৷ এ দিকে, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে মেলার প্রধান ফটক, ইটের রাস্তা ও পার্কি ব্যবস্থা তৈরির কাজও এগিয়ে চলছে৷ অফিস নির্মাণের কাজে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন নির্মাণ শ্রমিকরা৷
রফতানি উন্নয়ন বু্যরোর (ইপিবি) ভাইস চেয়ারম্যান শুভাশীষ বসু জানান, যথাসময়ে বাণিজ্য মেলা শুরু করতে আগেভাগেই কাজ শুরু করা হয়েছে৷ মেলার সব ধরনের প্রস্তুতি দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে৷ মেলা উদ্বোধনের আগেই সব ধরনের কাজ শেষ হবে বলে আশা করছি৷
ইপিবি সূত্রে জানা গেছে, এবারের বাণিজ্য মেলায় স্টল থাকছে ৫০৮টি, যা গতবারের চেয়ে ৪২টি বেশি৷ এদের মধ্যে সাধারণ স্টল ২২২টি, প্রিমিয়ার স্টল ৫৬টি, প্রিমিয়ার প্যাভিলিয়ন ৫৫টি৷ এ ছাড়া, প্রিমিয়ার মিনি প্যাভিলিয়ন ৫৪টি, বিদেশি প্রতিষ্ঠানের জন্য প্রিমিয়ার স্টল ১৯টি, মিনি প্যাভিলিয়ন ১৫টি, বিদেশি প্রতিষ্ঠানের জন্য প্যাভিলিয়ন ১৫টি,জেনারেল প্যাভিলিয়ন ১৪টি, রিজার্ভ প্যাভিলিয়ন ৮টি, রিজার্ভ মিনি প্যাভিলিয়ন ৬টি, রেস্টুরেন্ট ৬টি, বিদেশি মিনি প্যাভিলিয়ন ৫টি ও বিদেশি খাদ্যের রেস্টুরেন্টের জন্য ২টি স্থাপনা বরাদ্দ দেয়ার কথা রয়েছে৷
এবারের মেলায় যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জার্মানি, অস্ট্রেলিয়া, ইরান, ভারত, পাকিস্তান, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, তুরস্ক, চীন, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং দক্ষিণ কোরিয়া অংশ নেবে৷ গত বছর ১২টি দেশ অংশ নিলেও এবার অংশগ্রণকারী দেশের সংখ্যা ২টি বেড়ে দাড়িয়েছে ১৪টি৷ মেলায় প্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য ৩০ এবং অপ্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য ২০ টাকা প্রবেশ মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে৷ আগের বছরের মতো এবারও মেলার গেট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হলের আদলে তৈরি করা হচ্ছে৷
নারী উদ্যেক্তাদের জন্য প্রথম বারের মতো স্টল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে৷ দেশিয় নারী উদ্যোক্তাদের উত্সাহিত করতে এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন কর্তৃপক্ষ৷নারী উদ্যোক্তাদের ২৯টি আবেদন জমা পড়লে সবই বরাদ্দ দেয়া হয়েছে৷
এ দিকে,মেলার নিরাপত্তা নিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন একাধিক প্রতিষ্ঠানের ব্যবসায়ীরা৷ কোনো ঝামেলা ছাড়াই মেলার কাজ এগিয়ে চলছে, বললেন আকতার ফার্নিচারের প্যাভিলিয়নের কর্মকর্তা মো. হাছানুল কবির৷ তিনি বলেন, মেলা শুরুর আগেই সব কাজ শেষ করতে পারব বলে আশা করছি৷ মেলায় দায়িত্বরত শেরেবাংলা নগর থানার পুলিশ মো. আব্দুল জলিল বলেন, এখন পর্যন্ত কোনো দুর্ঘটনা ঘটেনি৷