10নাটোরের সিংড়া উপজেলার চলনবিল অঞ্চলের দূর্গম এলাকা ডাহিয়া ইউনিয়নের বেড়াবাড়ি গ্রামে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র কলে শুক্রবার সংঘর্ষ ও গুলিবিনিময়ের ঘটনায় ৩১ জন গুলিবিদ্ধ। এর মধ্যে গুরুতর আহত তিনজনকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে এবং অন্য ২৮জন কে স্থানীয় ভাবে চিকিৎসা ছাড়াও বগুড়া, এবং সিংড়া ও নাটোরের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় একটি বন্দুক ও রামদা এক গ্রুপের প্রধানসহ তিনজনকে অস্ত্রসহ আটক করেছে পুলিশ।
প্রত্যক্ষদর্শী পুলিশ সূত্র জানায়, শুক্রবার সকাল আটটার দিকে এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বেড়াবাড়ি গ্রামের গোয়ালপাড়ার সাইফুল ইসলাম গ্রুপ ও মোল্লাপাড়ার আমজাদ হোসেন গ্রুপের বিবাদমান মধ্যে সংর্ঘষ শুরু হয়। প্রায় চারঘন্টাব্যাপী এই সংঘর্ষের সময় উভয় পক্ষের মধ্যে অসংখ্য রাউন্ড গুলি বিনিময়ের ঘটনা ঘটে। এতে বেশ কয়েকজন মহিলাসহ ৩১জন গুলিবিদ্ধ হয়েছে। এর মধ্যে জাহানারা বেগম (৪৫), বাবু সরকার (৩৫) ও খুকুমনি (২৬) নামে গুলিবিদ্ধ তিনজনকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। দুপুর একটার দিকে সরেজমিন বেড়াবাড়ি গ্রামে গিয়ে দেখা যায় চলনবিল ও নদী পাড়ি দেয়ার পর পায়ে হাঁটা ছাড়া বিকল্প পথ না থাকায় বন্দুক যুদ্ধে ছাররা গুলিতে অল্প আহত ২৮জন তখনো স্থানীয় ভাবে চিৎিকসা নেয়ার চেষ্ঠা করছে। এরা হলেন একই গ্রামের বাসিন্দা সেন্টু (২৪), আছমা খাতুন (৪০), রেজাউল (২৫), স্বপন (২৭), খোরশেদ আলম (৬০), শফিকুল ইসলাম (২৬), তফিজ উদ্দিন (৩৫), ফেরদৌস প্রামানিক (৩২), আব্দুল আলিম (২০), কাওসার আলী (২৮), জামাল হোসেন (২০), মজনু মোল্লা(২২), সোহরাব হোসেন সর্দার (২০), সবুজ সর্দার (২২), গোলজার মোল্লা(৫০), আকাশ তালুকদার (১৭), সোহাগ তালুকদার (২৫), আনিসুর রহমান (৩২), আফসার প্রামানিক (৫০), রানা আহম্মেদ (২৪), আব্দুর রহিম (২২), সাইদুর রহমান (২৫), সুজন (২২), আলম মোল্লা (৩৫), মুকুল প্রামানিক (২৫), রফিকুল ইসলাম (৪৩), জহুরুল ইসলাম (৩০) ও আতিকুর রহমান (২৪)। আহতরা বেশির ভাগই বিএনপি পন্থি মোল্লাপাড়ার আমজাদ গ্রুপের সদস্য বলে জানা গেছে। পরিস্থিতি শান্ত করতে পুলিশ দুপুরে একটি বন্দুক, অব্যবহৃত দুটি গুলি ও চারটি গুলির খোসা এবং একটি রামদাসহ গোয়ালপাড়া গ্রুপের প্রধান সাইফুল ইসলাম, তার সহকারী দানেশ আলী ও আসালত প্রামানিককে আটক করেছে। আটক সাইফুল ইসলাম নিজেকে জেলা যুবলীগের নেতা পরিচয় দিলেও জেলা যুবলীগের নেতা জাহিদুল ইসলাম ভোলা বলেছেন, সাইফুল যুবলীগ নয় আওয়ামী লীগ কর্মী। তবে স্থানীয়রা জানিয়েছে, আহতরা রাজনৈতিক দলের কমী হলেও শুক্রবারের সংঘর্ষের সাথে কোন রাজনৈতিক সর্ম্পক নেই।
শুক্রবার দুপুর আড়াইটার দিকে নাটোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মুন্সি সাহাবুদ্দিন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, তিনি ঘটনাস্থলেই রয়েছেন। বর্তমানে পরিস্থিতি তাদের নিয়ন্ত্রনে রয়েছে। এ ঘটনায় এক গ্রুপের প্রধান সাইফুল ইসলামসহ তিনজনকে অস্ত্রসহ আটক করা হয়েছে বলে তিনি নিশ্চিত করেন।
ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে ৩১জন গুলিবদ্ধি হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে সিংড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার সালমা খাতুন বলেন, সংঘর্ষের খবর পেয়ে তিনি নাটোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মুন্সি সাহাবুদ্দিনসহ ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। তিনি সবাইতে ধর্য্যধারন করার জন্য আহবান জানান। দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও তিনি জানান।