দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ১৮ ডিসেম্বর: মুক্তিযুদ্ধকালীন মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ব্রাহ্মণবাড়ীয়ার মোবারক হোসেননেকে দেয়া মৃতু্যদন্ডের রায়ের বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবার আপিল দায়ের করা হয়েছে৷বৃহস্পতিবার সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগের সংশিস্নষ্ট শাখায় এডভোকেট অন রেকর্ড জয়নাল আবেদিন তুহিন এ আপিল দায়ের করেন৷মোবারকের আইনজীবী তাজুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, ৮২ পৃষ্ঠার মূল আপিলসহ ৮৬২ পৃষ্ঠায় আপিলটি পেশ করা হয়েছে৷ আপিলে ৭৭টি গ্রাউন্ডে মোবারককে নির্দোষ দাবি করে মৃতু্যদন্ডের আদেশ বাতিল ও খালাস চাওয়া হয়েছে৷গত ২৪ নভেম্বর আনত্মর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবু্যনালনাল-১এর চেয়ারম্যান বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের নেতৃত্বে তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল আসামি মোবারকের উপস্থিতিতে জনাকীর্ণ ট্রাইবু্যনালে তাকে মৃতু্যদন্ড দিয়ে রায় ঘোষণা করে৷ ট্রাইবু্যনালের অপর দুই সদস্য হলেন বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন ও বিচারপতি আনোয়ারুল হক৷ রায়ে বলা হয়, তার বিরুদ্ধে আনীত ৫টি অভিযোগের মধ্যে ২টি অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে৷ এর মধ্যে ১নম্বর অভিযোগে তাকে মৃতু্যদন্ড ও তিন নম্বর অভিযোগে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দেয়া হয়৷ বাকী তিনটি অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাকে খালাস দেয়া হয়৷মোবারকের বিরম্নদ্ধে প্রথম অভিযোগ বলা হয়েছে, ৭১এর ২২ আগস্ট মোবারক ও অন্য রাজাকাররা ব্রাহ্মণবাড়ীয়ার আখাউড়া থানার টানমান্দাইল গ্রামের ২৬ জন ও জাঙ্গাইল গ্রামের সাতজনকে বাছাই করে তেরোঝুড়ি হাজতখানায় নিয়ে যায়৷ ২৩ আগস্ট পাকিসত্মানি সেনা ও রাজাকাররা ওই ৩৩ জনকে নিয়ে গঙ্গাসাগর দীঘির পশ্চিম পাড়ে গুলি করে হত্যা করে লাশ মাটিচাপা দেয়৷ এ অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃতু্যদন্ড দেয়া হয়েছে৷ তৃতীয় অভিযোগ: ৭১-এর ১১ নভেম্বর রাতে মোবারক তার সশস্ত্র রাজাকার সহযোগীদের নিয়ে ছাতিয়ান গ্রামের আবদুল খালেককে অপহরণ করে সুহিলপুর ইউনিয়ন পরিষদের রাজাকার ক্যাম্পে নিয়ে যায় ও শারীরিকভাবে নির্যাতন করে৷ ওই রাতেই খালেককে তিতাস নদীর পশ্চিম পাড়ে বাকাইল ঘাটে নিয়ে গুলি ও বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে হত্যা করা হয়৷ এ অভিযোগে তাকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দেয়া হয়েছে৷ এর আগে গত বছর ২০ মে মোবারক হোসেনের বিরম্নদ্ধে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়৷ প্রসিকিউশনের পক্ষে ১২ জন সাক্ষী সাক্ষ্য দিয়েছে৷ মোবারক হোসেনের মামলায় ২ জন সাফাই সাক্ষি সাক্ষ্য দেয়৷ মোবারক হোসেনের পরিচয় সম্পর্কে জানা যায়, ব্রাহ্মণবাড়ীয়ার আখাউড়া থানার নয়াদিল গ্রামের সাদত আলীর ছেলে৷ তার রাজনৈতিক পরিচয় সম্পর্কে তদনত্ম কর্মকতর্া বলেন, মোবারক হোসেন স্বাধীনতার পর জামায়াতের রুকন ছিলেন৷ পরে তিনি আওয়ামীলীগে যোগ দিলেও পরে বহিস্কৃত হন৷