তারেক রহমানের

দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ১৮ ডিসেম্বর: লন্ডনে একটি অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে রাজাকার বলায় বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন আদালতে বেশ কয়েকটি মামলা ও অভিযোগ দায়ের হয়েছে, যার মধ্যে একটিতে তাকে তলব করেছেন বিচারক৷ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে রাজাকার বলায় মানহানির অভিযোগে দায়ের হওয়া মামলায় বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত৷ বৃহস্পতিবার দুপুরে শুনানি শেষে এ পরোয়ানা জারি করেন মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ ইউনূস খানের আদালত৷এর আগে রাষ্ট্রদ্র্রোহ ও মানহানির অভিযোগ এনে মামলাটি দায়ের করেন ঢাকা বারের আইনজীবী মোস্তাফিজুর রহমান দুলাল৷ শুনানি শেষে মানহানির অভিযোগ আমলে নিয়ে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করলেও রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় রাষ্ট্রের অনুমোদন প্রয়োজন হওয়ায় রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ আমলে নেননি আদালত৷বাদীপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করছেন অ্যাডভোকেট শাহজাহান রুহুল ও মাজেদা আক্তার সুহি৷ মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, গত ১৫ ডিসেম্বর ইস্ট লন্ডনের দ্য অট্রিয়াম অডিটোরিয়ামে যুক্তরাজ্য বিএনপি আয়োজিত বিজয় দিবসের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বঙ্গবন্ধুকে রাজাকার ও শখের বন্দি অভিহিত করে তারেক রহমান বলেন, মুক্তিযুদ্ধে বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের কোনো ভূমিকা নেই৷ এর প্রেক্ষিতে রাষ্ট্রদ্রোহ ও মানহানির অভিযোগে মামলাটি করা হয়৷ এদিকে একই অভিযোগে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে ঢাকার সিএমএম আদালতে মানহানির অভিযোগে আরও একটি মামলা করেছেন হকার্স লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মান্নান৷ বৃহস্পতিবার দুপুরে ম্যাজিস্ট্রেট মারুফ হোসেনের আদালতে মামলাটি করেন আব্দুল মান্নান৷ এ মামলায় তারেক রহমান ছাড়াও বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দীন, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী ও বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক মাজেদুর রহমানকে আসামি করা হয়েছে৷এছাড়াও চট্টগ্রম, নাটোর ও কুমিল্লায় আরও তিনটি মামলা দায়ের করা হয়েছে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে৷ এর মধ্যে কুমিল্লার মামলায় তারেককে আগামী ১ মার্চের মধ্যে আদালতে হাজির হওয়ার জন্য সমন জারি করেছেন অতিরিক্ত প্রধান বিচারিক হাকিম শফিকুল ইসলাম৷ কুমিল্লার অ্যাডভোকেট সুবীর নন্দী বাবু মানহানির অভিযোগ এনে এ মামলা দায়ের করেছেন৷ তিনি বলেছেন, তরেক বঙ্গবন্ধুকে রাজাকার বলায় বাঙালি জাতির সঙ্গে তারও মানহানি হয়েছে৷বিজয় দিবস উপলক্ষে সোমবার লন্ডনে বিএনপির এক আলোচনা সভায় তারেক দাবি করেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যদি ৭ মার্চ সেনাবাহিনীর বাঙালি অফিসারদের নিয়ে যুদ্ধ শুরু করতেন, তাহলে যে সামান্য সংখ্যক পাকিস্তানি সৈন্য তখন ছিল, তাদের সহজেই পরাজিত করা যেত; প্রাণহানি ও অর্থনৈতিক ক্ষতি অনেক কমানো যেত৷ এই সব কিছু জানার পর এর জন্য আমরা এককভাবে কাকে দায়ী করতে পারি? শেখ মুজিবকে৷ এবং আমরা তাকে যেভাবে রাজাকার বলেছি, আমরা তথ্য প্রমাণ সত্য দিয়ে বিচার বিশ্লেষণ করে তাকে বলেছি- রাজাকার৷ আমরা সত্য ঘটনাবলীর ভিত্তিতে বলেছি সে ছিল পাকবন্ধু৷ ওই বক্তব্যের কারণে চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নুরুর আজিম রনি চট্টগ্রামের মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে যে মামলার আবেদন করেছেন, তাতে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ আনা হয়েছে তারেকের বিরুদ্ধে৷ বিচারক মশিয়ার রহমান অভিযোগ শুনে আদেশ অপেক্ষমাণ রেখেছেন৷বাদীর আইনজীবী রনি কুমার দে বলেন, বঙ্গবন্ধুকে রাজাকার বলে বাংলাদেশের সৃষ্টিকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন তারেক রহমান৷ বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে চ্যালেঞ্জ করে বক্তব্য দেওয়ায় দণ্ডবিধির ১২৩ (এ) ধারায় এ অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে৷ বাদী নুরুর আজম বলেন, তারেক রহমানের বক্তব্য বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও সংবিধানের পরিপন্থী৷ এটা রাষ্ট্রদ্র্রোহের শামিল৷ লন্ডনের অনুষ্ঠানে তারেক রহমান প্রশ্ন করে সমবেতদের কাছ থেকে উত্তর নিচ্ছিলেন৷ এ ধরনের বক্তব্যে তিনি উস্কানিদাতাও৷ তারেকের বিরুদ্ধে ঢাকার আদালতে অন্য অভিযোগটি করেছেন মোস্তাফিজুর রহমান দুলাল নামের এক আইনজীবী৷ মানহানির পাশাপাশি রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ এনেছেন তিনি৷মহানগর হাকিম ইউনুস খানের আদালতে এ অভিযোগের শুনানির কথা রয়েছে৷ পরিবার নিয়ে গত ছয় বছর ধরে লন্ডনে অবস্থান করা তারেক সামপ্রতিক সময়ে টানা কয়েকটি সভায় বাংলাদেশের ইতিহাসের নিজস্ব ব্যাখ্যা দাঁড় করিয়ে বিতর্কিত হয়েছেন৷ তার বক্তব্যের জন্য মানহানির অভিযোগে বাংলাদেশের আদালতে এর আগেও কয়েকটি মামলা হয়েছে৷ যার একটিতে গ্রেপ্তারি পরোয়ানাও জারি হয়েছে ৷ এদিকে, বুধবার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে কটূক্তি করায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে লিগ্যাল নোটিশ পাঠান সুপ্রিমকোর্টের এক আইনজীবী৷ সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সম্পাদক ও আওয়ামী লীগ নেতা মমতাজউদ্দিন আহমেদ মেহেদী নোটিশটি পাঠায়৷ নয়াপল্টনে বিএনপিরকেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এবং গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে নোটিশটি ফ্যাঙ্যোগে পাঠানো হয়েছে নোটিসে তারেককে বক্তব্য প্রত্যাহার করে সাত দিনের মধ্যে জাতির কাছে ক্ষমা চাইতে বলা হয়েছে৷ তা করা না করা হলে দেওয়ানি ও ফৌজদারি আইনে তার বিরুদ্ধে মামলা করা হবে বলে জানিয়েছেন এই আইনজীবী৷ নোটিসে বলা হয়, বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান হওয়ার পরও আপনার মধ্যে রাজনৈতিক পরিপক্কতা ও ইতিহাসের জ্ঞান নেই৷ বিজয় দিবস উপলক্ষে সোমবার লন্ডনে বিএনপির এক আলোচনা সভায় তারেক দাবি করেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যদি ৭ মার্চ সেনাবাহিনীর বাঙালি অফিসারদের নিয়ে যুদ্ধ শুরু করতেন, তাহলে যে সামান্য সংখ্যক পাকিস্তানি সৈন্য তখন ছিল, তাদের সহজেই পরাজিত করা যেত; প্রাণহানি ও অর্থনৈতিক ক্ষতি অনেক কমানো যেত৷এই সব কিছু জানার পর এর জন্য আমরা এককভাবে কাকে দায়ী করতে পারি? শেখ মুজিবকে৷ এবং আমরা তাকে যেভাবে রাজাকার বলেছি, আমরা তথ্য প্রমাণ সত্য দিয়ে বিচার বিশ্লেষণ করে তাকে বলেছি- রাজাকার৷ আমরা সত্য ঘটনাবলীর ভিত্তিতে বলেছি সে ছিল পাকবন্ধু৷ওই বক্তব্যের মাধ্যমে ইতিহাস বিকৃতি করে তারেক রহমান গর্হিত কাজ করেছেন বলে নোটিসে উল্লেখ করা হয়৷ পরিবার নিয়ে গত ছয় বছর ধরে লন্ডনে অবস্থান করা তারেক সামপ্রতিক সময়ে টানা কয়েকটি সভায় বাংলাদেশের ইতিহাসের নিজস্ব ব্যাখ্যা দাঁড় করিয়ে বিতর্কিত হয়েছেন৷তার বক্তব্যের জন্য মানহানির অভিযোগে বাংলাদেশের আদালতে কয়েকটি মামলা হয়েছে৷ এর মধ্যে একটিতে জারি হয়েছে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা৷