দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ১৮ ডিসেম্বর: মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে লন্ডনে বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বক্তব্য ক্ষমার অযোগ্য বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হাছান মাহমুদ৷বৃহস্পতিবার দলের ধানমণ্ডি কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে তারেক রহমানের বক্তব্যের জবাবে তিনি এ কথা বলেন৷ আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমণ্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে তারেক রহমানের দেওয়া বক্তব্যের জবাব দিতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়৷হাছান বলেন, বিদেশে থাকলেও এমন বক্তব্যের জন্য যুদ্ধাপরাধীদের মতো তারেককেও পরিণতি ভোগ করতে হবে৷ হাছান মাহমুদ বলেন, কারো বক্তব্য ও আচার-আচরণের মধ্যদিয়ে তার পারিবারিক পরিচয় স্পষ্ট হয়৷ যার আচরণ খারাপ তার পারিবারিক শিক্ষাই সাধারণত খারাপ হয়ে থাকে৷ সম্ভবত জিয়াউর রহমানের জীবনদশায় তারেক রহমানকে সঠিক শিক্ষায় শিক্ষিত করতে পারেননি৷ ২০০৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর রাজনীতি থেকে অবসর গ্রহণের মুচলেকা দেন বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান৷ কিন্তু বিদেশে পাড়ি দেয়ার পর লন্ডনে বিএনপি বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে একের পর এক রাজনৈতিক বক্তব্য দিচ্ছেন বলে জানান তিনি৷সবশেষ ১৫ ডিসেম্বর একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে কটাক্ষ করে বক্তব্য দেন৷ তারেক রহমানের এমন কটূক্তির প্রতিবাদে রাজধানীর ধানমণ্ডিতে সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে আওয়ামী লীগ৷ সেখানে দলটির প্রচার সম্পাদক হাছান মাহমুদ তারেক রহমানের এমন বক্তব্যের কঠোর সমালোচনা করেন৷তারেক রহমানের বিরুদ্ধে চলমান মামলার বিচার দ্রুততর করার দাবির পাশাপাশি তার সকল বক্তব্যের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে দলের নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান হাছান মাহমুদ৷বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে করা মামলাগুলো সক্রিয় করে বিচারকাজ দ্রুত সম্পন্ন করার আহবান জানিয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ৷ লিখিত বক্তব্যে হাছান মাহমুদ বলেন, আমরা দেশবাসীর কাছে আহবান জানাবো, এই অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান৷ একই সঙ্গে সরকারের প্রতি আমাদের আহবান থাকবে, অনতিবিলম্বে তারেক গংদের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলাগুলোর বিচারকাজ দ্রুত সম্পন্ন করুন৷ জনগণ হাওয়া ভবনের কর্ণধার তারেকের শাস্তি চায়৷তিনি বলেন, আমরা সর্বসাধারণের কাছে তার (তারেক) সকল কথাকেই ঘৃণা ও ধিক্কারের সঙ্গে প্রত্যাখ্যান করার আহবান জানাই৷ তারেক রহমান এ ধরনের বক্তব্যের মধ্য দিয়ে আমাদের সুমহান মুক্তিযুদ্ধের আদর্শকে বিতর্কিত করতে চান৷ আগামী প্রজন্মের মাঝে বিভ্রান্তি ছড়াতে চান৷ একই সঙ্গে তিনি নিজেও আলোচনায় থাকতে চান৷ সাবেক বন ও পরিবেশমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, যদি সাহস থাকে বিদেশে নিরাপদ দূরত্বে বসে নয়, দেশের মাটিতে ফিরে এসে বলুক৷ পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তার এদেশীয় দোসরদের যে পরিণতি হয়েছিল, সেই একই পরিণতি তারেকের ভাগ্যেও জুটবে৷ সীমার বাইরে নিজেকে, নিজের পরিবারকে জোরপূর্বক মর্যাদার আসনে বসাতে গিয়ে দেশের ইতিহাস-ঐতিহ্যকে অস্বীকার করে খালেদা ও তারেক যে ভুল পথে হাঁটতে শুরু করেছেন, এটা তাদের জন্য সর্বনাশ ও অমঙ্গল ডেকে আনবে৷ সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. দীপু মনি, দফতর সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ, স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক বদিউজ্জামান ভূঁইয়া, কার্যনির্বাহী সদস্য সুজিত রায় নন্দী প্রমুখ৷