দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ১৭ ডিসেম্বর: আগামীতে ক্ষমতায় গিয়ে বিএনপির খুন হত্যার হিসাব নেবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন জাতীয় পাটির্র চেয়ারম্যান হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ৷ এদেশে প্রথম বিএনপিই প্রতিহিংসার রাজনীতি শুরু করেছে বলে মন্তব্য করেন এরশাদ৷বুধবার বিকেলে কাকরাইলের দলীয় কার্যালয়ে জাতীয় পার্টি আয়োজিত বিজয় দিবসের আলোচনা সভায় তিনি একথা বলেন৷
এরশাদ বলেন, বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া আমাকে খুনি বলে৷ আয়নায় গিয়ে দেখুক কে খুনি৷তিনি আরো বলেন, বিএনপির আমলে গুলি করে ২০ কৃষকে হত্যা করেছে, সারাদেশে একযোগে সিরিজ বোমা হামলা হয়েছে, ২১ আগস্ট বোমা মেরে রাষ্ট্রপতির স্ত্রীকে হত্যা করেছে৷ আগামীতে আবার ক্ষমতায় গিয়ে এসব খুন, হত্যার হিসাব নেব৷
হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ বলেন, ১৯৯০ সালে ক্ষমতায় এসে প্রথম বিএনপি প্রতিহিংসার রাজনীতি শুরু করে৷ এখন তারা গণতন্ত্রের কথা বলেন, লেভেল প্লেইং ফিল্ডের কথা বলেন, সেদিন তো তারাই জাতীয় পার্টির নেতাদের বিনা কারণে জেলে পাঠিয়েছিলেন৷তিনি বলেন, বিএনপি নেত্রী (খালেদা জিয়া) প্রায়ই বলেন, এরশাদ খুনি, আমি তাকে বলি, আয়নায় নিজের চেহেরা দেখেন! আপনি সার না দিয়ে গাইবান্ধায় ২৮ কৃষককে হত্যা করেছিলেন৷ কানসাটের লোকজন বিদ্যুত চেয়েছিল, তাদের বিদু্যত্ দিতে পারেন নি, সেখানে ২০জনকে গুলি করে হত্যা করেছিলেন৷
ক্ষমতায় গেলে গাইবান্ধা ও কানসাটে স্মৃতি সৌধ নির্মাণের ঘোষণা দিয়ে এরশাদ বলেন, ওই স্মৃতি সৌধে লেখা থাকবে-বিএনপির দুঃশাসনের শিকার৷জাপা প্রেসিডেন্ট বলেন, জাতীয় পার্টি ক্ষমতায় আসার সম্ভাবনা অনেক বেশি৷ ক্ষমতায় এলে প্রমাণ করে দেবো খুনি এরশাদ নয়, আপনি (খালেদা)৷
দেশের সামপ্রতিক পরিস্থিতির সমালোচনা করে তিনি বলেন, একাত্তর সালে পাক বাহিনী এদেশের মানুষকে খুন ও গুম করেছিল৷ এখন আবার তা শুরু হয়েছে৷ আমরা একাত্তরে ফিরে গেছি! স্বাভাবিক মৃত্যুর গ্যারেন্টি নেই৷ আমরা নতুন বাংলাদেশ গড়তে চাই৷জাতীয় পার্টি ক্ষমতায় গেলে শিক্ষাঙ্গনে সন্ত্রাস থাকবে না জানিয়ে হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ বলেন, কোনো মায়ের বুক খালি হবে না৷ প্রত্যেক বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ চালু হবে আর সেখান থেকেই জাতীয় পর্যায়ে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য নেতা তৈরি হবে৷
পাকিস্তানি বাহিনী আমাদের দেশকে মেধাশূন্য করতে গুম-খুন-হত্যা করেছিল; বর্তমানে দেশে ঠিক সেই একই কালচার চলছে’ উল্লেখ করে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ বলেছেন, গত নয় মাসে ৮২ জন গুম-খুনের শিকার হয়েছেন৷
এরশাদ বলেন, আমরা এই সংস্কৃতি চাই না৷ গুম-খুন থেকে আমরা মুক্তি চাই৷ আমরা শান্তিতে থাকতে চাই৷ দেশে এভাবে গুম-খুনের রাজনীতি চলতে পারে না৷ প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত বলেন, দেশে এখন সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি চলছে৷ এভাবে চলতে পারে না৷ তবে জাতীয় পার্টি ক্ষমতায় আসলে আমরা এসবের বিচার করব৷ আমরা ক্ষমতায় এলে দেশে শান্তি ফিরে আসবে৷
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জাতীয় পার্টির সভাপতি সৈয়দ আবু হোসেন বাবলার সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় জাপা মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু, প্রেসিডিয়াম সদস্য ও পানিসম্পদমন্ত্রী ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাডভোকেট শেখ সিরাজুল ইসলাম, এম এ হান্নান, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, জাতীয় যুব সংহতির সাধারণ সম্পাদক বেলাল হোসেন, দফতর সম্পাদক কাজী শামসুল ইসলাম রঞ্জন এবং ছাত্রসমাজের সভাপতি ইফতেখার আহসান হাসান প্রমুখ বক্তব্য দেন৷