untitled-1_105741_0

দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ১৭ ডিসেম্বর: প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়ন, উপকূলীয় এলাকায় বহুমুখি আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ ও শিশুর পুষ্টি বিকাশের তিনটি প্রকল্পে বাংলাদেশকে প্রায় ১১০ কোটি ডলার ঋণ দিচ্ছে বিশ্ব ব্যাংক৷মঙ্গলবার ওয়াশিংটনে বিশ্ব ব্যাংকের নির্বাহী পর্ষদের সভায় এই ঋণ অনুমোদন করা হয়৷ঋণদাতা সংস্থাটি বলছে, এই তিন প্রকল্পের আওতায় বাংলাদেশের ৩ কোটি ৬০ লাখ মানুষ উপকৃত হবে৷এর মধ্যে তৃতীয় প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচিতে ৪০ কোটি ডলার, দুর্যোগকালীন বহুমুখি আশ্রয় কেন্দ্র প্রকল্পে ৩৭ কোটি ৫০ লাখ ডলার এবং দরিদ্র জনগোষ্ঠীর আয় সহায়তা কর্মসূচির আওতায় আরো ৩০ কোটি ডলার পাবে বাংলাদেশ৷ যা দেশের ৩ কোটি ৬০ লাখ মানুষ এর উপকার সহায়তা পাবে৷ বুধবার বিশ্বব্যাংকের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়৷

প্রকল্পসমূহ প্রাথমিক শিক্ষার মানের উন্নতি, উপকূলীয় জনগণের প্রাকৃতিক বিপর্যয় প্রতিরোধের সৰমতা বৃদ্ধি এবং অতি দরিদ্র পরিবারের শিশুদের পুষ্টি ও বুদ্ধিবৃত্তির বিকাশে সাহায্য করবে৷বিশ্ব ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালকমন্ডলীর অনুমোদিত এই প্রকল্পগুলো হচ্ছে- তৃতীয় প্রাথমিক শিৰা উন্নয়ন কর্মসূচী প্রকল্পে ৪০০ মিলিয়ন ডলার অতিরিক্ত অর্থায়ন, দুর্যোগকালীন বহুমুখী আশ্রয় কেন্দ্র প্রকল্পে সাড়ে ৩৭৫ মিলিয়ন ডলার এবং দরিদ্রতম জনগোষ্ঠীর আয় সহায়তা কর্মসূচীর জন্য ৩০০ মিলিয়ন ডলার৷এ সব প্রকল্প সহায়তা প্রসঙ্গে সংস্থার ঢাকা কার্যালয়ের আবাসিক প্রধান জোহানেস জাট বলেন,এই প্রকল্পগুলো দরিদ্র জনগণের জন্য সুযোগ সৃষ্টির বিশ্বব্যাংকের যে প্রচেষ্ঠা তাতে পরিপূরক হিসাবে কাজ করবে৷ প্রকল্পগুলো শিশুদের পুষ্টিমানের উন্নয়নের জন্য দরিদ্র মায়েদের নগদ প্রদান, শিশুদের প্রাক-প্রাথমিক ও প্রাথমিক শিক্ষায় অংশগ্রহণ নিশ্চিত করবে ও উপকূলীয় এলাকায় বিদ্যালয় অবকাঠামো সৃষ্টি করবে৷

তিনি বলেন, প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে এই কার্য্#৯৫৬;মগুলো নিশ্চিত করবে যে বাংলাদেশের দরিদ্রতম শিশুরাও যেন তাদের পূর্ন সম্ভাবনা অর্জন করতে পারে৷চলমান ৩০০ মিলিয়ন তৃতীয় প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচীর জন্য আরো ৪০০ মিলিয়ন ডলারের অতিরিক্ত অর্থায়নের মাধ্যমে প্রাথমিক শিক্ষায় ভর্তির হার ৯৮ শতাংশ এবং প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনের হার ৮০ শতাংশে উন্নীত করে প্রাথমিক শিক্ষা মানের অগ্রগতি অব্যাহত রাখা হবে৷ এ ছাড়া এ প্রকল্পের আওতায় মেধাভিত্তিক শিক্ষক নিয়োগ ও শূন্যপদ পূরণের নিশ্চয়তা বিধানে প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে৷ উপরন্ত শিক্ষা বছরের প্রথম মাসেই ৯০ শতাংশ স্কুলে পাঠ্য বই বিতরন নিশ্চিত হবে৷

বহুমুখী আশ্রয় কেন্দ্র প্রকল্পের লক্ষ্য হচ্ছে, প্রাকৃতিক দুর্যোগে উপকূলীয় জনগোষ্ঠীর ঝুঁকি প্রবণতা কমিয়ে আনা৷ প্রকল্পের আওতায় নয়টি উপকূলীয় জেলায় ৫৫২টি নতুন বহুমুখী আশ্রয় কেন্দ্র নির্মাণ, বিদ্যমান ৪৫০টির সংস্কার ও উন্নয়ন এবং আশ্রয়কেন্দ্রে সহজে পৌছানোর জন্য সংযোগ সড়ক নির্মাণ ও যোগাযোগ নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা হবে৷

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উলেস্নখ করা হয়, গত তিন দশকে দারিদ্র বিমোচনে বাংলাদেশের প্রশংসনীয় অগ্রগতি সত্বেও অতি দরিদ্র জনগোষ্ঠী বিশাল সংখ্যা, উন্নয়নের জন্য বিরাট চ্যালেঞ্জ৷ দরিদ্রতম জনগোষ্ঠীর জন্য আয় সহায়তা কর্মসূচী প্রকল্প অতি দরিদ্র জনগোষ্ঠীর ১০ শতাংশ বা দেশের সবচেয়ে দরিদ্র ৪২টি উপজেলার ২৭ লাখ মানুষ উপকৃত করবে৷ প্রায় ৬ লাখ মা তাদের সনত্মানদের পুষ্টি ও বুদ্ধি বিকাশ কর্মকান্ডে অংশ গ্রহনের বিনিময়ে আয় সহায়তা লাভ করবেন৷স্মার্ট ক্যাশ কার্ড ব্যবহারকারী মায়েদের ডাকঘর হিসাবে মাসিক অর্থ নগদ প্রদান করা হবে৷

বিশ্বব্যাংকের এ প্রকল্পের টাস্ক টীম লিডার ইফফাত শরিফ বলেন,জন্মের আগে এবং জন্মের পর প্রথম দুই বছর পর্যাপ্ত পুষ্টি নিশ্চিত করা হলে তা শিশুর মসত্মিষ্ক বিকাশ ও স্বাস্থ্য উনড়বয়নে সাহায্য করে৷ ৫ বছর বয়স পর্যনত্ম শিশুর বেড়ে ওঠা ও বুদ্ধিবিকাশে সহায়তা তার পরবতী জীবনে আয় উপার্জনের ক্ষমতা বাড়াতে এবং এক প্রজন্ম থেকে আরেক প্রজন্মে দারিদ্রের বিসত্মার রোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে৷

স্থানীয় সরকারের নিরাপত্তা বেষ্টনী কর্মসূচীর বাসত্মবায়ন প্র্ি#৯৫৬;য়াকে শক্তিশালী করাও এ প্রকল্পের লক্ষ্য বলে তিনি উল্লেখ করেন৷বিশ্ব ব্যাংকের অঙ্গ সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট এজেন্সী (আইডিএ) হতে প্রাপ্ত সুদ-মুক্ত ঋণের মেয়াদ ৬ বছরের রেয়াতসহ ৩৮ বছর এবং সার্ভিস চার্জ শূন্য দশমিক ৭৫ শতাংশ প্রযোজ্য৷