দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ১৪ ডিসেম্বর: পাকিস্তানি বাহিনী আমাদের দেশকে মেধাশূন্য করতে গুম-খুন-হত্যা করেছিল; বর্তমানে দেশে ঠিক সেই একই কালচার চলছে’ উল্লেখ করে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ বলেছেন, গত নয় মাসে ৮২ জন গুম-খুনের শিকার হয়েছেন৷ রোববার সকালে রাজধানীর মিরপুরে শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানাতে এসে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন এই সাবেক রাষ্ট্রপতি৷এরশাদ বলেন, আমরা এই সংস্কৃতি চাই না৷ গুম-খুন থেকে আমরা মুক্তি চাই৷ আমরা শান্তিতে থাকতে চাই৷ দেশে এভাবে গুম-খুনের রাজনীতি চলতে পারে না৷
সাবেক রাষ্ট্রপতি বলেন, ২০ হাজার নেতাকর্মী নিয়ে আজ আমি শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে এসেছি৷ আমিই প্রথম রাষ্ট্রপতি যে প্রথম শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করতে এখানে আসি৷তিনি বলেন, এ জায়গাটি আগে বিরানভূমি ছিল৷ আমিই প্রথম শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য এখানে সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ করি৷
প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত বলেন, দেশে এখন সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি চলছে৷ এভাবে চলতে পারে না৷ তবে জাতীয় পার্টি ক্ষমতায় আসলে আমরা এসবের বিচার করব৷ আমরা ক্ষমতায় এলে দেশে শান্তি ফিরে আসবে৷এ সময় এরশাদের সঙ্গে দলের মহাসচিব জিয়া উদ্দিন বাবলুসহ সিনিয়র নেতারা উপস্থিত ছিলেন৷
রোববার সকাল থেকেই বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবী সংগঠন ও প্রতিষ্ঠান স্মৃতিসৌধে পুস্পস্তবক অর্পণ করেন৷ কুয়াশাচ্ছন্ন সকালে লাল সবুজের পতাকা ও বাহারি সব ফুল হাতে তারা শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের৷রায়েরবাজার স্মৃতিসৌধে যারা শ্রদ্ধা নিবেদন করেন আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন৷
দিবসটি উপলক্ষে বিভিন্ন সংগঠন ও প্রতিষ্ঠান নানা রকম কর্মসূচি পালন করছে৷ তার মধ্যে রয়েছে কালো ব্যাজ ধারণ, কালো পতাকা উত্তোলন, মিরপুরে বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ, দোয়া মাহফিল, আলোচনা সভা৷১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস৷ দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান বুদ্ধিজীবীদের নিধনের মর্মন্তুদ স্মৃতিঘেরা দিন৷ বাঙালীর মেধা-মনন-মনিষা শক্তি হারানোর দিন৷ মুক্তিযুদ্ধে ৯ মাস রক্তগঙ্গা পেরিয়ে গোটা জাতি যখন উদয়ের পথে দাঁড়িয়ে, ঠিক সেই সময়ই রাতের আঁধারে পাক হানাদার বাহিনী ও তাদের এদেশীয় দোসর রাজাকার, আলবদর, আল শামস ও শান্তি কমিটির সদস্যরা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের বেছে বেছে হত্যা করে৷বাংলাপিডিয়ার তথ্য মতে একাত্তরে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের মধ্যে ৯৯১ শিক্ষাবিদ, ১৩ সাংবাদিক, ৪৯ চিকিত্সক, ৪২ আইনজীবী এবং ১৬ শিল্পী, সাহিত্যিক ও প্রকৌশলী ছিলেন৷