দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ১৩ ডিসেম্বর: তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেছেন, মিথ্যাচার ও তথ্য বিকৃতির বিরম্নদ্ধে গণমাধ্যমকে অত্যনত্ম বলিষ্ঠভাবে ভূমিকা রাখতে হবে৷তিনি বলেন, গণমাধ্যম মাঝে-মধ্যেই হলুদ সাংবাদিকতা বা ভারসাম্যের সংবাদ পরিবেশন করে থাকে৷ এমনকি রাজাকার ও স্বৈরাচারের পক্ষাবলম্বন করতে গিয়ে বঙ্গবন্ধুর হত্যাকেও অনেকে সমর্থন করে থাকে৷
বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউটের (পিআইবি) সেমিনার কক্ষে সরকারি জনসংযোগ ও গণমাধ্যম শীর্ষক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন৷এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন অতিরিক্ত প্রধান তথ্য কর্মকর্তা জয়নাল আবেদিন ও ভোরের কাগজের সম্পাদক শ্যামল দত্ত৷ সভাপতিত্ব করেন পিআইবি’র মহাপরিচালক শাহ আলমগীর৷তথ্য অধিদপ্তরের সহযোগিতায় (পিআইডি) এ কর্মশালার আয়োজন করে পিআইবি৷
তথ্যমন্ত্রী বলেন, রাষ্ট্র ও গণমাধ্যমের সম্পর্ক হচ্ছে অম্লমধুর৷ এ সম্পর্ক বিরোধপূর্ণ৷ এ প্রেৰিতে সরকারের তথ্য কর্মকর্তাদের কাজ কঠিন হয়ে পড়ে৷ বিশেষ করে সামরিক হসত্মক্ষেপ ও অগণতান্ত্রিক সরকারের সময়ে গণমাধ্যমগুলো সরকারের কাছ থেকে কোন তথ্য পায় না বলে তখন বিরোধ চরম আকার ধারণ করে৷তিনি বলেন, বর্তমানে জনগণের সরকার ক্ষমতায়৷ এখন সমাজ ও জনগণের যে উন্নয়ন ও অগ্রগতি হচ্ছে তার মূলে রয়েছে শেখ হাসিনার সরকার৷ যুগের চাহিদা অনুযায়ী দিনবদলের উন্নয়নের যে ধারা শুরম্ন হয়েছে এবং সমাজে এর কি ইমপেক্ট পড়ছে, তার কোন রিপোর্ট সরকারের তথ্য কর্মকর্তারা মন্ত্রণালয়ে বা গণমাধ্যমে পেশ করছেন না৷
ইনু বলেন, তথ্য কর্মকর্তাদের স্মরণ রাখতে হবে, তারা মন্ত্রী এবং সরকার ও প্রশাসনের জনসংযোগ কর্মকর্তা৷ মন্ত্রীর একানত্ম প্রচার কর্মকর্তা হিসেবে সরকারের বিভিন্ন কর্মকান্ডের সঠিক তথ্য গণমাধ্যমের কাছে তুলে ধরাই তাদের কর্তব্য৷ তথ্য অধিকার আইনের কারণে এখন গণমাধ্যম কর্মীদের বিভিন্ন প্রশ্ন আসবে, সেসবের উত্তর দেয়াও তথ্য কর্মকর্তাদের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে৷ এ জন্য তাদের পড়াশুনা করতে হবে৷
তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের সঙ্গে বিগত বিএনপি-জামায়াত সরকারের কি পার্থক্য আছে, তা তথ্য কর্মকর্তাদের গণমাধ্যমের কাছে তুলে ধরতে হবে৷ সরকারের আঞ্চলিক কর্মকান্ড এবং বর্হিবিশ্বের সঙ্গে সম্পর্কের যে পরিবর্তন বা নতুন মেরুকরণ হয়েছে, সেটিও তুলে ধরার দায়িত্ব এ কর্মকর্তাদেরই৷মন্ত্রী বলেন, তথ্য কর্মকর্তাদের সংবিধান সম্পর্কে জ্ঞান এবং সব ধরণের সরকার সম্পর্কে ধারণা থাকতে হবে৷ কিছুটা গণতন্ত্র, কিছুটা সামরিক তন্ত্র ও কিছুটা ধর্মতন্ত্রের মিশেলে খালেদা-নিজামীর খিচুরীতন্ত্রের সরকার সম্পর্কেও ধারণা রাখতে হবে৷
তিনি বলেন, খিচুরীতন্ত্রের গণতন্ত্র থেকে বর্তমান সরকার এখন প্রত্যাবর্তন পর্বে আছে৷ সামরিকতন্ত্র জায়েজ করতে খালেদা-নিজামী ১৩৭টি আইন করে গেছেন৷ শেখ হাসিনার সরকার সামরিক ও স্বৈতন্ত্রের পদচিহ্ন মুছে ফেলতে যুগের চাহিদা অনুযায়ী এখন আইনকে হালনাগাদ করতে ২৬৭টি আইন করেছে৷ সরকারের তথ্য কর্মকর্তাদের এসব তথ্য গণমাধ্যমে সঠিকভাবে তুলে ধরতে হবে৷তথ্যমন্ত্রী বলেন, গণমাধ্যম কোন পোষা বাঘ নয়, যে তাকে পোষ মানানো যাবে৷ তবে এ হিংস্র বাঘের সঙ্গে তাল মিলিয়ে কাজ করতে তথ্য কর্মকর্তাদের মুন্সিয়ানা জানতে হবে৷ সংবিধানকে তাদের আপহোল্ড করতে হবে৷ এ ক্ষেত্রে কোন সমস্যায় পড়লে সচিব তাদের পক্ষে অবস্তান নিবে৷