দৈনিকবার্তা-ঠাকুরগাঁও, ১১ ডিসেম্বর: ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার সালন্দর জামুরীপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রয়োজনীয় শ্রেণীকক্ষ ও আসবাপত্রের অভাবে সারা বছরই শিক্ষাথর্ীদের রোদ বৃষ্টিতে ভিজে লেখাপড়া শিখতে হয়৷ প্রচন্ড রোদের দিনে লেখাপড়া শেখানো হয় গাছের ছায়ায় আর মেঘ ডাকলেই বাজানো হয় ছুটির ঘন্টা৷ এ অবস্থা চলছে দীর্ঘ ৪-৫ বছর ধরে৷ ঠাকুরগাঁও শহরের অনতিদূরে সালন্দর এলাকায় অবস্থিত ১১৮নং সালন্দর জামুরিপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়৷ এখানে প্রাক প্রাথমিক (শিশু শ্রেণি) সহ ৬টি শ্রেণিতে শিক্ষাথর্ী রয়েছে প্রায় ৩ শতাধিক৷ কাগজে কলমে এখানে ৫ জন শিক্ষক থাকলেও একজন রয়েছেন ডেপুটেশনে৷ বর্তমানে ৪ জন শিক্ষক চালাচ্ছেন ২ শিফটে ৭ টি ক্লাস৷ ছাত্রছাত্রীদের তুলনায় এখানে প্রয়োজনীয় সংখ্যক শ্রেণি কক্ষ নেই৷ নেই পযর্াপ্ত আসবাবপত্র৷ এ কারণে বেশির ভাগ শিক্ষাথর্ীদের স্কুলের মাঠে চট বিছিয়ে ক্লাস নেওয়া হয় সারাবছর৷ দুটি শ্রেণি কক্ষে শিক্ষাথর্ীদের জন্য বসার বেঞ্চ রয়েছে মাত্র ১২ জোড়া৷ তাই বেশিরভাগ শিক্ষাথর্ীর আসন দেওয়া হয় স্কুলের মাঠ কিংবা শ্রেণি কক্ষের বারান্দা৷ ওই স্কুলের শিক্ষাথর্ী সাবিনা, সোহেল রানা, জুয়েল, খুশবুসহ আরো অনেকে জানান, স্কুলে পযর্াপ্ত চট না থাকায় বাড়ী থেকে চটের বস্তা এনে তাদের মাটিতে বসে লেখাপড়া শিখতে হয়৷ বিশেষ করে শীত ও গরমের দিনে শিক্ষাথর্ীদের দারুন কষ্ট ভোগ করতে হচ্ছে৷ স্কুলটি রাস্তা সংলগ্ন হওয়ায় গ্রীষ্মকালে গাড়ি-ঘোরা চলাচলের ফলে সারা মাঠ ধুলো বালিতে একাকার হয়ে যায়৷ এ অবস্থায় শিক্ষাথর্ীরা প্রায় সময়ই অসুস্থ হয়ে পড়ে৷ আর বষর্াকালে বেশির ভাগ দিনে এখানে লেখাপড়া হয়না৷ আকাশে মেঘ ডাকলেই বাজানো হয় ছুটির ঘন্টা৷ এতেই শেষ নয়, এ বিদ্যালয়ে শিক্ষক ও শিক্ষাথর্ীদের পৃথক কোন টয়লেট নেই৷ তাই শিক্ষাথর্ীদের টিফিনের সময় লাইন ধরে অথবা নিজ নিজ বাড়িতে গিয়ে টয়লেট সারতে হয়৷ ১টি মাত্র নলকূপের কারণে পানি খেতেও দিতে হয় সিরিয়াল৷ অপরদিকে বিদ্যালয়ে শিক্ষকরা জানান, ১ম শিফটের ৩টি ক্লাসই নেওয়া হয় মাঠে খোলা আকাশের নিচে৷ এতে ধুলোবালিতে পাঠদান করতে তাদের বহুবিধ সমস্যা হয়৷ তাই তারা জরুরী ভিত্তিতে বিদ্যালয়ে শ্রেণি কক্ষ নিমর্াণ ও আসবাবপত্র সরবরাহের দাবি জানান৷ এ ব্যাপারে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকতর্া একরামুল হক জানান, তিনি বিষয়টি অবগত রয়েছেন৷ শ্রেণি কক্ষের সমস্যা দুরিকরণে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে শ্রেণিকক্ষ নিমর্াণের জন্য ঢাকায় একটি প্রকল্প প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে৷ সেটি অনুমোদিত হলে খুব শিঘ্রই শ্রেণি কক্ষ নিমর্াণ করা হবে৷ তিনি আরো জানান, ইতোমধ্যে সভায় গৃহিত সিদ্ধান্ত মোতাবেক পাশর্্ববতর্ী বিদ্যালয় থেকে অতিরিক্ত আসবাবপত্র এনে এ বিদ্যালয়ের সমস্যা সমন্বয় করা হবে৷