দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ৯ ডিসেম্বর: রাষ্ট্রদ্রোহিতা ও ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানার অভিযোগে ঢাকার সিএমএম আদালতে আইনজীবী ব্যারিস্টার ড. তুহিন মালিকের বিরুদ্ধে পৃথক ৩ টি মামলা দায়ের করা হয়েছে৷
মঙ্গলবার মেট্রোপলিটন মেজিস্ট্রেট হাসিবুল হকের আদালতে মামলাগুলো দায়ের করেন ছাত্রলীগের উপ-কমিটির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক গোলাম রাব্বানী৷ ঢাকার মহানগর হাকিম হাসিবুল হক দুপুরে তিনটি অভিযোগের শুনানি নিয়ে দুটির আদেশ দিলেও অপরটির বিষয়ে দুপুরের পর আদেশ দেওয়া হবে বলে বাদীর আইনজীবী ব্যারিস্টার নাজমুল হাসান চৌধুরী জানিয়েছেন৷
বিচারক দুই অভিযোগ সরাসরি আমলে না নিয়ে যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদন সাপেক্ষে সেগুলো এজাহার হিসেবে গণ্য করার জন্য শাহবাগ থানার ওসিকে নির্দেশ দিয়েছেন বলে এ আইনজীবী জানিয়েছেন৷
মামলাতে বাদী আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন, গত ৩০ নভেম্বর ইস্ট লন্ডনের ওয়াটারলিলি গার্ডেন অডিটোরিয়ামে এক বক্তব্যে ড. তুহিন মালিক বলেছেন, ‘ তারা যেভাবে সংবিধানটাকে তাদের নির্বাচনী মেনিফেস্টো এবং দলীয় মেনিফেস্টোতে তৈরি করেছে এবং সেখানে যেভাবে নাস্তিকবাদিতা এবং ধর্মহীনতার বিষয় জুড়ে দেয়া হয়েছে এবং সেখানে বলা হয়েছে যে, এর তিনভাগের একভাগ অংশ প্রায় ৫২টির মতো অনুচ্ছেদ, স্পেশাল অনুচ্ছেদ, সবচেয়ে ইমপোটর্্যান্ট অনুচ্ছেদ কিয়ামত পর্যন্ত, বাংলাদেশ যতোদিন থাকবে কেউ সংশোধন করতে পারবে না৷ আইন করা হয়েছে, ৭ ক অনুচ্ছেদে বলে দেয়া হয়েছে, যদি কেউ এমনটা করে কিংবা করার চেষ্টা করে কিংবা সহায়তা করে, প্রত্যেকের মৃতু্যদণ্ডতুল্য রাষ্ট্রদ্রোহীতার অপরাধ হবে৷ মানে ফাঁসি হয়ে যাবে! তা হলে কী হবে? তা হলে কী হবে? মুজিবের কাহিনী, তার পরিবারের গানা-বাজনা, এইগুলোকে যে বাতিল করতে চাইবে তাদেরও ফাঁসি হবে৷ তা হলে সংবিধান পরিবর্তন, যতোদিন পৃথিবী আছে হবে না৷ আল হামদুলিল্লাহ৷ আল্লাহ যা চান মানুষ সেটা হয়তো বুঝে না৷ একমাত্র বিকল্প রয়ে গেছে সংবিধান বাতিল! কিসের জাতির পিতা, কিসের আদর্শ, কিসের চেতনা-কিচ্ছুই থাকবে না, ইনশাল্লাহ!
এই বক্তব্যের কারণে বাদী গোলাম রাব্বানী ক্ষুব্ধ হয়ে মামলা দু’টি দায়ের করেন৷ বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ শেষে বিচারক শাহবাগ থানার ওসিকে অভিযোগ দু’টি এজাহার হিসেবে গণ্য করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন৷
বাদীর পক্ষে ব্যারিস্টার নাজমুল হাসান চৌধুরী মামলা দু’টি দায়ের করেন৷ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী তুহিন মালিকের বিরুদ্ধে আদালতে সংবিধান নিয়ে কটূক্তি, ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত ও মানহানির পৃথক তিনটি লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়েছে৷তিন অভিযোগেই বলা হয়, গত ৩০ নভেম্বর পূর্ব লন্ডনের ওয়াটার লিলি গার্ডেন মিলনায়তনে এক আলোচনা সভায় সংবিধানের বিভিন্ন অনুচ্ছেদ নিয়ে কটূক্তি ও ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত ও মানহানিকর বক্তব্য দেন ড. তুহিন মালিক৷তার এই বক্তব্যে বাদীর ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত ও মানহানি হয়েছে এবং বক্তব্যটি রাষ্ট্রদ্রোহমূলক বলে অভিযোগ করেছেন ছাত্রলীগ নেতা গোলাম রাব্বানী৷তুহিন মালিককে সংবিধান বিশেষজ্ঞ হিসাবে প্রায়ই টিভি টকশোতে অংশ নিতে দেখা যায়৷