দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ৮ ডিসেম্বর: প্রশাসনের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের অপসারণ করে তাদেরকে বিচারের আওতায় আনার আহ্বান জানিয়েছেন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ- টিআইব এর নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান৷ টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, বর্তমানে ক্ষমতাসীনরা নানা অনিয়ম ও দুর্নীতিতে জড়িত৷ ক্ষমতায় থাকলে সম্পদের পাহাড় গড়া যায়-এই ধারণা আমাদের সমাজে প্রচলিত রয়েছে৷ সরকার ও দুদককে এমন উদ্যোগ নিতে হবে, যাতে করে এই ধারণা ভুল প্রমাণিত হয়৷ সোমবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের (টিএসসি) সামনে এক মানববন্ধনে তিনি এসব কথা বলেন৷ জাগ্রত বিবেক, দুর্জয় তারুণ্য, দুর্নীতি রুখবেই-এই প্রতিপাদ্য ধারণ করে টিআইবি এবং সংগঠনটির যুব স্বেচ্ছাসেবী শাখা ঢাকা ইয়েস গ্রুপ এ কর্মসূচি আয়োজন করে৷ মানববন্ধনে দুর্নীতিবিরোধী অবস্থানকে আরও সুদৃঢ় করার লক্ষ্যে এবং সাধারণ জনগণের মধ্যে দুর্নীতিবিরোধী সচেতনতা বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে ৯ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবস সরকারিভাবে পালনের আহ্বান জানানো হয৷
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) যতটুকু আইনি কাঠামো, সার্মথ্য ও শক্তি আছে তা দিয়ে সত্যিকারের দুর্নীতিবাজদের খুঁজে বের করতে হবে৷ দুদককে কোন শক্তির মাধ্যমে প্রভাবিত না হয়ে প্রয়োজনে আরও শক্তিশালী হতে হবে৷ দুর্নীতিবাজদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় নিয়ে আসা ছাড়া বিকল্প কোন পথ নেই৷ মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. নাসরিন আহমাদ বলেন, আমাদের চারপাশে প্রতিনিয়তই অসংখ্য ছোট-বড় ধরণের দুর্নীতির ঘটনা ঘটছে৷ সমাজের বড় লোকেরা যেভাবে ইয়াবা-সোনা চোরা চালানের মত দুর্নীতির কাজ করে থাকে, সেভাবে ছোট লোকেরাও ওজনে কম দিয়ে দুর্নীতি করে থাকে৷ শিক্ষা প্রতিষ্টানে প্রশ্নপত্র ফাঁসও এক ধরণের দুর্নীতি৷ শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা ফাঁস হওয়া প্রশ্নের জন্য দৌঁড়ঝাঁপ দেয়৷ এতে শিক্ষার্থীরা না বলে রুখে দাড়াঁলে প্রশ্নফাঁসের ঘটনা কমবে৷
তিনি বলেন, মানুষের বিবেক জাগ্রত না হলে সমাজে দুর্নীতি থামানো যাবে না৷ তরুণ সমাজকে এই দায়িত্ব নিতে হবে৷ এক্ষেত্রে নিজেদেরকে আগে সত্ হতে হবে৷ এসময় তিনি উপস্থিত তরুণ-শিক্ষার্থী-নাগরিকদের দুর্নীতিবিরোধী শপথ বাক্য পাঠ করান৷তিনি বলেন, সময়ের বির্তনে সব প্রতিষ্ঠানেরই স্বাধীনতা ও আইনি সংস্কারের প্রয়োজন হয়৷ তবে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে কোন আইনী সংস্কার করা হলে তা ভালো ফল বয়ে আনে না৷ একইসাথে আইনি সংস্কার করে দুদককে আরও বেশি শক্তিশালী ও কার্যকর করতে হবে৷ টিআইবির নির্বাহী উপ-পরিচালক ড. সুমাইয়া খায়ের বলেন, দুর্নীতি প্রতিরোধে সমাজ রাষ্ট্রের সকল স্তরেই সক্রিয় ও সোচ্চার হতে হবে৷ সরকারকে যেমনি দায়িত্ব পালন করতে হবে, নাগরিকদের সচেতনভাবে দায়িত্ব পালন করতে হবে৷ সরকার ও নাগরিক পরস্পরের সম্পূরক হিসেবে কাজ করলে দুর্নীতি দ্রুত লোপ পাবে৷