islami andulan_184786

দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ৫ ডিসেম্বর: ইসলাম নিয়ে কটূক্তিকারীদের ফাঁসির দণ্ড পাশ করার দাবি জানিয়েছেন চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করিম৷ আগামী সংসদ অধিবেশনে এ দাবি পাশ করার আহ্বান জানিয়ে ১৮ মার্চ বঙ্গভবন অভিমুখে যাত্রা ও রাষ্ট্রপতিকে স্মারকলিপি দেবে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ৷ শুক্রবার জুমআর নামাজের পর বায়তুল মোকাররম উত্তর গেটে বহিষ্কৃত মন্ত্রী আবদুল লতিফ সিদ্দিকীর ফাঁসি ও ধর্মদ্রোহীদের সর্বোচ্চ শাস্তির আইন প্রণয়নের দাবিতে আয়োজিত এক সমাবেশে তিনি এ দাবি জানান৷

সরকারকে সাবধান করে রেজাউল করিম বলেন, পৃথিবীর সবচেয়ে ক্ষমতাশালী ফেরাউন, সাদ্দাদরা ইসলামের বিরুদ্ধে গিয়ে টিকে থাকতে পারে নাই৷ আপনি লতিফ সিদ্দিকী ও তার মতো যারা আছে তাদের পক্ষ নিয়েও টিকে থাকতে পারবেন না৷জাতীয় সংসদে ধর্ম নিয়ে কটূক্তিকারীদের মৃতু্যদণ্ডের বিধান রেখে আইন পাস না হওয়া পর্যন্ত মোসলমানরা ঘরে ফিরবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতি সৈয়দ মুহম্মদ রেজাউল করিম৷ তিনি বলেন, নাস্তিকদের ঠাঁই বাংলার মাটিতে হবে না৷

সরকারের সমালোচনা করে রেজাউল বলেন, এই সরকার মোসলমানদের পক্ষে কাজ করেনি৷ কিন্তু সরকার বন্দুকের নল দিয়ে আন্দোলন ঠেকাতে পারবে না৷ আইন পাস করে ধর্ম নিয়ে কটূক্তিকারীদের মৃতু্যদণ্ড জনসম্মুখে বাস্তবায়ন করতে হবে৷

সরকারকে সাবধান করে রেজাউল করিম বলেন, আমি সরকারকে মনে করিয়ে দিতে চাই- পৃথিবীর সবচেয়ে ক্ষমতাশালী ফেরাউন, সাদ্দাদরা ইসলামের বিরুদ্ধে গিয়ে টিকে থাকতে পারে নাই৷ আপনিও লতিফ সিদ্দিকী ও তার মতো যারা আছে তাদের পক্ষ নিয়ে টিকে থাকতে পারবেন না৷ ২৩ নভেম্বর লতিফ সিদ্দিকী বাংলাদেশে এলে প্রশাসন তাকে গ্রেপ্তার করেনি৷ বরং কৌশলে তাকে আত্মসমর্পণ করার সুযোগ করে দেয়৷হরতাল প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিভিন্নভাবে বাধা সৃষ্টির পরও শেষ পর্যন্ত সমাবেশের অনুমতি দেয়ায় রোববার হরতাল ডত্যাহার করা হচ্ছে৷ তবে আগামী সংসদ অধিবেশনে আইন পাস না হলে ১৮ মার্চ বঙ্গভবন অভিমুখে গণমিছিল ও রাষ্ট্রপতি বরাবর স্মারকলিপি পেশ করা হবে৷

সমাবেশে গণমাধ্যমের বিষোদগার করেন দলটির অঙ্গসংগঠন শ্রমিক আন্দোলনের সভাপতি অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন৷ তিনি বলেন, সংবাদপত্রে কতো আজে বাজে খবর আসে৷ ভালো খবরগুলো আসে না৷ এই চোর সরকার অনেকগুলো সংবাদপত্র,টেলিভিশনের লাইসেন্স দিয়েছে৷তাদের নিয়ে লিখবেন, লিখেন৷ নুন খেয়েছেন গুন তো গাইবেন৷ কিন্তু ভালো খবরও লিখেন৷

সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন- সংগঠনের প্রেসিডিয়াম সদস্য প্রিন্সিপাল লৈসয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল-মাদানী, মহাসচিব মাওলানা ইউনূস আহমেদ, যুগ্ম মহাসচিব অধ্যাপক মাওলানা মাহবুবুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা ফজলুল হক মৃধা, ঢাকা মহানগরের সভাপতি মাওলানা এটিএম হেমায়েত উদ্দীন, শ্রমিক আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক খলিলুর রহমান প্রমুখ৷সমাবেশ করতে দেয়ায় হরতালের কর্মসূচি থেকে সরে এসে আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত মন্ত্রী আবদুল লতিফ সিদ্দিকীর ফাঁসি ও ধর্মদ্রোহীদের সর্বোচ্চ শাস্তির আইন প্রণয়নের দাবিতে ৩১ দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন রেজাউল করিম৷

কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে ৯ ডিসেম্বর জেলায় জেলায় বিক্ষোভ ও সমাবেশ, ১২ ডিসেম্বর সিলেট বিভাগীয় মহাসমাবেশ, ২৫ ডিসেম্বর থানায় থানায় বিক্ষোভ এবং ২৩-২৫ ডিসেম্বর ঢাকা টু কুড়িগ্রাম রোডমার্চ, ৫-৭ জানুয়ারি ঢাকা টু সিলেট রোডমার্চ, ৭-৯ জানুয়ারি ঢাকা টু খুলনা রোডমার্চ, ১০-১১ জানুয়ারি খুলনা টু বরিশাল রোডমার্চ, ২১-২৩ জানুয়ারি ঢাকা টু চট্রগ্রাম রোডমার্চ৷কটুক্তিকারীদের বিরুদ্ধে জনমত সৃষ্টির লক্ষে ১৫-২৮ ফেব্রুয়ারি সারাদেশে গণস্বাক্ষর অভিযান৷ এছাড়াও রয়েছে আগামী সংসদ অধিবেশন চলাকালীন সংসদ অভিমুখে গণমিছিল ও স্মারকলিপি দেবেন৷সমাবেশে সারাদেশ থেকে চরমোনাই পীরের দলের হাজার হাজার নেতাকর্মী সমাবেশে যোগ দেন৷

রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশের অনুমতি না পেয়ে পল্টন মোড়ে সমাবেশ করে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ৷ সমাবেশ চলাকালে প্রায় দুই ঘন্টা জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে থেকে শুরু করে দৈনিক বাংলার মোড় পর্যন্ত যান চলাচল বন্ধ ছিল৷ ফলে ভোগান্তিতে পড়েন পথচারীরা৷শুক্রবার বেলা দেড়টা থেকে সমাবেশ শুরু হয়৷ সাড়ে তিনটার দিকে সমাবেশ শেষ হয়৷ সেখানে বক্তব্য দেওয়ার সময়ঢ ইসলামী আন্দোলনের আমির চরমোনাই পীর রেজাউল করীম বলেন, আমরা আগে বলেছিলাম, সমাবেশ করতে না দিলে রোববার হরতাল হবে৷ কিন্তু সমাবেশ হওয়ায় রোববার হরতাল হবে না৷বৃহস্পতিবার রাজধানীর পুরানা পল্টনে দলীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ইসলামী আন্দোলনের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানি আজ সমাবেশ করতে বাধা দিলে আগামী রোববার হরতালের হুমকি দেন৷

মন্ত্রিসভা ও আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কৃত আবদুল লতিফ সিদ্দিকী দেশে ফেরার পরদিন ২৫ নভেম্বর বায়তুল মোকাররমে এক বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে ধর্মদ্রোহীদের বিরুদ্ধে সংসদে আইন পাস করার দাবিতে ইসলামী আন্দোলন ৫ ডিসেম্বর সোহরাওয়াদী উদ্যানে সমাবেশ ও সংসদ অভিমুখে পদযাত্রা কমর্সূচি দিয়েছিল৷ কিন্তু দলটি গতকাল রাত ১০টা পর্যন্ত সমাবেশের জন্য পুলিশের অনুমতি পায়নি৷ পরে তারা পল্টন মোড়ে সমাবেশ করে৷সমাবেশের সময় ওই এলাকায় পুলিশ মোতায়েন ছিল৷ কর্তব্যরত গুলিস্তান পুলিশ ফাঁড়ির দায়িত্বরত (ইনচার্জ) সার্জেন্ট নাসিরউদ্দিন বলেন, যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে তাঁদের প্রস্তুতি যথেষ্টে ছিল ৷