chief-justice-mojammel-hossen

দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ৫ ডিসেম্বর: সহিংসতা ও নির্যাতনের শিকার নারীরা যেন ন্যায়বিচার পান, এ জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে দায়িত্বশীল হতে বলেছেন প্রধান বিচারপতি মো.মোজাম্মেল হোসেন৷ তিনি বলেন, নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতা একটি বৈশ্বিক সমস্যা৷ এর সমাধানে কেবল আইন করলেই চলবে না, সবাইকে দায়িত্বশীল ও সচেতন হতে হবে এমনটা উল্লেখ করে প্রধান বিচারপতি বলেন, নারী নির্যাতন বন্ধে শিক্ষা, নারীর ক্ষমতায়ন ও কর্মসংস্থানের দরকার৷

শুক্রবার সকালে রাজধানীর একটি হোটেলে পারিবারিক ও যৌন সহিংসতার শিকার মেয়েদের বিচারের অধিকার শীর্ষক একটি কর্মশালার উদ্বোধনী অধিবেশনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধান বিচারপতি এ আহ্বান জানান৷আন্তর্জাতিক উইমেন জাজেস অ্যাসোসিয়েশন ও বাংলাদেশ উইমেন জাজেস অ্যাসোসিয়েশন যৌথভাবে এই কর্মশালার আয়োজন করে৷

বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থা সবসময়ই নারীর অধিকার ও স্বাধীনতা রক্ষা এবং যেকোনো ধরনের নারী নির্যাতনের বিপক্ষে থাকবে বলে মন্তব্য করেন প্রধান বিচারপতি মো. মোজাম্মেল হোসেন৷প্রধান বিচারপতি বলেন, নারীর ক্ষমতায়ন এবং লিঙ্গ সমতার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ বিশ্বের অন্যান্য দেশের কাছে এখন অনুকরণীয়৷এ সময় নারী নির্যাতনের বিচারের মত স্পর্শকাতর বিষয়গুলোতে বিচারকদের আরো বেশি সতর্ক থাকা কর্তব্য বলেও মন্তব্য করেন তিনি৷

এছাড়া নারীদের গৃহ এবং যৌন নির্যাতনের মত বিষয়গুলো প্রতিরোধে সামাজিক সচেতনতা বাড়ানোর প্রতিও জোর দেন মোজাম্মেল হোসেন৷

প্রধান বিচারপতি বলেন,পরিবার থেকে শুরু করে সমাজ-রাষ্ট্র সবাইকে এ ব্যাপারে সচেতন হতে হবে৷ আশার বিষয় হলো, বাংলাদেশে শিক্ষার হার বাড়ছে৷নারীর ক্ষমতায়নে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে৷ বাংলাদেশের ইতিহাসের অর্ধেকেরও বেশি সময় ধরে প্রধানমন্ত্রী, বিরোধীদলীয় নেত্রী সবাই নারী৷ তৈরি পোশাক খাতের ৮০ ভাগ শ্রমিকই এখন নারী৷

প্রধান বিচারপতি বলেন, বাংলাদেশের নারীদের সমান অধিকার দিয়েছে সংবিধান৷ সেখানে নারী-পুরুষের সমান অধিকার ও মর্যাদার কথা বলা হয়েছে৷ এ ছাড়া নারীর প্রতি সহিংসতা বন্ধে আন্তর্জাতিক আইনগুলোতে বাংলাদেশ স্বাক্ষর করেছে৷ নারীরা যেন সুবিচার পান, সে জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে দায়িত্বশীল ও সচেতন হতে হবে৷

অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা বলেন, সংবিধান নারী-পুরুষকে সমান অধিকার দিলেও অশিক্ষা, দারিদ্র্য বাংলাদেশের নারীদের ন্যায়বিচার পাওয়ার ক্ষেত্রে বাধা৷ এ দেশের সহিংসতার শিকার একটি মেয়েকে থানার পুলিশ থেকে শুরু করে সব ক্ষেত্রে সংকট মোকাবিলা করতে হয়৷ পদে পদে সবাই বোঝানোর চেষ্টা করে যেন মেয়েটাই দায়ী৷ যৌন নির্যাতনের ক্ষেত্রে মেয়েটিকে কীভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করতে হবে, এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্টদের প্রশিক্ষণ নেই্তএমনটা উল্লেখ করে বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা আরও বলেন, নির্যাতিত নারীর বিচার পেতে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখতে পারেন আদালত৷ এ ধরনের কর্মশালা এতে সহায়ক শক্তি৷