দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ৫ ডিসেম্বর: বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নেতা-কর্মীদের প্রতি গত্বাঁধা’ স্লোগান না দিয়ে ৯০ দশকের আদলে হাসিনা বিরোধী নতুন নতুন স্লোগান তৈরি করার আহ্বান জানিয়েছেন৷
সরকার দুঃস্বপ্নের মধ্যে রয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, তারা কথায় কথায় ষড়যন্ত্র দেখতে পায়৷ আসলে তারা সব সময় দুঃস্বপ্ন দেখে৷ যে কোনো মুহূর্তে তাদের প্রাসাদ ভেঙে যেতে পারে- এই ভয়ে সব সময় তটস্থ থাকে৷
গণতন্ত্র মুক্তি দিবস উপলক্ষে শুক্রবার সন্ধ্যায় জাতীয় েপ্রসক্লাব মিলনায়তনে বিএনপি আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন৷মির্জা ফখরুল বক্তব্য শেষ করেন নব্য স্বৈরাচার হাসিনা নিপাত যাক স্লোগান দিয়ে৷১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর স্বৈরশাসক এরশাদের পতন হয়েছিল৷ ওই দিনটি উপলক্ষে বিএনপি এই আলোচনার আয়োজন করে৷ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নব্য স্বৈরাচার আখ্যা দিয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, গণতন্ত্র মুক্তির এই দিবসে আমাদের শপথ নিতে হবে, কোনো অবস্থাতেই এই নব্য স্বৈরাচারকে আমরা ছাড় দেব না৷ দুর্বার গণআন্দোলনের মধ্য দিয়ে সবার কাছে গ্রহণযোগ্য একটি নির্বাচন দিতে বাধ্য করবো৷
দেশ ভয়াবহ সংকটের মধ্যে পড়েছে দাবি করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমেরিকায় একজন কৃষ্ণাঙ্গ যুবকের মৃতু্যতে লাখ লাখ মানুষ আজ মিছিল করেছে৷ অথচ শেখ হাসিনার সরকার হাজার হাজার মানুষকে হত্যা করলেও জনগণ মাঠে নামছে না৷ আমাদের মাঠে নামতে হবে৷ নব্য স্বৈরাচার শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মিছিল করতে হবে হাসিনা নিপাত যাক, আওয়ামী লীগ নিপাত যাক৷
ফখরুল বলেন, ৫ জানুয়ারির ভোটবিহীন নির্বাচনের বরাত দিয়ে তারা ক্ষমতায় টিকে থাকতে চায়৷ কিন্তু এ দেশের মানুষ কোনো অবস্থাতেই সেটি হতে দেবে না৷ মানুষ প্রস্তুত হয়ে আছে৷ এখন তাদের কাছে যেতে হবে৷ তাদের ঐক্যবদ্ধ করে আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়েত হবে৷ সেটিই হবে স্বৈরাচার পতন দিবসের সব চেয়ে বড় শপথ৷অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে বলেন, এরশাদের আমলের চেয়ে দেশ এখন আরও ভয়াবহ স্বৈরাচারের যাঁতাকলে৷ তিনি বলেন, হাসিনার বিরুদ্ধে স্লোগান উঠতে হবে৷আওয়াজ তুলুন, নব্য স্বৈরাচার হাসিনা নিপাত যাক৷ উত্তর-দক্ষিণ স্লোগান না দিয্ে#২৪৯২; এ ধরনের স্লোগান দিতে হবে৷
তিনি বলেন, একদিনে স্বৈরশাসক এরশাদের পতন হয়নি৷ দীর্ঘ ৯ বছর সংগ্রাম করে জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে এরশাদের পতন হয়েছে৷
মির্জা ফখরুল বলেন, স্বৈরাচার এরশাদকে বাঁচিয়ে রাখতে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বেইমানী করে নির্বাচনে গিয়েছিলেন৷ তাঁর সে ঋণ শোধ করতে এরশাদ ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন৷যুক্তরাষ্ট্রে আটক করার সময় পুলিশের হাতে এক কৃষ্ণাঙ্গ নাগরিকের মৃতু্যর পর বিক্ষোভের কথা উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, এ দেশে হাজার হাজার মানুষের মৃতু্য হয়, শত শত মায়ের কান্না শোনা যায়, কিন্তু কোনো প্রতিক্রিয়া দেখা যায় না৷
নেতা-কর্মীদের প্রতিদিন সাধারণ মানুষের ঘরে ঘরে গিয়ে দেশের অবস্থা তুলে ধরার পরামর্শ দেন মির্জা ফখরুল৷ তিনি বলেন, মানুষের কাছে তুলে ধরতে হবে প্রতিবাদ, বিদ্রোহ ছাড়া দেশ রক্ষা হবে না৷
মির্জা ফখরুল বলেন, শপথ নিতে হবে, কোনোভাবেই এদের ছাড় দেব না৷ বাধ্য করব, সবার অংশগ্রহণে নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে৷মির্জা ফখরুল অভিযোগ করেন, বিএনপির আন্দোলন যখনই দানা বাঁধে তখন সরকার বলে যুদ্ধাপরাধীদের বাঁচানোর জন্য বিএনপি আন্দোলন করছে৷ তিনি দাবি করেন, বিএনপি কাউকে রক্ষা করার জন্য আন্দোলন করে না৷ বিএনপির আন্দোলন গণতন্ত্র রক্ষার জন্য৷ তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রের সব দরজাুজানালা বন্ধ করে দিচ্ছে৷ তারা একদলীয় শাসনের দিকে যাচ্ছে৷
মির্জা ফখরুল দাবি করেন, সরকারের পায়ের নিচে মাটি নেই৷ এ কারণে তারা কথায় কথায় ষড়যন্ত্র দেখে৷ দুঃস্বপ্ন দেখে ষড়যন্ত্র হচ্ছে৷
দলের প্রচার সম্পাদক জয়নুল আবদিন ফারুকের সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া, যুগ্ম মহাসচিব আমান উল্লাহ আমান, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নাজিম উদ্দীন আলম, যুব বিষয়ক সম্পাদক সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক হাবীব-উন নবী খান সোহেল, ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি, সহ তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক হাবীবুর রহমান হাবীব, সাবেক ছাত্র নেতা মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল, সাইফুদ্দিন আহমেদ মনি, মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক শিরিন সুলতানা, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু, ছাত্র দলের সভাপতি রাজিব আহসান প্রমুখ৷