4-12-2014-muhit

দৈনিকবার্তা-সিলেট ৪ ডিসেম্বর: বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাজনৈতিক দলগুলোকে বের করে দেওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত৷ বৃহস্পতিবার সকালে সিলেটে নবনির্মিত কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার পরিদর্শনকালে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন৷

গত ২০ নভেম্বর সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও ড্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের দুই পক্ষে সংঘর্ষে ছাত্রলীগের এক কর্মী নিহত হওয়া প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী বলেন, শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয় দেশের মধ্যে সেরা একটি বিশ্ববিদ্যালয় ছিল৷ এই বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো সেশনজট ছিল না৷ কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজনৈতিক দলগুলো ঢোকায় সংঘর্ষের মতো ঘটনা ঘটছে৷ তাই রাজনৈতিক দলগুলোকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বের করে দেওয়া উচিত৷ এ চিন্তা এখন করতে হবে৷

দুর্নীতিতে বাংলাদেশের দুই ধাপ এগিয়ে যাওয়া প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী বলেন, দেশের মানুষের অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো হলে দুর্নীতি কমে৷ তাই আমাদের অর্থনৈতিক অবস্থা আরও ভালো হওয়া দরকার৷দুর্নীতি কমাতে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন ৬২ শতাংশ বৃদ্ধি করা হয়েছে জানিয়ে আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, ‘আমরা পাঁচ বছর আগে সরকারি অফিসগুলোতে বেতন-ভাতা বাড়িয়েছিলাম, কিন্তু এর পরও দুর্নীতি কমেনি, এটা দুঃখজনক৷বিগত পাঁচ বছরে সরকারি অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা ৬২ শতাংশ পর্যন্ত বাড়লেও সে হারে দুর্নীতি কমেনি বলে মন্তব্য করেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল অব্দুল মুহিত৷

তবে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো হলে দুর্নীতি আরো কমবে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, সেই লক্ষ্যেই সরকার কাজ করছে৷ ফলে শীঘ্রই দেশে দুর্নীতির হার কমে আসবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি৷সরকারি অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা কম থাকাটা দুর্নীতির অন্যতম কারণ ছিল উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, সেই লক্ষ্যে গত পাঁচ বছর থেকে সরকার ৬২ শতাংশ পর্যন্ত বেতন-ভাতা বৃদ্ধি করেছে৷ এর পরও দুর্নীতি সেই হারে কমেনি৷দুর্নীতিতে আমরা উপরে উঠেছি কিংবা নিচে নেমেছি এখনই সেই বিচার করা খুব সহজ নয় বলেও মন্তব্য করেন অর্থমন্ত্রী৷

তিনি বলেন,দেশে দুর্নীতির চাকা কমাতে হলে সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে হবে৷দুর্নীতির বিশ্বজনীন ধারণা সূচক অনুযায়ী বাংলাদেশে দুর্নীতি বেড়েছে৷

প্রসঙ্গত,বিশ্বের দুর্নীতিগ্রস্ত দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১৪তম৷ গত বছর বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ১৬তম৷জার্মানির বার্লিনভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল (টিআই) বিশ্বজুড়ে দুর্নীতির যে ধারণা সূচক প্রকাশ করেছে, তাতে এ তথ্য উঠে এসেছে৷ বুধবার আনুষ্ঠানিকভাবে এটি প্রকাশ করে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)৷ দুর্নীতির ধারণা সূচক প্রকাশ অনুষ্ঠানে এর বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান৷ বক্তব্য দেন সংস্থাটির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান সুলতানা কামাল৷ এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য এম হাফিজউদ্দিন খান ও এটিএম শামসুল হুদা৷

প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, সূচকে অন্তর্ভুক্ত ১৭৫টি দেশের মধ্যে ঊধর্্বক্রম (ভালো থেকে খারাপের দিকে) অনুযায়ী, বাংলাদেশের অবস্থান ১৪৫তম৷ গত বছর এ তালিকায় বাংলাদেশ ১৩৬তম অবস্থানে ছিল৷ এ ক্ষেত্রে নয় ধাপ নিচে নেমেছে বাংলাদেশ৷ আর সূচকের ১০০ মানদণ্ডের মধ্যে বাংলাদেশের স্কোর বা নম্বর ২৫৷ গত বছর বাংলাদেশের নম্বর ছিল ২৭৷টিআইবি বলছে, দুর্নীতিবিরোধী অঙ্গীকার অনুযায়ী পদক্ষেপ গ্রহণ, দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) প্রত্যাশিত সক্রিয়তা ও কার্যকারিতা এবং দুর্নীতিতে জড়িতদের বিচারের মুখোমুখি করার ঘাটতি, রাজনৈতিক ছত্রচ্ছায়ায় ব্যবসা প্রসার, ভূমি, নদী ও জলাশয় দখল, জাতীয় সংসদসহ জবাবদিহিমূলক প্রতিষ্ঠানের দুর্বলতা, স্বার্থের দ্বন্দ্ব, কালোটাকা সাদা করা ও বিদেশে অর্থ পাচারের সুযোগের কারণে দুর্নীতির ধারণা সূচকে বাংলাদেশের অবস্থানের অবনতি ঘটেছে৷বাংলাদেশ দুর্নীতিতে ১৪তমবাংলাদেশে দুর্নীতিবিরোধী নানা কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত প্রতিষ্ঠান টিআইবি জানিয়েছে, দুর্নীতির ধারণা সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান নির্ণয়ের ক্ষেত্রে ২০১১ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে ২০১৪ সালের আগস্ট পর্যন্ত সময়কালের নানা তথ্য-উপাত্ত ব্যবহার করা হয়েছে৷

কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার পরিদর্শনকালে অর্থমন্ত্রী সাংস্কৃতিক কর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন৷সিলেটে নতুনভাবে নির্মিত এই শহীদ মিনার পরিদর্শনকালে অন্যদের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন, মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বদর উদ্দিন আহমদ কামরান, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আশফাক আহমদ, সিলেট জেলা পরিষদের প্রশাসক আব্দুজ জহির চৌধুরী সুফিয়ান, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরী প্রমুখ৷