rice_47521

দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ৩ ডিসেম্বর: সরকার ৫০ হাজার টন চাল রপ্তানির অনুমোদন দিলেও প্রাথমিকভাবে এর অর্ধেক আমদানি করছে শ্রীলংকা৷শ্রীলঙ্কার সঙ্গে ২৫ হাজার মেট্রিক টন মোটা চাল রপ্তানির চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে বাংলাদেশ৷ বুধবার সচিবালয়ে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়৷ প্রতি টন চালের দাম রাখা হচ্ছে ৪৫০ মার্কিন ডলার৷

বাংলাদেশের পক্ষে চুক্তি স্বাক্ষর করেন খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. সারওয়ার খান৷ শ্রীলঙ্কার পক্ষে স্বাক্ষর করেন লঙ্কা শাতোসা লিমিটেডের চেয়াররম্যান নালিন ফার্নান্দো৷চুক্তি স্বাক্ষর শেষে খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম বলেন, আজকের দিনটি আমাদের জন্য আনন্দের দিন৷ কারণ, বাংলাদেশ খাদ্য ঘাটতির দেশ থেকে খাদ্য রপ্তানির দেশে পরিণত হয়েছে৷

মোটা চাল রপ্তানির প্রেক্ষিত বর্ণনা করে মন্ত্রী বলেন, ‘ইতোপূর্বে শ্রীলঙ্কা বাংলাদেশ থেকে চাল আমদানির প্রস্তাব দেয়৷ তারই আলোকে আমার চাল রপ্তানিতে সম্মত হই৷মন্ত্রী বলেন, ‘শ্রীলঙ্কায় ৫০ হাজার মেট্রিক টন চাল রপ্তানির কথা থাকলেও আপাতত ২৫ হাজার মেট্রিক টন চাল রপ্তানি করা হচ্ছে৷ কারণ, শ্রীলঙ্কায় বর্তমানে অনাকাক্ষিত বৃষ্টিপাত হচ্ছে৷ এজন্য তারা এতো চাল একসঙ্গে নিতে পারছে না৷ তাই আপাতত ২৫ হাজার মেট্রিক টন রপ্তানি করা হচ্ছে৷ পরে সুবিধামতো সময়ে বাকি ২৫ হাজার মেট্রিক টন রপ্তানি করা হবে৷যেকোন সময়ে যেকোন বন্ধুরাষ্ট্রের কাছে বাংলাদেশের এক লাখ টন চাল রপ্তানির সক্ষমতা রয়েছে বলেও দাবি করেন মন্ত্রী কামরুল৷

এরআগে গত ২৭ অক্টোবর মন্ত্রী বলেছিলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে এ ধরনের প্রতিটন চাল ৪০০-৪২০ ডলারে বিক্রি হয়৷ কিন্তু আমাদের সরকার ৪৫০ টাকা দরে বিক্রি করছে, যা অত্যন্ত লাভজনক৷খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম জানিয়েছেন, আগামী কয়েক দিনের মধ্যে দুটি জাহাজ করে চাল রপ্তানি শুরু হবে৷ মন্ত্রী অনুষ্ঠানে বলেন, খাদ্য ঘাটতি পুরণ করার পর আমরা চাল রপ্তানি করতে যাচ্ছি৷ ৪৫০ ডলার মূল্যে চাল রপ্তানি করা হচ্ছে৷ মন্ত্রিসভা কমিটির অনুমোদনের পর গত ২৭ অক্টোবর সরকার শ্রীলঙ্কায় সিদ্ধ চাল রপ্তানির চূড়ান্ত অনুমতি দেয়৷

রপ্তানির চালের পরিমাণ কমার কারণ জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, শ্রীলংকায় এখন অনাকাঙ্খিত বৃস্টির মৌসুম চলছে, এ সময় জাহাজ থেকে মালামাল খালাস করতে সমস্যা হয়৷ আপাতত তারা ২৫ হাজার মেট্রিক টন চাল আমদানি করবে, পরে বাকিটা নেবে৷তিনি জানান, বর্তমানে দেশে সাড়ে ১২ লাখ টন খাদ্যশষ্য মজুদ রয়েছে, এর মধ্যে ১১ লাখ মেট্রিক টন চাল৷ এক লাখ মেট্রিক টনের বেশি চাল রপ্তানির জন্য আমরা প্রস্তুত আছি, যে কোনো সময় এ চাল আমরা রপ্তানি করতে পারব৷

খাদ্যমন্ত্রী কামরুল এর আগে জানিয়েছিলেন, বর্তমানে আন্তজার্তিক বাজারে প্রতি মেট্রিক টন চালের মূল্য ৪০০ থেকে ৪২০ ডলার৷ শ্রীলঙ্কায় যে চাল রপ্তানি করা হবে তার উত্‍পাদন খরচ ৪৩৬ ডলার৷ এ হিসাবে প্রতি মেট্রিক টনে ১৪ ডলার লাভ থাকবে৷বাংলাদেশ প্রতি বছর স্বল্প পরিমাণে সুগন্ধি চাল রপ্তানি করলেও সরকারিভাবে বড় পরিসরে সিদ্ধ চাল রপ্তানি এই প্রথম৷ ফিলিপিন্সও সমপ্রতি বাংলাদেশ থেকে চাল ও আলু আমদানির আগ্রহের কথা জানিয়েছে৷খাদ্য সচিব মুশফেকা ইকফাত্‍সহ ঊধর্্বতন কর্মকর্তারা চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন৷