স্পিকার

দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ৩ ডিসেম্বর: দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অর্ধেকের বেশি আসনের প্রার্থীদের বিনা প্রতিন্দ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়া নিয়ে সমালোচনার জবাবে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেছেন, এতে আইনের কোনো ব্যত্যয় ঘটেনি৷বুধবার জাতীয় সংসদের পার্লামেন্ট মেম্বারস ক্লাবে পার্লামেন্ট জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের মিট দ্য প্রেসে কমনওয়েলথ পার্লামেন্টারি অ্যাসোসিয়েশন (সিপিএ) ও ইন্টার পার্লামেন্টারি ইউনিয়নের (আইপিইউ) বাংলাদেশের বিজয়ে পার্লামেন্টারি জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত অনুষ্ঠানে একথা বলেন তিনি৷ সিপিএ চেয়ারপারসন হিসেবে স্পিকার ও আইপিইউ সভাপতি হিসেবে সংসদ সদস্য সাবের হোসেন চৌধুরীকে অভিনন্দন জানিয়ে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়৷

বিএনপিবিহীন ওই নির্বাচনের বিনা প্রতিদ্বদ্বিতায় রেকর্ড সংখ্যক প্রার্থীর নির্বাচিত হওয়ার বিষয়ে শিরীন শারমিন বলেন, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ার বিষয়ে বিধান আছে৷আইনি কাঠামোর মধ্যেই এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে৷ এতে দশম সংসদ নিয়ে যে কলঙ্কের কথা বলা হয়, তা ঠিক নয়৷৫ জানুয়ারির ওই নির্বাচন বৈধ হয়নি বলে বিএনপির দাবি৷ বিনা প্রতিদ্বনি্দ্বতায় ১৫৩ আসনের প্রার্থী নির্বাচিত হওয়ায় মানুষ ভোট দেওয়ার অধিকার হারিয়েছে বলে মনে করেন নাগরিক সমাজের অনেকে৷

দশম সংসদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত শিরীন শারমিন দাবি করেন, সাংবিধানিক ধারা অক্ষুন্ন রাখতে ওই নির্বাচন না করার বিকল্প ছিল না৷যত প্রশ্নই উঠুক না কেন, নির্বাচনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা যদি রক্ষা না পেত তাহলে কী হত? সাংবিধানিক প্রক্রিয়ায় ৫ জানুয়ারির নির্বাচন যদি করতে না পারতাম, তাহলে আজ কী হত? সাংবিধানিক ধারা অব্যাহত থাকত?

সিপিএ ও আইপিইউ’র মতো প্রতিষ্ঠানে বাংলাদেশের বিজয় বাংলাদেশে গণতন্ত্র অক্ষুন্ন থাকার প্রমাণ বলে দাবি করেন স্পিকার৷

অনুষ্ঠানে স্পিকার বলেন, ৫ জানুয়ারির নির্বাচন না হলে বাংলাদেশের গণতন্ত্র থাকতো না ৷ এ নির্বাচন হয়েছে বলেই গণতন্ত্র রক্ষা পেয়েছে৷ আমাদেরকে গণতন্ত্রের চর্চাকে আরো গতিশীল করতে হবে৷তিনি বাংলাদেশের জাতীয় সংসদকে বিশ্বমানের সংসদে রূপান্তরিত করার অভিপ্রায় ব্যক্ত করে বলেন, এ বিজয় বাংলাদেশের মানুষের বিজয়৷ এটি সরকারের বিভিন্ন অর্জনের স্বীকৃতিও৷

শিরীন শারমিন আইপিইউ চেয়ারপারসন নির্বাচিত হয়েছেন সমপ্রতি৷ এরপর আইপিইউর প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন সংসদ সদস্য সাবের হোসেন চৌধুরী৷

অনুষ্ঠানে সাবের বলেন, বাংলাদেশ এখন বিশ্বের ১৯২টি দেশের ৬৫০ কোটি মানুষের নেতৃত্ব দিচ্ছে৷ একইসঙ্গে প্রতিনিধিত্ব করছে সারা বিশ্বের ৪৫ হাজার সংসদের সদস্যদের৷কমনওয়েলথ পার্লামেন্টারি অ্যাসোসিয়েশন (সিপিএ) ও ইন্টার পার্লামেন্টারি ইউনিয়নের (আইপিইউ) শীর্ষ পদ জয়লাভ করে বাংলাদেশ এ নেতৃত্ব পেয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি৷

সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, এ দুটি সংগঠন বিশ্বের সংসদীয় গণতান্ত্রিক দেশগুলোর প্রতিষ্ঠান৷ একইসঙ্গে একটি দেশে দুটি সংগঠনের শীর্ষ পদ থাকার ঘটনা বিরল৷ এর মধ্য দিয়েই বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক সুদৃঢ় ভিত্তির বিষয়টি স্পষ্ট হয়৷

পার্লামেন্ট জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি উত্তম চক্রবর্তীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাবি্ব মিয়া, পার্লামেন্ট জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক কামরান রেজা চৌধুরী, সাবেক সভাপতি শফিকুল ইসলাম সবুজ, সাবেক সাধারণ সম্পাদক আশীষ সৈকত প্রমুখ৷এই কাজটি করতে সবার সহযোগিতা প্রত্যাশা করে আওয়ামী লীগের এই সংসদ সদস্য বলেন, আমাদের সংসদ সদস্যদের বলা হয় দলের সংসদ সদস্য৷ কিন্তু আমরা যে জনগণের সংসদ সদস্য সেটা গণমাধ্যমে বলা হয় না৷ সরকার ও সংসদের মধ্যে ভিন্নতা রয়েছে৷ এটা তুলে ধরতে হবে৷