সাগর-রুনী

দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ০২ ডিসেম্বর: সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো আসামি তানভীর রহমানের জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট৷এ বিষয়ে দায়ের করা এক আবেদনের শুনানি শেষে বিচারপতি মো. নিজামুল হক ও বিচারপতি এসএইচ মো.নুরুল হুদা জায়গীরদারের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ মঙ্গলবার এ আদেশ দেন৷

আদালতে তানভীরের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট ফাওজিয়া করিম ফিরোজ৷ তিনি জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের পক্ষ থেকে তানভীরের জন্য আদালতে শুনানি করেছেন৷এর আগে সোমবারও তিনি তানভীরের পক্ষে শুনানি করেন৷ সে সময় আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল অ্যাডভোকেট মাহবুবে আলম ,ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত তালুকদার ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল শহিদুল ইসলাম খান শুনানিতে ছিলেন৷

হাই কোর্টের একটি বেঞ্চে জামিন চেয়ে বিফল হওয়ার পর এ বেঞ্চে এসেছিল আসামিপক্ষ৷ গত ২ সেপ্টেম্বর বিচারপতি মো. রেজাউল হক ও বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুরের বেঞ্চ তানভীরের জামিন আবেদন ফিরিয়ে দিয়েছিল৷তার আগে তানভীরের জামিন চেয়ে গত ১৩ জুলাই রিট আবেদন করেছিল মানবাধিকার কমিশন৷ বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দার ও বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকারের বেঞ্চে ওইদিন শুনানিও হয়৷

হাই কোর্ট ও বিচারিক আদালতে বারবার আবেদন করেও জামিন না পাওয়ার যুক্তি দেখিয়ে ‘ব্যতিক্রমধর্মী ওই জামিনের আবেদন করা হয়৷ আইনজীবীদের দেয়া আদালতের পরামর্শে তানভীরের জামিনের ওই আবেদন করা হয়৷সাগর-রুনির কথিত পারিবারিক বন্ধু তানভীর রাজধানীর স্কলাসটিকা স্কুলের ডেপুটি ম্যানেজার ছিলেন৷ পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে আদালতে হাজির করলে ২০১২ সালের ১০ অক্টোবর বিচারক তাকে সাত দিনের রিমান্ডে পাঠান৷তার আইনজীবীর দাবি, তানভীরকে ওই বছরের ১ অক্টোবর আটক করা হলেও আদালতে হাজির করা হয় ১০ দিন পর৷এর মাঝে বিচারিক আদালত ও হাই কোর্টে কয়েকদফা জামিনের আবেদন করে ব্যর্থ হন তানভীর৷

ছেলেকে বিনা-বিচারে আটকে রাখার অভিযোগ এনে গত ৯ ফেব্রুয়ারি তানভীরের বাবা মাহবুবুর রহমান জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সহযোগিতা চেয়ে আবেদন করেন৷ সেই আবেদন বিবেচনায় নিয়েই কমিশন ও এর চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান রিট আবেদন করেন৷২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি রাতে রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজারে নিজেদের ভাড়া বাসায় খুন হন মাছরাঙা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক সাগর এবং তার স্ত্রী এটিএন বাংলার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক রুনি৷

হত্যা রহস্যের কিনারা করতে না পারায় হাই কোর্টের নির্দেশে ২০১২ সালের ১৮ এপ্রিল মামলাটি পুলিশ থেকে র্যাবে স্থানান্তর করা হয়৷র্যাব তদন্তের দায়িত্ব নেয়ার পর সন্দেহভাজন ১৬ জনের ডিএনএ নমুনা পরীক্ষার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে পাঠায়৷ এছাড়া আলামত হিসেবে জব্দ করা ছুরি ও পোশাকের নমুনাও পাঠানো হয়৷ কিন্তু তাতেও খুনি সনাক্ত করা যায়নি৷

হত্যাকাণ্ডের এক বছর আট মাস পর ঘটনায় জড়িত আটজনকে চিহ্নিত করে সাতজনকে গ্রেপ্তারের কথা জানিয়েছিলেন তখনকার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীর৷ এর মধ্যে পাঁচজনই চিকিত্‍সক নেতা ডা. নারায়ণ চন্দ্র দত্ত নিতাই হত্যা মামলার আসামি৷