দৈনিকবার্তা-ঢাকা, 0১ ডিসেম্বর: সহকর্মীসহ সবার ফুলেল শ্রদ্ধার পর মায়ের কবরে সমাহিত করা হয়েছে সাংবাদিক জগলুল আহমেদ চৌধূরীকে৷ বাসসের সাবেক প্রধান সম্পাদক, ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও আন্তর্জাতিক বিশ্লেষক জগলুল আহমেদ চৌধুরীকে সমাহিত করা হয়েছে৷ সোমবার ৪টা ৫৫ মিনিটে আজিমপুর নতুন কবরস্থানে তার মায়ের কবরের পাশে সমাহিত করা হয়৷এর আগে বাদ আসর জাতীয় প্রেসক্লাব প্রাঙ্গণে তার দ্বিতীয় জানাজা সম্পন্ন হয়৷সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবে শ্রদ্ধা জানানোর পর জগলুল চৌধূরীর জানাজায় অংশ নেন সাংবাদিক ছাড়াও বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতারা৷
এরপর বিকালে আজিমপুর নতুন কবরস্থানে মা সদরুন্নেসা চৌধুরীর কবরে শায়িত করা হয় এই সাংবাদিককে৷এসময় ছেলে নাবিদ আহমেদ চৌধুরী, মেয়ে অন্তরা চৌধুরীসহ স্বজনরা ছিলেন সেখানে৷ খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম চৌধুরীও দাফনের সময়ে কাছেই ছিলেন৷আগামী শুক্রবার বাদ আসর গুলশানের আজাদ মসজিদে কুলখানি হবে বলে নাবিদ চৌধুরী জানিয়েছেন৷ জানাজায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি কামাল উদ্দিন সবুজ ও জগলুল আহমেদ চৌধুরীর একমাত্র ছেলে নাবিল আহমেদ চৌধুরী নিহতের সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করেন৷
এসময় আওয়ামী লীগের পক্ষে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক স্থানীয় সরকার প্রতিমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক, খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, বিএনপি চেয়ারপারসনের পক্ষে দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা শমসের মবিন চৌধুরী, প্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী, ভারতের ডেপুটি হাইকমিশনার সঞ্জীব চক্রবর্তী, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি আলতাফ মাহমুদ, সাধারণ সম্পাদক কুদ্দুস আফ্রাদ, বিএফইউজের একাংশের সভাপতি মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল জলিল ভূইয়া, বাসসের প্রধান সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ, বিএফইউজের অপর অংশের সভাপতি শওকত মাহমুদ, মহাসচিব এম এ আজিজ প্রমুখ৷
পরে অনুষ্ঠিত হয় দ্বিতীয় জানাজা৷ জানাজায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি কামাল উদ্দিন সবুজ ও জগলুল আহমেদ চৌধুরীর একমাত্র ছেলে নাবিল আহমেদ চৌধুরী প্রবীণ এ সাংবাদিক সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করেন৷এছাড়া জানাজায় অংশ নেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত,শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ, সমাজকল্যাণ মন্ত্রী, মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, আব্দুল হাই শিকদার, রহুল আমিন গাজী, শেখ কাইয়ূম, ইলিয়াস হোসেন, ছড়াকার আবু সালেহ প্রমুখ৷
এর আগে বাদ জোহর বনানী জামে মসজিদে তার প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়৷ এতে তার আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব, শুভানু্যধায়ীসহ বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষ অংশ নেন৷
বাসস,প্রেসক্লাব পরিবার, ডিক্যাব, ফটো জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন, ফিন্যান্সিয়াল এঙ্প্রেসসহ বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠন এ সময় ফুল দিয়ে শ্র্রদ্ধা নিবেদন করেন৷ জানাজা শেষে তার মরদেহ আজিমপুর কবরস্থানে তার মায়ের কবরের পাশে শায়িত করার জন্য নিয়ে যাওয়া হচ্ছে৷শনিবার (২৯ নভেম্বর) রাত ৮টার দিকে রাজধানীর কারওয়ানবাজার এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় এ খ্যাতিমান সাংবাদিক মারা যান৷
গত শনিবার রাতে কারওয়ান বাজারে বাস থেকে নামার সময় চাপা পড়েন জগলুল চৌধূরী (৬৫)৷ বাসসের সাবেক প্রধান সম্পাদক ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক জগলুল একটি টেলিভিশনে আলোচনা অনুষ্ঠানে অংশ নিতে যাচ্ছিলেন৷জগলুলের মৃতু্যর ঘটনায় সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে৷
মৃতু্যর পর হিমঘরে থাকা জগলুল চৌধূরীর কফিন সোমবার দুপুরে নেওয়া হয় বনানী মসজিদে৷ সেখানে জানাজার পর কফিন নেওয়া হয় জাতীয় প্রেসক্লাবে৷ তিনি প্রেসক্লাবের স্থায়ী সদস্য ছিলেন৷মরদেহ ক্লাব প্রাঙ্গণে আনার পর সাংবাদিক ও কর্মচারীদের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে আসে৷ অকালে সহকর্মীকে বিদায় দিতে গিয়ে অনেক সাংবাদিকের চোখে ছিল জল৷ প্রেসক্লাবে জানাজায় ইমামতি করেন জগলুল চৌধূরীর দীর্ঘদিনের বন্ধু অধ্যাপক আমিরুল ইসলাম৷
জাতীয়প্রেসক্লাব, বিএফইউজে, ডিইজে,ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি, ওকাব,ফটো জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন, বাসস, সংবাদ, একাত্তর টিভি, মহিলা পরিষদ, আওয়ামী লীগ, বিএনপি, বিপ্লবী ওয়ার্কাস পার্টি, ডেমোক্রেসী ওয়াচ, কমনওয়েলথ জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন, ভোরের কাগজ, জাতীয় প্রেসক্লাব কর্মচারী ইউনিয়নও কফিনে ফুল দেয়৷ভারতীয় হাইকমিশনের পক্ষে ডেপুটি হাইকমিশনার সন্দ্বীপ চক্রবর্তী ফুলের শ্রদ্ধা জানান বাংলাদেশের এই সাংবাদিকের প্রতি৷ প্রায় চার দশকের সাংবাদিকতা জীবনে সর্বশেষ ফিনান্সিয়াল এঙ্প্রেসের উপদেষ্টা সম্পাদক ছিলেন জগলুল চৌধূরী৷তার বাড়ি হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার পিয়াম গ্রামে৷ তার বাবা নাসিরউদ্দিন চৌধুরী যুক্তফ্রন্ট সরকারের আইনমন্ত্রী ছিলেন৷