পার্বত্য চট্রগ্রাম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী দীপংকর তালুকদার

দৈনিকবার্তা-রাঙামাটি, 0১ ডিসেম্বর: ৩০ এপ্রিলের মধ্যে পার্বত্য চুক্তি পূর্ণাঙ্গ বাসত্মবায়ন না করলে ১ মে থেকে অসহযোগ আন্দোলনের ঘোষণার প্রতিক্রিয়ায় রাঙামাটি জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক পার্বত্য চট্রগ্রাম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী দীপংকর তালুকদার বলেছেন, তাদের অসহযোগ আন্দোলন আমরা গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে প্রতিহত করবো৷ তবে আন্দোলনের নামে কোনো সহিংসতা কিংবা জানমালের ক্ষতি করলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে৷ পার্বত্য জেলা পরিষদের নির্বাচনে সম্পর্কে তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনই নির্বাচনের ব্যবস্থা গ্রহণ করবে৷ পাহাড়ে অস্ত্র উদ্ধার ও অপহরণ প্রতিরোধে তিনি পাহাড়ের ভূ-তাত্তি্বক সমস্যার কথা উলেস্নখ করেন তিনি৷

পার্বত্য চুক্তির ১৭ বর্ষপূর্তি উপলক্ষে সোমবার সকালে রাঙামাটি জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে দীপংকর তালুকদার একথা বলেন৷ দলীয় কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়৷তিনি বলেন, ঢাকায় যে দুইজন পাহাড়ি পুলিশ গুলি চুরির অপরাধে গ্রেফতার হয়েছিলো একই অপরাধে গুলি ক্রয়কৃতদেরও শাসত্মি হওয়া উচিত৷ এতোদিনেও চুক্তির বেশ কিছু মৌলিক ধারা বাসত্মবায়ন হয়নি উলেস্নখ করে দীপংকর তালুকদার বলেন, ভূমি কমিশন কাজ করা, অভ্যনত্মরীণ উদ্বাস্তু পুনর্বাসন প্রক্রিয়া ও পুলিশিং এ বিষয়ে আমরা তেমন এগোতে পারিনি৷ আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যানের অসহযোগিতা ও তাঁর সবকিছুতে ‘না’ প্রবৃত্তির কারণে এসব মৌলিক বিষয়গুলো বাসত্মবায়ন সম্ভব হয়নি৷
দীপংকর তালুকদার বলেন, চুক্তির পূর্ণাঙ্গ বাসত্মবায়ন করতে না পারায় আমাদের মধ্যে যন্ত্রণা আছে, ব্যথা আছে, তবে হতাশা নেই৷ কারণ আমরা চুক্তি বাসত্মবায়নে আনত্মরিক৷ তিনি বলেন, ২০১২ সালের একটি বৈঠকে রেজুলেশনে চুক্তির ৭২টি ধারা মধ্যে ৪৮টি ধারা বাসত্মবায়ন হয়েছে বলে সন্তু লারমাসহ একমত হওয়ার পর তিনি স্বাৰর করেন৷ কিন্তু এখন বলছেন চুক্তির ২৫টি ধারা বাসত্মবায়ন হয়েছে৷ তাঁর এসব কর্মকান্ড স্ব-বিরোধিতা৷ পার্বত্য চুক্তিতে উন্নয়ন বোর্ডকে স্বীকৃতি দেওয়া হলেও এখন উন্নয়ন বোর্ড বাতিলের কথা বলে চুক্তির স্পিরিট নষ্ট করার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে তিনি অভিযোগ করেন৷ তিনি তাঁর এসব স্ব-বিরোধিতা বক্তব্য প্রত্যাহারেরও আবেদন জানান৷ পার্বত্য জেলা পরিষদ আইন সংশোধন প্রক্রিয়ায় তাদের সাথে আলাপ-আলোচনা হয়নি বলে যে বক্তব্য তা সম্পূর্ণ অসত্য বলে দাবি করেন দীপংকর তালুকদার৷ তিনি বলেন, বেশ কয়েকটি সভায় তাদের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন৷ একদিকে জেলা পরিষদ সম্প্রসারণ প্রক্রিয়া বাধাগ্রসত্ম করছেন অন্যদিকে পরিষদে দুইজনকে রাখার প্রসত্মাব করে পুনরায় স্ব-বিরোধিতা কাজ করছেন বলে তিনি অভিযোগ করেন৷

দীপংকর তালুকদার বলেন, শান্তুি চুক্তির কোথাও লেখা নেই পার্বত্যাঞ্চলে কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় করতে গেলে আঞ্চলিক পরিষদের সাথে আলাপ-আলোচনা করতে হবে৷ তবুও সরকার তাদের সাথে আলোচনায় বসেছে৷ তিনি আঞ্চলিক পরিষদের কার্যালয়কে জনসংহতি সমিতির কার্যালয় উল্লেখ করে বলেন, জেলা পরিষদে সব দলের লোকজন যায়৷ জেলা পরিষদের টেন্ডারে আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জেএসএসসহ সাধারণ ঠিকাদারও অংশগ্রহণ করে৷ কিন্তু আঞ্চলিক পরিষদে তাদের দলের লোকজন ছাড়া কারো আনাগোনা নেই বললেই চলে৷

পাহাড়ে যতদিন অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার থাকবে ততদিন এ অঞ্চলে চাঁদাবাজি, অপহরণ বন্ধ হবে না৷ কারণ সন্ত্রাসীরা অবৈধ অস্ত্র দিয়ে সবকিছু জিম্মি করে নিচ্ছে৷ তিনি সরকারের কাছে পার্বত্যাঞ্চলে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের অনুরোধ জানান৷সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন রাঙামাটি জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি মাহবুবুর রহমান, সহ-সভাপতি চিং কিউ রোয়াজা ও রম্নহুল আমিন, সাধারণ সম্পাদক হাজি মুছা মাতব্বরসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ৷