Syed-Ashraf-destiny

দৈনিকবার্তা-ঢাকা,৩০ নভেম্বর ২০১৪:  ডেসটিনি মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি সাধারণ মানুষের এক হাজার ৪৪৮ কোটি ৭৮ লাখ ৭৩ হাজার টাকা আত্মসাত্‍ করেছে৷ রোববার জাতীয় সংসদে ইসরাফিল আলমের এক প্রশ্নের জবাবে স্থানীয় সরকার ও সমবায় মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম এ তথ্য জা িয়েছেন৷এর আগে বিকেল চারটার পর স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের অধিবেশন শুরু হয়৷ প্রশ্নোত্তর টেবিলে উত্থাপিত হয়৷

ইসরাফিল আলমের এ প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী আরও জানান, ডেসটিনিসহ ১৪টি মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি বা সমবায় সমিতি সাধারণ মানুষের মোট এক হাজার ৪৭১ কোটি ছয় লাখ ৭৯ হাজার ২৫৫ টাকা আত্মসাত্‍ করেছে৷ এর মধ্যে পপুলার মাল্টিপারপাস সাত কোটি ৭৬ লাখ, অগ্রণী বহুমুখী সমবায় সমিতি পাঁচ কোটি ৭৩ লাখ ও ম্যাঙ্মি মাল্টিপারপাস এক কোটি এক লাখ টাকা৷ মানুষের টাকা আত্মসাত্‍ করা বাকি প্রতিষ্ঠানগুলো হলো: গোসাইলডাঙ্গা ফুটন্ত কলি বহুমুখী সমবায় সমিতি, জাগ্রত মাল্টিপারপাস, চট্টগ্রাম সংবাদপত্র হকার্স সমিতি, দোভাসীবাজার ব্যবসায়ী সমিতি, চামুদরিয়া মাল্টিপারপাস, রূপালী বহুমুখী সমবায় সমিতি, শাহরাস্তি যুব উন্নয়ন বহুমুখী সমবায় সমিতি, ফরিদগঞ্জ প্রদীপ বহুমুখী সমবায় সমিতি, ফারইস্ট ইসলামি কো-অপারেটিভ সোসাইটি ও আল ইনসাফ মাল্টিপারপাস৷ সৈয়দ আশরাফ বলেন, ডেসটিনিসহ কিছু মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি ও সমবায় সমিতি ক্ষুদ্রঋণ কর্মসূচির মাধ্যমে সদস্য ও সাধারণ মানুষের টাকা আত্মসাত্‍ করায় সমবায় অঙ্গনের বদনাম হয্ে#২৪৯২;ছে৷ এসব অনিয়মের সঙ্গে জড়িত সরকারি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে৷

আমিনা আহমেদের প্রশ্নের জবাবে যুব প্রতিমন্ত্রী বীরেণ শিকদার জানান, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান বু্যরোর জরিপ অনুসারে বর্তমানে দেশে বেকারের সংখ্যা তিন কোটি ৩৯ লাখ ৮৭ হাজার৷ এর মধ্যে শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা ১৯ লাখ ৫১ হাজার৷ প্রতিবছর প্রায় ২২ লাখ যুবক শ্রমবাজারে প্রবেশ করে৷ এদিকে, শনিবার কুমিল্লার জনসভায় দেওয়া খালেদা জিয়ার বক্তব্যের তীব্র সমালোচনা করেছেন সংসদ সদস্যরা৷ বিএনপি চেয়ারপারসনের বক্তব্য নিয়ে একাধিক সদস্য পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন৷ তারা বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় তো খালেদা জিয়া পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর কাছে ছিলেন, তিনি (খালেদা জিয়া) মুক্তিযুদ্ধের কী বুঝবেন?খালেদা জিয়া মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানেন না বলেও সংসদ সদস্যরা মন্তব্য করেন৷ রোববার বিকেলে দশম জাতীয় সংসদের চতুর্থ অধিবেশনের সমাপনী কার্যদিবসের শুরুতেই ক্ষোভ প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন সাবেক মন্ত্রী আবুল কালাম আজাদ ও ড. হাছান মাহমুদ৷ আলোচনার সূত্রপাত করে আবুল কালাম আজাদ বলেন, দেশে যখন মুক্তিযুদ্ধ হয়েছে তখন তিনি (খালেদা জিয়া) পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর কাছে ছিলেন৷ সারাবিশ্ব জানে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধ হয়েছে৷ ১৯৫২’র ভাষা আন্দোলন, ৭৯’র গণঅভ্যুত্থান, ৭০’র নির্বাচনে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ বিজয়ী হয়েছে৷ এরপরেও যখন ক্ষমতা হস্তান্তর করেনি তখন বঙ্গবন্ধু কিভাবে মুক্তিযুদ্ধ হবে, কিভাবে এ যুদ্ধ পরিচালিত হবে এসব বিষয়ে ৭ মার্চ রেসকোর্সের ময়দানে দিক নির্দেশনা দিয়েছিলেন৷ আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধ হয়েছে৷ তিনি (খালেদা জিয়া) বলে বেড়াচ্ছেন আওয়ামী লীগ নাকি গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না৷ আওয়ামী লীগ যদি গণতন্ত্রে বিশ্বাস না করতো তাহলে ৫ জানুয়ারির নির্বাচন হতো না৷

তিনি আরও বলেন, একজন সাবেক প্রধানমন্ত্রী একটি দলের চেয়ারপারসনের স্মরণশক্তি কি এতই কম৷ তার (খালেদা জিয়ার) স্মরণশক্তি কমে গেছে, এ কারণে ইতিহাস মনে রাখতে পারছেন না৷এ সময় খালেদা জিয়াকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, যদি আপনারা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করেন, তাহলে আগামীতে যে নির্বাচন হবে, সেজন্য জনগণের কাছে যান, তারা যদি ভোট দেয় তাহলে আপনি বিজয়ী হবেন৷ এরপর খালেদার বক্তব্যের তীব্র সমালোচনা করে সাবেক বন ও পরিবেশ মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, খালেদা জিয়ার বক্তব্য শুনে মনে হলো যুবদল ও ছাত্রদলের কোন ক্যাডারের বক্তব্য৷ তার (খালেদা) বক্তব্যে কোনো সঠিক তথ্য ছিলো না৷ তিনি (খালেদা) বলেছেন আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধের দল নয়৷ এ সময় মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস তুলে ধরে হাছান মাহমুদ বলেন, আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধ হয়েছে৷ মুক্তিযুদ্ধের সময় গঠিত সরকারের একজন বেতনভুক্ত কর্মচারী ছিলেন জিয়াউর রহমান৷ তিনি (খালেদা) এখন বলছেন আওয়মী লীগ মুক্তিযুদ্ধের দল নয়৷ কয়দিন পরে তিনি (খালেদা) হয়তো বলবেন, জামায়াতে ইসলাম মুক্তিযুদ্ধের দল৷ মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি ৯ মাস পাকিস্তানি সেনাবাহিনীদের আতিথেয়তায় ছিলেন৷ তাই তিনি রাজাকার, আল-বদরদের মুক্তিযোদ্ধা মনে করতেই পারেন৷ তিনি আরও বলেন, খালেদা জিয়া বলেছেন, গত ৫ বছরে দেশে কোনো উন্নয়ন হয়নি৷ দেশে যদি উন্নয়ন না হয়ে থাকে তাহলে গত ৬ বছরে যে ফ্লাইওভার ও ব্রিজ হয়েছে সেগুলো দিয়ে আপনি যাবেন না৷ আপনি (খালেদা জিয়া) জনসভাগুলো করতে যান এই ব্রিজের উপর দিয়ে৷ ব্রিজের উপর দিয়ে যাবেন না৷ নিচ দিয়ে নৌকা দিয়ে যাবেন৷