দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ২৬নভেম্বর: সম্প্রতি শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার পূর্ব নাওডোবা ইউনিয়নের ওকিল উদ্দিন মুন্সিকান্দি গ্রামে গৃহবধূ মোছাম্মত রেখাকে গর্ভপাত করে ভ্রুণের শিশু হত্যা ও স্বামীকে তালাক দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে গ্রাম্য সালিশ৷ বিপ্লবী নারী সংহতি এ ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়েছে৷
বিপ্লবী নারী সংহতির সমন্বয়ক শ্যামলী শীল ও সহ সমন্বয়ক তাসলিমা আখতার আজ ২৬ নভেম্বর ২০১৪, বুধবার এক যৌথ প্রেস বিবৃতিতে জানান, শরীয়তপুরে মোছাম্মত রেখাকে গর্ভপাতে শিশু হত্যা এবং স্বামী তালাকে বাধ্য করানোর মতো অমানবিক ও নির্মম নিপীড়নের সিদ্ধান্ত দিয়েছে গ্রাম্য সালিশ৷ বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী সন্তান গর্ভে থাকা অবস্থায় বিবাহ বিচ্ছেদ অবৈধ৷ ওই গ্রামের স্থানীয় প্রভাবশালীরা সালিশে রাখীকে জোর করে গর্ভের শিশু হত্যার করতে এবং স্বামী নাসিরকে তালাক দিতে নির্দেশ দিয়ে একই সাথে চরম অমানবিক এবং আইনত অবৈধ কাজ করেছে৷ এছাড়া বাংলাদেশে ফতোয়া বা সালিশের মাধ্যমে এ ধরনের অমানবিক সিদ্ধান্ত কারো উপর চাপিয়ে দেওয়াও অবৈধ করেছে হাইকোর্ট৷
বিবৃতিতে নেতারা বলেন, পুরুষতান্ত্রিক রাষ্ট্র ও সরকার ব্যবস্থা নারীর মানুষের মতো বেঁচে থাকার, সন্তান ধারণ ও চলাফেরার নিরাপত্তা দিতে পারছে না৷ পুরুষতান্ত্রিক দৃষ্টিভঙ্গির কারণে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ইতোমধ্যে নাসিরের পরিবার ও সালিশকারীদের ভয়ে রাখী ও তার বাবা এলাকা থেকে পালিয়ে আপাতত বাঁচলেও তারা নিরাপদ নন৷ তাদের নিরাপত্তা দেওয়া সরকারের দায়িত্ব৷
বিবৃতিতে বিপ্লবী নারী সংহতির নেতারা অবিলম্বে রাখী ও তার ভ্রুণের সন্তানের নিরাপত্তা দিয়ে, তাকে জোর করে তালাক দিতে ভয় দেখানো ও চাপ দেওয়া নাসিরের পরিবারসহ স্থানীয় প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে বিদ্যমান আইনে উপযুক্ত শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে সরকারের প্রতি দাবি জানানো হয়৷ একইসঙ্গে সালিশ বা ফতোয়ার নামে নারী নিপীড়ন বন্ধ করার দাবি জানানো হয়৷